দ্বিগু সমাস এর ক্ষেত্রে শব্দের শুরুতে দ্বি কথাটা আছে, দ্বি এর মানে হচ্ছে দুই। এরমানে এই সমাসে সংখ্যা নিয়ে কথাবার্তা আছে, আর এই সংখ্যাটা বসে ব্যাসবাক্যের পূর্বপদে। পূর্বপদ যদি কোনো সংখ্যা হয় এবং পরপদে ততবার মিলিত হয়েছে বোঝায় তবে সেটা হচ্ছে দ্বিগু সমাস। অর্থাৎ, দ্বিগু সমাসের ব্যাসবাক্যে পরপদ সবসময় বিশেষ্য বা Noun হয়।
পূর্বপদ (সংখ্যা) + পরপদ (বিশেষ্য) = দ্বিগু সমাস
মনে রাখতে হবে, দ্বিগু শব্দের অর্থ সমাহার বা সমষ্টি। সমাহার বা মিলন অর্থ প্রকাশ করার জন্য সংখ্যাবাচক শব্দের সাথে বিশেষ্য পদের যে সমাস হয় এবং যে সমাসে পরপদের অর্থই প্রাধান্য পায় তাকে দ্বিগু সমাস বলে।
দ্বিগু সমাস এর উদাহরণ
দ্বিগু সমাসের সমস্তপদটি দ্বারা সমষ্টি বা সমাহার বোঝায় এবং সমস্ত পদটি একটি বিশেষ্য পদ হিসেবে কাজ করে। যেমন –
ত্রি / তিন (সংখ্যা) কালের (কাল এখানে বিশেষ্য) সমাহার = ত্রিকাল (বিশেষ্য)
চৌ / চার (সংখ্যা) রাস্তার (রাস্তা এখানে বিশেষ্য) সমাহার = চৌরাস্তা (বিশেষ্য)
দ্বিগু সমাসের ব্যাসবাক্যে যা থাকলে সমস্তপদে যা হবে
আনা থাকলে আনি হবে
পদ থাকলে পদী হবে
সের থাকলে সুরি হবে
অব্দ থাকলে অব্দী হবে
বর্ষ থাকলে বার্ষিকী হবে
বট থাকলে বটি হবে
নদী থাকলে নদ হবে
এবার কিছু উদাহরন দেখি দ্বিগু সমাসের-
দু (দুই) আনার সমাহার = দু’আনা
তে (তিন) মাথার সমাহার = তেমাথা
ত্রি (তিন) ফলের সমাহার = ত্রিফলা
ত্রি (তিন) পদের সমাহার = ত্রিপদী
ত্রি (তিন) রত্নের সমাহার = ত্রিরত্ন
ত্রি (তিন) লোকের সমাহার = ত্রিলোক
ত্রি (তিন) ভুবনের সমাহার = ত্রিভুবন
চৌ (চার) চিরের সমাহার = চৌচির
চতুঃ পদের সমাহার = চতুষ্পদী
চৌ রাস্তার সমাহার = চৌরাস্তা
চৌ কাঠের সমাহার = চৌকাঠ
পাঁচ সেরের সমাহার = পশুরী
সপ্ত (সাত) অহের সমাহার = সপ্তাহ
শত অব্দের সমাহার = শতাব্দী
চতুর্দশ পদের সমাহার = চতুর্দশপদী
দশ চক্রের সমাহার = দশচক্র
শত বর্ষের সমাহার = শতবার্ষিকী
নব (নয়) রত্নের সমাহার = নবরত্ন
নিপাতনে সিদ্ধ দ্বিগু সমাস আছে দুটো, এরা হচ্ছে-
পঞ্চ বটের সমাহার = পঞ্চবটী
পঞ্চ নদীর সমাহার = পঞ্চনদ