বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নিয়ে জানার ক্ষেত্রে বাংলাভাষায় রচিত সাহিত্যকর্মকে বাংলা সাহিত্য বলে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস হাজার বছর বা তার চেয়েও বেশি সময়ের ইতিহাস। বাংলা সাহিত্য নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে-

সাহিত্য শব্দটা সংস্কৃত শব্দ,

সাহিত্যের সন্ধি বিচ্ছেদ, সাহিত্য = সহিত + য,

সাহিত্য শব্দের অর্থ – সহিতের ভাব, মিলন, যোগ,

সাহিত্য শব্দটা এসেছে সহিত শব্দ থেকে,

একের সহিত অন্যের মিলনের মাধ্যমই হচ্ছে সাহিত্য,

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের চেয়ে ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাস সবচেয়ে বেশি পুরোনো,

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস শুরু হয় চর্যাপদের কাল থেকে।

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস ও যুগবিভাগ

এখন বাংলা সাহিত্যের এই হাজার বছরের বেশি সময় ধরে থাকা ইতিহাস গুলোকে মনে রাখার জন্য অনেক পণ্ডিত অনেক ভাবে বাংলা সাহিত্যের যুগবিভাগ করেছেন। ভাষা তাত্ত্বিক পর্যালোচনা করে বাংলা সাহিত্যের সৃষ্টি ও ক্রমবিকাশ কে মোট তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

a) প্রাচীন যুগ (৬৫০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দ)

b) মধ্যযুগ (১২০১ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ) : মধ্যযুগের আবার তিনটা ভাগ আছে-

প্রাকচৈতন্য যুগ (১২০১ থেকে ১৫০০ খ্রিস্টাব্দ)

চৈতন্য যুগ (১৫০১ থেকে ১৬০০ খ্রিস্টাব্দ)

চৈতন্য পরবর্তী যুগ (১৬০১ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ)

c) আধুনিক যুগ (১৮০১ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত)

একটা চার্টের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের যুগবিভাগটা দেখে ফেলি-

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস ও প্রাচীন যুগ (৬৫০ – ১২০০ খ্রিষ্টাব্দ)

বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম রূপ / শাখা হচ্ছে – কাব্য

বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম সৃষ্টি – ছড়া

প্রাচীন যুগে সমাজ জীবনে প্রভাব ছিলো – ধর্মীয় চেতনা ও গোষ্ঠী কেন্দ্রিকতা

বাংলা সাহিত্যের আদিযুগের আরো একটা সৃষ্টি – ডাক ও খনার বচন (এটি কৃষিকাজের জন্য উপযোগী সাহিত্য)

ডাকের বচন – এটিতে জ্যোতিষ ক্ষেত্রতত্ত্ব ও মানব চরিত্রের ব্যাখ্যা দেওয়া আছে।

খনার বচন – এটিতে কৃষি ও আবহাওয়ার কথা দেওয়া আছে। এটির মূলভাব হচ্ছে শুদ্ধ জীবনযাপন রীতি।

বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন, প্রাচীনতম নিদর্শন, প্রাচীনতম সাহিত্য, প্রাচীনতম পদ সংকলন, প্রথম গ্রন্থ, এই সবকিছু হচ্ছে – চর্যাপদ

রূপকথা

প্রাচীনযুগে বাংলা সাহিত্যের উপকরণ হিসেবে পাওয়া যায় – রূপকথা। রূপকথা হচ্ছে শিশুতোষ গল্পকাহিনী এবং লোকসাহিত্যের জনপ্রিয় শাখা। বাংলা রূপকথার প্রথম সংগ্রাহক লালবিহারী দে। তিনি ১৮৭৫ সালে রূপকথার একটা ইংলিশ বই বের করেন যার নাম ছিলো Folk Tales of Bengal. তার উত্তরসূরি দক্ষিণারঞ্জন মিত্রমজুমদার বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রূপকথাগুলো সংগ্রহ করেন এবং এগুলোকে তিনি ঠাকুরমার ঝুলি ও ঠাকুরদাদার ঝুলি নামে দুই খন্ডে প্রকাশ করেন।

বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগ (১২০১ – ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ)

মধ্যযুগের ১২০১ থেকে ১৩৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মোট ১৫০ বছরকে বাংলা সাহিত্যের The Dark Age বা অন্ধকার যুগ বলা হয়। এর আরেক নাম সন্ধি যুগ বা তুর্কিযুগ

বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার যুগ শুরু হয়েছিলো বখতিয়ার খলজির বাংলা আক্রমণের সময় থেকে।

বাংলা সাহিত্যে অন্ধকার যুগ নেমে আসার কারণ – রাজনৈতিক পট পরিনর্তন।

এ যুগের সবটুকু সাহিত্যই মুসলিম শাসনামলের অন্তর্গত

অন্ধকার যুগের দুটো সাহিত্য কর্ম ছিলো – শূন্যপুরাণ ও সেক শুভোদয়া।

মধ্যযুগের কাব্যধারার প্রধান ধারা ৪টা,

a) মঙ্গল কাব্য

b) বৈষ্ণব পদাবলী

c) রোমান্স ধর্মী প্রণয়োপাখ্যান

d) অনুবাদ সাহিত্য

মধ্যযুগের কাব্যের ধারা দুটো- কাহিনী কাব্য ও গীতি কাব্য।

মধ্যযুগের আদি নিদর্শন – শ্রীকৃষ্ণকীর্তন

বাংলা কাব্য সাহিত্যের বিকাশকাল – মধ্যযুগ

মধ্যযুগের কাব্যের প্রধান গুন ছিলো – ধর্মনির্ভরতা

মধ্যযুগে মুসলমান সাহিত্যিকদের কৃতিত্ব ছিলো – রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান রচনাতে।

মধ্যযুগের প্রধান মুসলিম কবি – দৌলত কাজী ও আলাওল

মধ্যযুগের শেষ কবি – ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর

বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ (১৮০১ থেকে বর্তমানকাল)

আধুনিক যুগের সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য – মানবের জয় জয়কার,

আধুনিক যুগের সাহিত্যের প্রধান লক্ষণ – আত্নচেতনা ও জাতীয়তাবোধ,

বাংলা গদ্যের চর্চা হয় – আধুনিক যুগের প্রথম ভাগে,

আধুনিক যুগে মহাকাব্যের ধারা প্রবর্তন করেন – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool

অথিতি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-

write@thecrushschool.com