গলনের সাথে গলনাংকের একটা সম্পর্ক আছে, আবার স্ফুটনের সাথে স্ফুটনাংকের একটা সম্পর্ক আছে।
তাপ প্রয়োগ করলে কঠিন বস্তু যখন তরলে পরিণত হয় তখন এই প্রক্রিয়াকে গলন বলে। আবার, যে তাপমাত্রায় 1 atm চাপে (বা বায়ুমন্ডলীয় চাপে) কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত হয় তাকে গলনাংক বলে। অর্থাৎ-
গলন – একটা প্রক্রিয়া বা System
গলনাংক – একটা তাপমাত্রা
তাপ প্রয়োগ করলে তরল বস্তু যখন গ্যাসীয় বস্তুতে পরিণত হয় তখন এই প্রক্রিয়াকে স্ফুটন বলে। আবার, যে তাপমাত্রায় 1 atm চাপে (বা বায়ুমন্ডলীয় চাপে) তরল পদার্থ গ্যাসীয় পদার্থে পরিণত হয় তাকে স্ফুটনাংক বলে। অর্থাৎ-
স্ফুটন – একটা প্রক্রিয়া বা System
স্ফুটনাংক – একটা তাপমাত্রা
বিশুদ্ধ পানির গলনাংক ০° সেন্টিগ্রেড, এর মানে কঠিন বরফকে ০°সে তাপমাত্রায় তরল পানিতে রূপান্তর করা যায়। আবার বিশুদ্ধ পানির স্ফুটনাংক ১০০°সে, এর মানে তরল পানিকে ১০০°সে তাপমাত্রায় বাষ্পীয় পানিতে রূপান্তর করা যায়।
যখন কোনো বস্তুর বাষ্পীয় অবস্থা থেকে তাপ সরিয়ে নেওয়া হয়, তখন বস্তুটি আবার আগের মত তরল অবস্থায় ফিরে আসে। এই অবস্থাকে ঘনীভবন বলে। অর্থাৎ ঘনীভবন হচ্ছে স্ফুটনের বিপরীত অবস্থা।
স্ফুটন – বস্তুর মাঝে তাপ দেওয়া হয়
ঘনীভবন – বস্তু থেকে তাপ সরিয়ে নেওয়া হয়
এবার একটা ইন্টারেস্টিং জিনিস নিয়ে জানবো। এজন্য আমরা উদাহরণ হিসেবে পানিকে নিবো। পানি কঠিন অবস্থায় বরফ হিসেবে থাকে। পানিকে ০°সে তাপমাত্রায় বরফ বানানো যায়, আবার বরফকে ০°সে তাপমাত্রায় পানিতে পরিনত করা যায়। তারমানে, বরফ অবস্থা থেকে পানি অবস্থায় ফেরত যেতে কিংবা পানি অবস্থা থেকে বরফ অবস্থায় ফেরত যেতে তাপমাত্রার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না, তাপমাত্রা ০°সে স্থির থাকছে।
আবার, পানি ১০০°সে তাপমাত্রায় বাষ্পে পরিণত হয়, সেইসাথে বাষ্প ১০০°সে তাপমাত্রায় পানিতে পরিনত হতে পারে। কাজেই তরল অবস্থা থেকে বাষ্পীয় অবস্থায় ফেরত যেতে কিংবা বাষ্পীয় অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় ফেরত যেতে পানির তাপমাত্রার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না, তাপমাত্রা ১০০°সে স্থির থাকছে।
এখান থেকে কি বুঝতে পারি আমরা?
যতক্ষণ পর্যন্ত কঠিন বরফ সম্পূর্ণ ভাবে তরলে পরিণত না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাপমাত্রা ০°সে স্থির থাকে। আবার যতক্ষণ পর্যন্ত তরল পানি সম্পূর্ণ ভাবে বাষ্পে পরিণত না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তাপমাত্রা ১০০°সে স্থির থাকে। একইভাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত জলীয় বাষ্প সম্পূর্ণ ভাবে তরলে পরিণত না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাপমাত্রা ১০০°সে স্থির থাকে। আবার যতক্ষণ পর্যন্ত তরল পানি সম্পূর্ণ ভাবে বরফে পরিণত না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তাপমাত্রা ০°সে স্থির থাকে।
তাই মনে রাখতে হবে, গলন এবং স্ফুটন অবস্থায় পদার্থের অবস্থা পরিবর্তন হয় কিন্তু তাপমাত্রা পরিবর্তন হয় না।
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
www.facebook.com/groups/mycrushschool
অথিতি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-
write@thecrushschool.com
Related posts:
- অ্যাভোগাড্রোর সূত্র
- একই পদার্থের তিনটি ভৌত অবস্থা
- কণার গতিতত্ত্ব
- গে-লুস্যাকের গ্যাসের চাপের সূত্র
- গ্যাসের ক্রান্তি অবস্থা
- গ্যাসের তরলীকরণ
- চার্লসের সূত্র
- তরল স্ফটিক ও প্লাজমা
- তাপ প্রদান ও শীতলীকরণের লেখচিত্র
- তাপমাত্রা কাকে বলে
- পদার্থ ও পদার্থের অবস্থা
- পদার্থ ও পদার্থের অবস্থা
- পদার্থের বিভিন্ন অবস্থার কারণ (Causes of Different States of Matter)
- পরমশূন্য তাপমাত্রা কাকে বলে
- বাস্তব গ্যাসের জন্য অ্যামাগা’র পরীক্ষা