কর্মধারয় সমাস

যে সমাসে বিশেষণ বা বিশেষণের মত কাজ করা পদের সাথে বিশেষ্য বা বিশেষ্যের মত কাজ করা পদের মিলন হয় এবং পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায়, তাকে কর্মধারয় সমাস বলে। যেমন-

নীলপদ্ম = নীল যে পদ্ম (এখানে নীল – বিশেষণ, পদ্ম – বিশেষ্য, কিন্তু নীলপদ্ম বলতে এখানে পদ্মফুলকে বোঝানো হয়েছে)

কাঁচামিঠা = যা কাঁচা তাই মিঠা

শান্তশিষ্ট = যে শান্ত সেই শিষ্ট

কর্মধারয় সমাস এর বৈশিষ্ট্য

  • ব্যাসবাক্যে যে / যা / যিনি এগুলো বসে, কিংবা ন্যায় / মত / রূপ এগুলো বসে।
  • সমস্তপদ দ্বারা কোনো কিছুর গুন বোঝায়।

কর্মধারয় সমাসের গঠন পদ্ধতি

ব্যাসবাক্যে দুটো বিশেষণ পদ থাকে এবং এরা মিলে সমস্থপদে বিশেষ্যপদ হিসেবে কাজ করে। যেমন-

যে চালাক সেই চতুর = চালাক-চতুর

এখানে চালাক এবং চতুর দুটোই হচ্ছে মানুষের একটা গুন বা বিশেষণ (Adjective)। কিন্তু যখন এদেরকে একসাথে বলা হয় “চালাক-চতুর”, তখন এটি দ্বারা একটা ব্যাক্তিকে বোঝায়, আর ব্যাক্তি মানে বিশেষ্য বা Noun।

ব্যাসবাক্যে দুটো বিশেষ্য পদ থাকে এবং এরা মিলে সমস্থপদে আরেকটা বিশেষ্যপদ হিসেবে কাজ করে। যেমন-

যিনি জজ তিনি সাহেব = জজ সাহেব

এখানে জজ এবং সাহেব দুটোই হচ্ছে মানুষের একটা পেশার নাম বা বিশেষ্য (Noun)। কিন্তু যখন এদেরকে একসাথে বলা হয় “জজ-সাহেব”, তখন এটি দ্বারাও একটা ব্যাক্তিকে বোঝায়, আর ব্যাক্তি মানে বিশেষ্য বা Noun।

একটা কাজের পর আরেকটা কাজের ধারাবাহিকতা বোঝাতে কর্মধারয় সমাস হয়। যেমন-

আগে ধোয়া পরে মোছা = ধোয়ামোছা

ব্যাসবাক্যের পূর্বপদে স্ত্রীবাচক বিশেষণ থাকলে কর্মধারয় সমাসের সমস্থপদে সেটি পুরুষবাচক বিশেষণ হয়। যেমন-

সুন্দরী যে লতা = সুন্দরলতা

মহতী যে কীর্তি = মহাকীর্তি

ব্যাসবাক্যে পূর্বপদে মহান বা মহৎ শব্দ বসলে সমস্তপদে তার জায়গায় মহা বসবে। যেমন-

মহৎ যে জ্ঞান = মহাজ্ঞান

মহান যে নবী = মহানবী

ব্যাসবাক্যে পূর্বপদে “কু” থাকলে, পরপদে স্বরবর্ণ থাকলে সমস্থপদে “কদ” বসে। যেমন-

কু যে অর্থ = কদর্থ

কু যে আচার = কদাচার

ব্যাসবাক্যে পূর্বপদে “কু” থাকলে, পরপদে পুরুষ শব্দটা থাকলে সমস্থপদে “কা” বসে। যেমন-

কু যে পুরুষ = কাপুরুষ

ব্যাসবাক্যে “রাজা” থাকলে সমস্তপদে “রাজ” বসে। যেমন-

মহান যে রাজা = মহারাজ

কর্মধারয় সমাস

কর্মধারয় সমাস এর প্রকারভেদ

কর্মধারয় সমাস পাঁচ প্রকার-

  • সাধারণ কর্মধারয়
  • মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
  • উপমান কর্মধারয়
  • রূপক কর্মধারয় 
  • উপমিত কর্মধারয়

মনে রাখতে হবে, কর্মধারয় সমাসের প্রতিটা উদাহরণ নিচের ৪ টা গঠনের কোনো না কোনো উপায়ে হয়ে থাকে, যেমন-

বিশেষণ (পূর্বপদ) + বিশেষ্য (পরপদ)

খাসমহল, কাঁচকলা

বিশেষণ + বিশেষণ

কাঁচাপাকা, চালাকচতুর

বিশেষ্য + বিশেষণ

ঘনশ্যাম, গোলাপলাল

বিশেষ্য + বিশেষ্য

খাঁসাহেব, ঠাকুরমশাই

পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-

www.youtube.com/crushschool

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool