কর্ম কারক

যাকে আশ্রয় করে কর্তা বা Subject কাজ করে তাকে কর্ম কারক বলে। বাক্যের ক্রিয়াকে কি/কাকে দ্বারা প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তাই কর্ম কারক।

একটা বাক্যে দুই ধরনের কর্ম থাকে। এরা হচ্ছে-

a) মুখ্য কর্ম বা বস্তুবাচক কর্ম : ব্যাক্তি বাদে অন্য যা কিছু আছে তাই মুখ্য কর্ম।

b) গৌণ কর্ম বা ব্যাক্তিবাচক কর্ম : যেসব কর্মের মাধ্যমে ব্যাক্তিকে নির্দেশ করা হয় তাদেরকে গৌণ কর্ম বলে।

একটা উদাহরণ দেখি-

সাইফা আমাকে ফুল দিয়েছে।

এখানে কে দিয়েছে? – সাইফা (ব্যাক্তিবাচক বা গৌণ কর্ম)

কি দিয়েছে? – ফুল (বস্তুবাচক বা মুখ্য কর্ম)

 

কর্ম কারকের প্রকারভেদ

কর্মকারক ৪ প্রকার-

a) মুখ্য কর্ম / বস্তুবাচক কর্ম / সকর্মক ক্রিয়ার কর্ম : এ ধরনের কর্মকারকে বস্তুবাচক জিনিসকে বোঝায়। তবে এদের সাথে কোনো বিভক্তি যুক্ত থাকে না। বাক্যে থাকা ক্রিয়াকে কি দ্বারা প্রশ্ন করলে এটিকে পাওয়া যায়। যেমন-

রিয়া কলম কিনছে।

এখানে রিয়া কি কিনছে? – কলম

তাই কলম হচ্ছে মুখ্য কর্ম কারক। একইভাবে,

পাপিয়া ভাত খায়

রাফি আমাকে খাতা কিনে দিয়েছে

b) গৌণ কর্ম / ব্যাক্তিবাচক কর্ম / প্রযোজক ক্রিয়ার কর্ম : এ ধরনের কর্মকারকে ব্যাক্তিবাচক জিনিসকে বোঝায়। তবে এদের সাথে বিভক্তি যুক্ত থাকে। বাক্যে থাকা ক্রিয়াকে কাকে দ্বারা প্রশ্ন করলে এটিকে পাওয়া যায়। যেমন-

সাইফাকে স্কুলে পাঠাও।

এখানে কাকে স্কুলে পাঠাও? – সাইফাকে

তাই সাইফা হচ্ছে গৌণ কর্ম কারক। একইভাবে,

তিনি আমাকে বই কিনে দিলেন

তানিশা রুহানাকে কলেজে নিয়ে গেলো

c) উদ্দেশ্য কর্ম ও বিধেয় কর্ম কারক : কোনো বাক্যে থাকা যে কর্মের সাথে বিভক্তি যুক্ত থাকে তাকে উদ্দেশ্য কর্ম বলে। যেমন-

তিনি আমাকে সত্যবাদী বলেছেন।

কাকে বলেছেন? – আমাকে

এখানে, আমাকে শব্দে কে বিভক্তি যুক্ত, তাই এটি উদ্দেশ্য কর্ম কারক। একইভাবে,

দুধকে আমরা দুগ্ধ বলি

হলুদকে আমরা হরিদ্র বলি

আবার, যে কর্মের সাথে বিভক্তি যুক্ত থাকে না তাকে বিধেয় কর্ম বলে। যেমন-

তিনি দেশকে জননী ভাবতেন।

কি ভাবতেন? – জননী

এখানে জননী শব্দটির সাথে কোনো বিভক্তি যুক্ত নেই। তাই এটি বিধেয় কর্ম। একইভাবে,

হলুকে বলি হরিদ্র

দুধকে আমরা দুগ্ধ বলি

তাহলে বলা যায়, একই বাক্যে উদ্দেশ্য ও বিধেয় দুটোই থাকতে পারে। আরো একটা উদাহরণ দেখি-

আমি সাইফাকে বই দিয়েছি।

সাইফাকে – বিভক্তি যুক্ত = উদ্দেশ্য কর্ম

বই – বিভক্তি হীন = বিধেয় কর্ম

d) সমধাতুজ কর্ম : ক্রিয়া এবং কর্ম যদি একই ধাতু থেকে তৈরি হয় তবে তাকে সমধাতুজ কর্ম বলে। যেমন-

অমন হাসি (কর্ম) হেসো (ক্রিয়া) না

খুব এক ঘুম (কর্ম) ঘুমিয়েছি (ক্রিয়া)

বাজনা (কর্ম) বাজে (ক্রিয়া)

আর নাচ (কর্ম) নাইবা নাচলে (ক্রিয়া)

সে কি কান্নাই (কর্ম) না কাঁদল (ক্রিয়া)

 

কর্ম কারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহার

প্রথমা বা শূণ্য বা অ বিভক্তি

ডাক্তার ডাক।

ঘোড়া গাড়ি টানে।

সর্বাঙ্গে ব্যথা, ঔষধ দিব কোথা।

আমাকে একখানা বই দাও। (দ্বিকর্মক ক্রিয়ার মুখ্য কর্ম)

রবীন্দ্রনাথ পড়লাম, নজরুল পড়লাম, এর সুরাহা পেলাম না।

অর্থ অনর্থ ঘটায়।

আমার ভাত খাওয়া হলো না।

সূর্য উঠলে অন্ধকার দূর হয়।

দ্বিতীয়া বা কে বিভক্তি

তাকে আমি চিনি।

ধোপাকে কাপড় দাও।

আমাকে একখানা বই দাও। (দ্বিকর্মক ক্রিয়ার গৌণকর্ম)

ধনী দরিদ্রকে ঘৃণা করে।

শিক্ষককে শ্রদ্ধা করিও।

আমারে তুমি করিবে ত্রাণ, এ নহে মোর প্রার্থনা।’

ষষ্ঠী বা র বিভক্তি

তোমার দেখা পেলাম না।

দেশের সেবা কর।

সপ্তমী বা এ বিভক্তি

কাজে মন দাও।

গুরুজনে করো ভক্তি / নতি।

সর্বশিষ্যে জ্ঞান দেন গুরু মহাশয়।

জিজ্ঞাসিবে জনে জনে

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool

অথিতি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-

write@thecrushschool.com

Emtiaz Khan

A person who believes in simplicity. He encourages the people for smart education. He loves to write, design, teach & research about unknown information.