কর্তৃ কারক নিয়ে জানার ক্ষেত্রে একটা বাক্যে কর্তা বলতে বোঝায় যে ব্যক্তি কোনো কাজ করে। অর্থাৎ কর্তৃ কারক বলতে বোঝায়-
যদি কোনো বাক্যের ক্রিয়াপদকে কে বা কারা দ্বারা প্রশ্ন করা যায় তবে যে উত্তর পাওয়া যাবে সেটি কর্তৃ কারক।
যেমন-
সাইফা বই পড়ে।
এখানে বাক্যের ক্রিয়া “বই পড়া”। এটিকে যদি কে দ্বারা প্রশ্ন করা হয় তবে প্রশ্নটি হবে- কে বই পড়ে? আর ওর উত্তর হচ্ছে- সাইফা। তাই সাইফা এখানে কর্তৃ কারক।
কর্তৃ কারক এর উদাহরণ
এবার আমরা অনেকগুলো উদাহরণ দেখবো এবং বোঝার চেষ্টা করবো এদের মধ্যে কর্তৃ কারক কিভাবে কাজ করে!
পাগলে কি না বলে, ছাগলে কি না খায়!
কে বলে? – পাগল, কে খায়? – ছাগল (কর্তায় ৭মী)
দশে মিলে করি কাজ।
কে কাজ করে? – দশে (সবাই মিলে) (কর্তায় ৭মী)
পাছে লোকে কিছু বলে।
কে বলে? – লোকে। (কর্তায় ৭মী)
মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক।
কে ভাবে? – মানুষ (কর্তায় শূন্য)
লোকে বলে।
কে বলে? – লোকে (কর্তায় সপ্তমী)
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে।
কে খেয়েছে? – বুলবুলি (কর্তায় সপ্তমী)
অন্ধজনে বদ্ধ ঘরে, দিবা রাত্রি কষ্ট করে।
কে বদ্ধ ঘরে কষ্ট করে? অন্ধজনে (কর্তায় সপ্তমী)
রাজায় রাজায় লড়াই, উলুখাগড়ার প্রাণোন্ত।
লড়াইটা কারা করে? – রাজায় রাজায় (কর্তায় সপ্তমী)
বাপে না জিজ্ঞাসে, মায়ে না সম্ভাষে।
কে জিজ্ঞাসা করে? – বাপে (কর্তায় সপ্তমী)
পণ্ডিতে পণ্ডিতে তর্ক করে।
তর্কটা কারা করে? পন্ডিতে পন্ডিতে (কর্তায় সপ্তমী)
সর্বাঙ্গ দংশিল মোর নাগ নাগবালা।
কে দংশনটা করল? – নাগবালা (সাপ) (কর্তায় শূন্য)
রাখাল গরুর পাল লয়ে যায় মাঠে।
কে মাঠে গরুর পাল লয়ে যায়? – রাখাল (কর্তায় শূন্য)
শিশুগণ দেয় মন নিজ নিজ পাঠে।
কে পাঠে মন দেয়? – শিশুগণ (কর্তায় শূন্য)
রতনে রতন চিনে।
কে রতন চিনে? রতনে (কর্তায় সপ্তমী)
বোকার ফসল পোকায় খায়।
কে বোকার ফসল খায়? – পোকায় (কর্তায় সপ্তমী)
ঘোড়ায় গাড়ি টানে।
কে গাড়ি টানে? – ঘোড়ায় (কর্তায় সপ্তমী)
বাঘে মহিষে এক ঘাটে জল খায়।
কে এক ঘাটে জল খায়? – বাঘে মহিষে (কর্তায় সপ্তমী)
তারা পাঁচজনে যাবে।
কারা যাবে? – পাঁচজনে (কর্তায় সপ্তমী)
আকাশের ঐ মিটিমিটি তারার সাথে কইবো কথা, নাইবা তুমি এলে।
কে এলে? – তুমি (কর্তায় শূন্য)
আমায় কেন দাওনি তুমি সকল শূন্য করে।
কে শুন্য করে দিবে? – তুমি (কর্তায় শুন্য)
এক যে ছিল চাঁদের কোণায় চরকা কাটা বুড়ি।
কে ছিল চাঁদের কোণায়? – বুড়ি (কর্তায় শুন্য)
আমাকে যেতে হবে।
যাওয়ার কাজটা কাকে করতে হবে? – আমাকে (কর্তায় দ্বিতীয়া)
বসিরকে যেতে হবে।
যাওয়ার কাজটা কে করবে? – বশির (কর্তায় দ্বিতীয়া)
সকলকে মরতে হবে।
কাদেরকে মরতে হবে? – সকলকে (কর্তায় দ্বিতীয়া)
আমার যাওয়া হয়নি।
কার যাওয়া হয়নি? – আমার (কর্তায় ষষ্ঠী)
তোমার যাওয়া উচিত।
কার যাওয়া উচিত? – আমার (কর্তায় ৬ষ্ঠী)
ফেরদৌসীর শাহনামা রচনা করেছেন।
কে শাহনামা রচনা করেছেন? – ফেরদৌসী (কর্তায় শুন্য)
পুলিশ দ্বারা চোর ধৃত হয়েছে।
চোর কার দ্বারা ধৃত হয়েছে? – পুলিশ (কর্তায় তৃতীয়)
পরীক্ষা এলেই তার চোখে জল ঝরে।
কি এলে জল ঝরে? – পরিক্ষা (কর্তায় শুন্য)
জল পড়ে পাতা নড়ে, মেঘ থেকে বৃষ্টি পড়ে।
এখানে জল, পাতা, বৃষ্টি এমন ভাবে লেখা হয়েছে যেন তারা নিজেরাই কাজগুলো করেছে, তাই এরা কর্তায় শুন্য।
জেলে ভাই ধরে মাছ মেঘের ছায়ায়।
কে মাছ ধরে? – জেলেভাই (কর্তায় শুন্য)
গুনহীন চিরদিন পরাধীন রয়।
কে পরাধীন রয়? – গুনহীন (কর্তায় শুন্য)
ঘরেতে ভ্রমর এলো গুনগুনিয়ে।
কে গুনগুনিয়ে এল? – ভ্রমর (কর্তায় শুন্য)
চন্ডীদাসের কয় গুনে পরিচয়।
কে কয় গুনে পরিচয়? – চন্ডীদাসে (কর্তায় শুন্য)
চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী।
কে ধর্মের কাহিনী শুনে না? – চোরে (কর্তায় সপ্তমী)
টাকায় টাকা আনে।
কে টাকা আনে? – টাকায় (কর্তায় সপ্তমী)
পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল।
কে রব করে বা শব্দ করে? – পাখি (কর্তায় শূন্য)
বসন্তে কোকিল ডাকে।
কে বসন্তে ডাকে? – কোকিল (কর্তায় শূন্য)
স্রোতে নৌকাটি উল্টিয়ে গেল।
এখানে স্রোতের কাজটা হচ্ছে নৌকা উল্টে ফেলা, তাই স্রোত এখানে কর্তায় সপ্তমী।
চুপ করো! পিঁপড়েরা কি বলছে শুনি।
কে বলছে? – পিঁপড়েরা (কর্তায় শুন্য)
ধোপায় কাপড় কাচে।
কে কাপড় কাছে? – ধোপা (কর্তায় সপ্তমী)
সাইফা নামে একজন মেয়ে ছিল।
কে ছিল? – সাইফা (কর্তায় শূন্য)
লোকটা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল।
কে কান্নায় ভেঙে পড়ল? – লোকটা (কর্তায় শূন্য)
মানুষে একালে বই পড়ে না।
কে বই পড়ে না? – মানুষ (কর্তায় সপ্তমী)
বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।
কে বনে সুন্দর? – বন্যেরা, কে মাতৃক্রোড়ে সুন্দর? – শিশুরা (কর্তায় শুন্য)
বাদল সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল।
কে ঘনিয়ে এলো? – বাদল সন্ধ্যা (কর্তায় শূন্য)
সাগরের নটী চলে অভিসারে।
কে চলে অভিসারে? – নটী (কর্তায় শূন্য)
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-