যখন একটা Current বা Voltage এর মান সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয় তখন সেই মানটাকে কিছুতেই Stable বলা যায় না। অল্টারনেটিং কারেন্ট বা ভোল্টেজ (Alternating Voltage/Current) -এর মান হচ্ছে ঠিক তেমনি একটা মান। যখন কোনো উৎস থেকে আসা কারেন্ট বা ভোল্টেজের মান সময়ের সাথে সাথে বদলায় তখন সেটাকে Alternating Voltage অথবা Alternating Current বলে। এরা দুজনেই হচ্ছে এক ধরনের Alternating Quantity.
নিচের ছবিটা খুব সাধারন একটা সার্কিটের। যেটার উৎস হচ্ছে Alternating Voltage. ঠিক এই সময়ে Voltage উৎসের উপরের দিকটা পজেটিভ আর নিচের দিকটা নেগেটিভ। মানে কারেন্ট উপর দিয়ে বের হয়ে সার্কিটে যাচ্ছে আর ইলেকট্রন নীচ দিয়ে বের হচ্ছে।
কিন্তু আবার ঠিক একটু পরেই Voltage Direction পরিবর্তন হয়ে গেলো। এখন কারেন্ট বের হচ্ছে নীচ দিয়ে আর ইলেকট্রন বের হচ্ছে উপর দিয়ে-
তাহলে বুঝতে পারলাম Alternating Source-এর নির্দিষ্ট কোনো +ve / -ve দিক নেই। যেটা এখন +ve থাকে সেটা একটু পর -ve হয়ে যায় আবার যেটা এখন -ve থাকে সেটা একটু পর +ve হয়ে যায়। Alternating Quantity-এর চলার পথটা একটু অন্যরকম। এরা সোজা পথে চলতে পারে না। Alternating Current চলার ক্ষেত্রে সময়ের সাথে সাথে এর মান বাড়ে-কমে, এটাই হচ্ছে Alternating Current-এর মূল ফ্যাক্ট।
Alternating Current বা Alternating Voltage সোর্সকে যখন কোনো সার্কিটে হয় তখন একদম শুরুতে এর মান শূণ্য থাকে। সময় বাড়ার সাথে সাথে একটু একটু করে তার মান বাড়ে। বাড়তে বাড়তে সর্বোচ্চ মান হয়। তারপর আবার কমে। কমতে থাকে আরো কমতে থাকে। আবার শূণ্য হয়ে যায় তার মান। আবার আরো কমে, কমতে কমতে নেগেটিভ মান হয়ে যায়। তারপর একদম সর্বোচ্চ নেগেটিভ মান হয়ে যায়। তারপর আবার বাড়ে, বাড়তে বাড়তে শূণ্য হয়ে যায়। এভাবেই একটা Alternating Current সময়ের আথে সাথে বাড়ে কমে-শূন্য হয়, কমে বাড়ে-শূণ্য হয়। তাহলে Alternating যেকোনো জিনিস একটা তরঙ্গ বা Wave এর মত কাজ করে। তরঙ্গ যেমন কমে বাড়ে তেমনি Alternating Quantity কমে বাড়ে। একটু গ্রাফিক্যালি দেখলে মন্দ হয় না।
সময়টা যদি X-অক্ষ আর Alternating Voltage অথবা Alternating Current-কে যদি Y-অক্ষ বরাবর ধরি তাহলে-
এটা একটু বোঝার চেষ্টা করি। X-অক্ষ বরাবর যতই সামনের দিকে যাবো টাইম/সময় ততই বাড়তে থাকবে। Y-অক্ষ বরাবর যতই উপরের দিকে যাবো Alternating Voltage অথবা Alternating Current এর মান ততই বাড়তে থাকবে, আবার Y-অক্ষ বরাবর যতই নীচে যাবো Alternating Voltage অথবা Alternating Current এর মান ততই কমতে থাকবে। ধরে নেই এই গ্রাফটি AC Voltage এর মানকে দেখাচ্ছে-
এখানে দেখো এসি কারেন্ট বা ভোল্টেজ এর waveform টা যখন শুরুতে শূন্য অবস্থানে তখন এর মান Y-অক্ষ বরাবর শূণ্য এবং সময় X-অক্ষ বরাবর শূণ্য। তারপর X-অক্ষ বরাবর সময় আস্তে আস্তে বাড়তে থাকলো। হঠাৎ1 সেকেন্ডে গেলো সময়। তখন 0 থেকে বাড়তে বাড়তে AC voltage এর মান হলো 5 volt। ধরা যাক 5V হচ্ছে এসি ভোল্টেজের সর্বোচ্চ মান। 1 সেকেন্ড অতিক্রম করার পর এসি ভোল্টেজের মান কমতে শুরু করলো। 2 সেকেন্ডে এসি ভোল্টেজের মান কমে আগের মত 0 volt হয়ে গেলো। এবার এসি ভোল্টেজের মান আরো কমতে লাগলো। 3 সেকেন্ডে এসি ভোল্টেজের মান কমতে কমতে সর্বোচ্চ কমে -5 volt হয়ে গেলো। এরপর সময় বাড়ার সাথে সাথে এসি ভোল্টেজের মান আবার বাড়তে লাগলো। 4 সেকেন্ড সময়ে এর মান বেড়ে আবার 0V হয়ে গেলো।
তাহলে বোঝা যাচ্ছে এসি কারেন্ট/ভোল্টেজ All Time বাড়ে / কমে, তবে সময়ের সাথে সাথে, আর সময় সবসময়ই বাড়ে। ডিসিতে উৎসের যে প্রান্ত থেকে বিদ্যুৎ/কারেন্ট আসে সেটা পজেটিভ প্রান্ত, আর যে প্রান্তে কারেন্ট/বিদ্যুৎ যায় সেটা নেগেটিভ প্রান্ত। কিন্তু এসির ক্ষেত্রে যে প্রান্ত থেকে বিদ্যুৎ আসে সেটাকে ফেজ বলে। বিদ্যুৎ যেখানে যায় সেটাকে লোড বলে। তাই ফেজ পজেটিভ আর নেগেটিভ দুটোই হতে পারে। ফেজ নির্দিষ্ট কোনো টার্মিনাল না। Sinusoidal ছাড়াও এসি-এর আরো বিভিন্ন ধরনের Wave Shape আছে।
কোনটির শক মারাত্নক?
আমরা যে ব্যাটারি ধরি সেগুলো হচ্ছে ১.৫ থেকে ৬ ভোল্টের মত। তাই এই ডিসি কারেন্টে আমরা শক খাই না। কিন্তু একটা ১০০ ভোল্টের ব্যাটারী ধরে যদি বসে থাকি তাহলে নির্ঘাত শক দিবে। তবে ডিসির চেয়ে এসি বেশি খারাপ তোমাকে শক দেবার জন্য। ২০০ এম্পিয়ার ডিসি কারেন্ট যদি তোমাকে শক দেয় তাহলে সেটা ঠিক ২০০ এম্পিয়ারই তোমার শরীরে প্রবাহিত করবে। কিন্তু ২০০ এম্পিয়ার এসি যদি শক দেয় তাহলে এটার মানে শুধু ২০০ এম্পিয়ারই না আরো বেশি কিছু। কারন এসিতে কারেন্ট প্রতি মুহূর্তে আপ-ডাউন করে। এসি কারেন্ট আপ-ডাউন করে বলে হার্টের স্বাভাবিক কম্পনে বাঁধা দেয় আমাদের। ফলে হার্টও কাপতে থাকে আর আমাদের রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেয়।
ডিসি কারেন্ট আমাদের হার্ট কাঁপায় না, শুধু স্থির করে দেয়। সেটাও কম ভয়ংকর না। তবে স্থির হয়ে যাওয়া হার্ট তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যায় কিন্তু এসির শকের ফলে ভাইব্রেট হওয়া হার্ট অত সহজে ঠিক হয় না। তাই ডিসির চেয়ে এসি শক দিয়ে সেটা খারাপ শক হয়। এসি কারেন্ট শরীরের পেশী গুলোকে সংকোচন করে ফেলে, যার জন্য শরীর কারেন্টের লাইনের সাথে আটকে থাকে। আর ডিসি প্রথম থেকেই একই পরিমানে চলাচল করে বলে শুরুতে এটা আমাদের দেহকে ধরলেও পরে ছেড়ে দেয়। ফলে প্রতিক্রিয়া বলের জন্য মানুষ ছিটকে পড়ে। তেমন একটা ক্ষতি হয় না তখন।
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
www.facebook.com/groups/mycrushschool
অতিথি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-
write@thecrushschool.com
Related posts:
- এফারেন্ট, একটিভ এবং রিএকটিভ পাওয়ার (Apparent, Active & Reactive Power)
- কারেন্ট সোর্স (Current Source)
- কার্শফের কারেন্ট সূত্র এক্সপেরিমেন্ট – Kirchhoff Current Law Experiment
- কার্শফের ভোল্টেজ সূত্র (Kirchhoff’s Voltage Law : KVL)
- কার্শফের ভোল্টেজ সূত্র এক্সপেরিমেন্ট – Kirchhoff’s Voltage Law Experiment
- ট্রান্সফর্মারের ভোল্টেজ রেগুলেশন (Voltage Regulation of Transformer)
- তড়িৎ বা বিদ্যুৎ প্রবাহ (Flow of Current or Electricity)
- ভোল্টেজ সোর্স (Voltage Source)
- ভোল্টেজের প্যারালাল কানেকশন – Voltage in Parallel Connection
- ভোল্টেজের সিরিজ কানেকশন – Voltage in Series Connection
- সার্কিটের কারেন্ট এবং ভোল্টেজ পরিমাপ – Circuit Current & Voltage Measuring (Part 1)
- সার্কিটের কারেন্ট এবং ভোল্টেজ পরিমাপ – Circuit Current & Voltage Measuring (Part 2)
- সার্কিটের কারেন্ট এবং ভোল্টেজ পরিমাপ – Circuit Current & Voltage Measuring (Part 3)
- সার্কিটের কারেন্ট পরিমাপ – Circuit Current Measuring
- সার্কিটের ভোল্টেজ পরিমাপ – Measuring Circuit Voltage