পর্যায় সারণির বৈশিষ্ট্য নিয়ে জানার আগে একটা পর্যায় সারণির ছবি দেখে দেই-
যেহেতু পর্যায় সারণি একটা টেবিল বা ছক, তাই এতে সারি (Row) এবং কলাম (Column) থাকে। বাম দিক থেকে ডান দিয়ে আনুভূমিকভাবে থাকা অংশগুলোকে সারি এবং লম্বালম্বিভাবে থাকা অংশ গুলোকে কলাম বা শ্রেণি বা Group বলে। পর্যায় সারণিতে থাকা প্রতিটা ঘরে মাত্র একটা করে মৌলিক পদার্থ অবস্থান করে। এবার চলো পর্যায় সারণির সবগুলো বৈশিষ্ট্য জেনে ফেলি-
১. এতে ৭টা পর্যায় বা Period বা সারি আছে এবং ১৮টা কলাম বা গ্রুপ আছে।
২. প্রতিটা পর্যায় বাম দিকে গ্রুপ 1 থেকে শুরু করে ডানদিকে গ্রুপ 18 পর্যন্ত বিস্তৃত।
৩. ৬ এবং ৭ নাম্বার পর্যায়ের অংশ ল্যান্থানাইড ও অ্যাকটিনাইড সারির মৌলগুলোকে পর্যায় সারণির নিচে আলাদাভাবে দেখানো হয়। যেখানে পারমাণবিক সংখ্যা ৫৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত ১৫টি মৌলকে ল্যান্থানাইড মৌল এবং পারমাণবিক সংখ্যা ৮৯ থেকে ১০৩ পর্যন্ত ১৫টা মৌলকে অ্যাকটিনাইড মৌল বলে।
৪. ১ম পর্যায় মৌল সংখ্যা – ২টা
২য় ও ৩য় পর্যায় মৌল সংখ্যা – ৮টা
৪র্থ ও ৫ম পর্যায় মৌল সংখ্যা – ১৮টা
৬ষ্ঠ ও ৭ম পর্যায় মৌল সংখ্যা – ৩২টা
৫. গ্রুপ 1 এর মৌল সংখ্যা – ৭টা
গ্রুপ 2 এর মৌল সংখ্যা – ৬টা
গ্রুপ 3 এর মৌল সংখ্যা – ৩২টা
গ্রুপ 4 থেকে 12 এর মৌল সংখ্যা – 4টা
গ্রুপ 13 থেকে 17 এর মৌল সংখ্যা – 6টা
গ্রুপ 18 এর মৌল সংখ্যা – 7টা
আবার বিভিন্ন মৌলের ধর্মের উপর ভিত্তি করেও পর্যায় সারণিতে কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। এগুলো হচ্ছে-
১. একই পর্যায়ে বাম থেকে ডান দিকে গেলে মৌলের ধর্মগুলো ক্রমান্বয়ে পরিবর্তিত হয়। যেমন- ৩ নাম্বার পর্যায়ের মৌলগুলোর দিকে যদি একটু তাকাই-
সোডিয়াম (Na) – ম্যাগনেসিয়াম (Mg) – অ্যালুমিনিয়াম (Al) – সিলিকন (Si) – ফসফরাস (P) – সালফার (S) – ক্লোরিন (Cl) – নিয়ন (Ne)
এখানে, ৩য় পর্যায়ের প্রথম মৌল সোডিয়ামের আকার বড় থাকে, কিন্তু তার পরের মৌলগুলোর আকার কমতে কমতে একদম শেষ মৌল নিয়নের আকার অনেক কমে যায়। অর্থাৎ একই পর্যায়ে মৌলের আকারের ধর্ম এখানে ক্রমান্বয়ে পরিবর্তিত হচ্ছে বা কমছে।
২. একই গ্রুপের মৌলের ভৌত এবং রাসায়নিক ধর্ম একই থাকে। যেমন, গ্রুপ 2 এর মৌল গুলোকে দেখি-
বেরিলিয়াম (Be) – ম্যাগনেসিয়াম (Mg) – ক্যালসিয়াম (Ca) – স্ট্রোনসিয়াম (Sr) – বেরিয়াম (Ba) – রেডিয়াম (Ra)
এখানে এরা সবাই মৃৎ-ক্ষার ধাতু, অর্থাৎ এসব ধাতু গুলো মাটিতে পাওয়া যায় এবং এদের প্রকৃতি হচ্ছে ক্ষারীয়। তাই বলা যায় এটা হচ্ছে তাদের সবার কমন ভৌত ধর্ম। আবার এদের সবার হাইড্রোক্সাইড যৌগ এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবন ও পানি তৈরি করে৷ তাই এটা হচ্ছে তাদের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য। যেহেতু এরা সবাই একই গ্রুপের মৌল, তাই এদের ভৌত এবং রাসায়নিক ধর্ম একই।
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
www.facebook.com/groups/mycrushschool
অথিতি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-
write@thecrushschool.com
Related posts:
- অণু ও পরমাণু
- আইসোটোপ কাকে বলে
- আয়নিক বন্ধন কাকে বলে
- এনজাইম কি
- জাতিজনি শ্রেণীবিন্যাস
- জৈব যৌগের প্রাচুর্যতা
- জৈব রসায়নের ইতিহাস
- ডালটনের পারমাণবিক মতবাদ
- তরল স্ফটিক ও প্লাজমা
- পরমাণুতে প্রোটন, ইলেকট্রন ও নিউট্রন সংখ্যার সম্পর্ক
- পারমাণবিক ভর ও আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর
- বিভিন্ন প্রকার ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া
- রসায়ন কাকে বলে
- রাসায়নিক ক্রিয়া বা বিক্রিয়া
- রাসায়নিক সংযোগ সূত্রসমূহ