ভাষা

ভাষা নিয়ে তথ্য

ভাষা হচ্ছে ভাবের উৎস এবং ভাবের উচ্চারণ,

ভাষার সৃষ্টি হয় দুভাবে- ধ্বনির সাহায্যেবাকযন্ত্রের সাহায্যে,

গ্রীক শব্দ Logos থেকে ভাষা শব্দটার উৎপত্তি,

পৃথিবীতে মোট ভাষা আছে সাড়ে ৩০০০ এর বেশি,

ভাষার প্রধান গুন হচ্ছে অর্থবহতা

ভাষার ধর্মই হচ্ছে বদলে যাওয়া

ভাষার পার্থক্য ও পরিবর্তন ঘটে- দেশ, কাল ও পরিবেশভেদে

আরো কিছু জিনিস অবশ্যই জানতে হবে-

ভাষার মূল উপাদান ধ্বনি (মনে রাখবে যেভাবে- উপাদান শব্দে আছে, ধ্বনি শব্দেও আছে)

ভাষার মূল উপকরণ বাক্য (মনে রাখবে যেভাবে- উপকরণ শব্দে আছে, বাক্য শব্দেও আছে)

ভাষা বিশ্লেষণের শেষ ধাপ হচ্ছে বর্ণ (বর্ণের পর ভাষাকে আর ভাঙ্গা যায় না)

ভাষার ঐশ্বর্যময় সম্ভার হচ্ছে শব্দ

 

বাংলা ভাষা

পৃথিবীতে ৪র্থ বৃহত্তম মাতৃভাষা বাংলা,

বাংলাদেশ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, বিহার, উড়িষ্যাতেও বাংলাতে কথা বলে,

বাংলাভাষার ২টা রূপ আছে-

লৈখিক ও মৌখিক

লৈখিক এর দুটো রূপ আছে-

সাধু ও চলিত

মৌখিক এর দুটো রূপ আছে-

আঞ্চলিক ও চলিত

 

আঞ্চলিক ভাষা / উপভাষা : ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলের জনগন নিজ নিজ অঞ্চলের ভাষায় কথা বলে। এসব ভাষাকে আঞ্চলিক ভাষা বলে। এটির ইংরেজি পরিভাষা – Dialect। পৃথিবীর সব ভাষার উপভাষা আছে।

প্রাকৃত ভাষা : প্রাকৃত শব্দের অর্থ স্বাভাবিক। অর্থাৎ এটি সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা। এই ভাষা থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে। 

এবার চলো দেখে ফেলি বিশ্বের বিভিন্ন ভাষা ব্যবহারকারীদের মধ্যে বাংলা ভাষার অবস্থান কততম?

১ম অবস্থান – মান্দারিন (চীনের মানুষ এই ভাষায় কথা বলে)

২য় অবস্থান – স্প্যানিশ

৩য় অবস্থান – ইংরেজি

৪র্থ অবস্থান – হিন্দি

৫ম অবস্থান – আরবি

৬ষ্ঠ অবস্থান – পর্তুগিজ

৭ম অবস্থান – বাংলা

তবে, দাপ্তরিক ভাষা / অফিসিয়াল ভাষা / যোগাযোগের ভাষা / জাতিসংঘ দ্বারা স্বীকৃত ভাষা অনুসারে-

১ম অবস্থান – ইংরেজি

১০ অবস্থান – বাংলা

বাংলাদেশ ছাড়াও আফ্রিকার একটা দেশ সিয়েরা লিওন এর ২য় রাষ্ট্রীয় ভাষা হচ্ছে বাংলা। এছাড়া পৃথিবীতে বর্তমানে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ বাংলাভাষায় কথা বলে।

 

বাংলা ভাষার উৎপত্তি

পৃথিবীতে সকল ভাষার উৎপত্তি কয়েকটা মূল ভাষা থেকে। ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা হচ্ছে এক ধরনের মূল ভাষা। নিচে একটা ছক দেখে নাও, এখানে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা থেকে কিভাবে বাংলা ভাষা এসেছে তা দেখানো হয়েছে-

এবার ভাষার উৎপত্তি নিয়ে আরো কিছু তথ্য জানবো-

ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহের মতে, বাংলা ভাষার উৎপত্তি ঘটে সপ্তম শতাব্দীতে (অর্থাৎ ৬০০ সালের দিকে)

সহোদর ভাষাগোষ্ঠী বলা হয় বাংলা ও অসমিয়া ভাষাকে

বাঙ্গালিদের বলা হয় সংকর জাতি

আর্যদের ভাষার নাম প্রাচীন বৈদিক ভাষা

 ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ নিয়ে যারা কাজ করেন তাদেরকে ভাষাতাত্ত্বিক বলে

বাংলাভাষার বয়স প্রায় ১৫০০ বছর

ব্রজবুলি ভাষা হচ্ছে বাংলা ও মিথিলা ভাষার মিশ্ররূপ

বাংলা ভাষার যুগবিভাগ তিনটি-

প্রাচীন যুগ (৬৫০ থেকে ১২০০ সাল)

মধ্যযুগ (১২০১ থেকে ১৮০০ সাল)

আধুনিক যুগ (১৮০১ থেকে বর্তমান)

 

সংস্কৃত ভাষা

সংস্কৃত ভাষা হচ্ছে লেখার ভাষা, এই ভাষায় কেউ কথা বলে না। সংস্কৃত শব্দটার প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় রামায়ণে। এই ভাষার দুহিতা বলা হয় বাংলাভাষাকে। বাংলাভাষায় যেমন ছন্দ আছে, সংস্কৃত ভাষাতেও ছন্দ আছে যাকে পজ্বটিকা বলে।

 

সাধু ও চলিত ভাষা

সাধারণভাবে যেসব ভাষা ব্যাকরণের নিয়ম মেনে চলে এবং সাধারন মানুষ যেসব ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত না সেগুলোকে সাধু ভাষা বলে। অন্যদিকে যেসব ভাষা ব্যাকরণের নিয়ম পুরোপুরিভাবে মেনে চলে না কিন্তু সাধারণ মানুষ সেই ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত তাদেরকে চলিত ভাষা বলে।  বাংলা ভাষায় সাধু ও চলিত রীতির পার্থক্য নিচে তুলে ধরা হলো-

সাধু

চলিত

প্রবর্তক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কিন্তু প্রথম ব্যবহার করেন রাজা রায়মোহন রায়, বাংলা গদ্যের ১ম যুগের প্রচলন ছিলো এটি।

প্রবর্তক প্রমথ চৌধুরী, ভাগরথী নদীর তীরে বাস করা মানুষের ভাষা এটি এবং কথ্যরীতির সমন্বয় শিষ্টজনের ব্যবহৃত ভাষা এটি।

ব্যাকরণের নিয়ম মেনে চলে ও পদবিন্যাস সুনির্দিষ্ট।

ব্যাকরণের নিয়ম মানে না ও এটি পরিবর্তনশীল।

তৎসম শব্দ বহুল।

তদ্ভব, দেশী ও বিদেশী শব্দ যুক্ত।

সর্বনাম ও ক্রিয়াপদ বিশেষ নিয়ম মেনে চলে।

সর্বনাম ও ক্রিয়াপদ পরিবর্তিত এবং সহজরূপ মেনে চলে।

এটি প্রাচীন ও কৃত্রিম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী।

এটি প্রাচীন ও কৃত্রিম বৈশিষ্ট্যের ভাষা না।

সন্ধি ও সমাসবদ্ধ পদ বেশি থাকে।

সন্ধি ও সমাসবদ্ধ পদ থাকে না।

সর্বনাম পদ সম্পূর্ণরূপে ব্যবহৃত হয়।

সর্বনাম পদ সম্পূর্ণরূপে ব্যবহৃত হয় না।

অব্যয়পদ দীর্ঘরূপ হয় না।

অব্যয়পদ দীর্ঘরূপ হয়।

বিভক্তি পূর্ণরূপে ব্যবহৃত হয়, যেমন- দ্বারা, হইতে, থেকে, কর্তৃক।

বিভক্তি পূর্ণরূপে ব্যবহার করা হয় না।

মনে রাখবে –

সমাসের রীতির আগমন ঘটে সংস্কৃত ভাষা থেকে

প্রমথ চৌধুরী তার সম্পাদিত সবুজপত্র পত্রিকার মাধ্যমে চলিত ভাষাকে সবার মাঝে প্রচলিত করেছিলেন

চলিত ভাষার আরেক নাম প্রমিত ভাষা / তদ্ভব ভাষা / খাটি বাংলা ভাষা

সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণকে গুরুচান্ডলী দোষ বলে

এবার আমরা সাধু ও চলিত ভাষায় ব্যবহৃত বেশি কিছু শব্দ দেখবো যেগুলো নিয়ে আমাদের প্রায়ই ঝামেলায় পড়তে হয়-

সাধু

চলিত

মস্তক

জুতা

তুলা

শুকনা

বন্য

পূর্বেই

সহিত

ব্র‍্যাঘ্র

যদ্যপি

মূলা

চর্মকার

পাথুরিয়া

গৃহ

গাছুয়া

সর্প

হস্ত

অদ্য

তথাপি

বিহনে

দধি

অবতরণ

বধু

মাথা

জুতো

তুলো

শুকনো

বুনো

আগেই

সঙ্গে

বাঘ

যদি

মূলো

চামার

পাথুরে

ঘরে

গেছো

সাপ

হাত

এখন

তবুও

বিনে

দই

নামা

বউ

 

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool

অথিতি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-

write@thecrushschool.com

Emtiaz Khan

A person who believes in simplicity. He encourages the people for smart education. He loves to write, design, teach & research about unknown information.