যখন কোনো সার্কিটের সাথে এসি সোর্সকে যুক্ত করা হয় তখন তিন ধরনের ইলেকট্রিক পাওয়ার সেই সার্কিটে কাজ করে। এগুলো হচ্ছে-
- Apparent Power (এফারেন্ট পাওয়ার) বা Total Power
- Active Power (একটিভ পাওয়ার) বা Real Power এবং
- Reactive Power (রিএক্টিভ পাওয়ার)
এই তিন ধরনের Power নিয়ে এখন জানার চেষ্টা করবো।
Apparent Power (এফারেন্ট পাওয়ার)
এসি সোর্স থেকে সার্কিটে যেটুকু ইলেকট্রিক পাওয়ার সাপ্লাই করা হয় তাকে Apparent power বলে। Apparent power হচ্ছে একটা সার্কিটের মোট এসি পাওয়ার। সার্কিটের ভোল্টেজ এবং কারেন্টের RMS ভ্যালুর গুনফল হচ্ছে Apparent power. একে S দিয়ে প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ-
S = Vrms. Irms
Apparent power এর একক হচ্ছে Volt-Ampere (VA) কিংবা Kilo volt Ampere (KVA).
Active Power (একটিভ পাওয়ার)
এসি সোর্স থেকে আসা পাওয়ারের যে অংশকে সার্কিটের রেজিস্টর শোষণ বা Absorb করে তাকে Active বা Real power বলে। অর্থাৎ সার্কিটের Resistive Load যে ইলেকট্রিক পাওয়ার টেনে নেয় সেটাই Real power. এটা Apparent power এর একটা অংশ। একে P দিয়ে প্রকাশ করা হয়।
যদি সার্কিটে এসি ভোল্টেজ এবং এসি কারেন্টের মধ্যকার phase angle এর মান θ হয় তবে Real power এর মান হবে-
P = VI cos θ
Active power এর একক হচ্ছে Watt (W) কিংবা Kilo Watt (KW). আমরা ওয়াটমিটার দিয়ে যে ইলেকট্রিক পাওয়ারকে মাপি সেটাই Real Power.
Reactive Power (রিএকটিভ পাওয়ার)
Reactive মানে হচ্ছে যেটা inactive বা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে আবার active বা সক্রিয় অবস্থায়ও থাকে। সার্কিটে ব্যবহৃত Reactive Element (যেমন inductor বা capacitor যুক্ত Load) যে ইলেকট্রিক পাওয়ারকে শোষণ করে তাকে Reactive power বলে। এই পাওয়ার দিয়ে সার্কিটে কোনো কাজ হয় না। একে Q দিয়ে প্রকাশ করা হয়। এসি ভোল্টেজ এবং এসি কারেন্টের মধ্যকার phase angle এর মান θ হলে এই পাওয়ারের মান হবে-
Q = VI sin θ
Reactive Power এর একক হচ্ছে VAR কিংবা KVAR.
যখন ইলেকট্রিক পাওয়ার সিস্টেমে Complex (বা Apparent) power, Real (বা Active) power এবং Reactive power এই তিনটাকে একটা ত্রিভুজের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে পাওয়ার ট্রায়াঙ্গেল (Power Triangle) বলে।
অর্থাৎ-
Power Triangle হচ্ছে একটা Graphical Representation যেটা Apparent, Real এবং Reactive এই তিনটি Power এর মধ্যে সমকোণী ত্রিভুজের সম্পর্ক তৈরি করে।
Power Triangle দেখতে একদম Impedance Triangle এর মত যেখানে ত্রিভুজের Hypotenuse (অতিভূজ) হিসেবে থাকে Apparent power, Base (ভূমি) হিসেবে থাকে Real Power এবং Height (লম্ব) হিসেবে থাকে Reactive power. এছাড়া এই ত্রিভুজে Apparent power এবং Real power এর মধ্যকার একটা কোণ (Angle) থাকে যাকে পাওয়ার ফ্যাক্টর কোণ (Power Factor angle) বলে।
Power Triangle থেকে আমরা এই তিন ধরনের পাওয়ারকে সহজেই বুঝতে পারবো-
এই ত্রিভুজের দুটো রূপ দেখা যায়। যখন সার্কিটের লোড inductive থাকে তখন Apparent power S দ্বিমাত্রিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় ১ম চতুর্ভাগে (বা 1st Quadrant-এ) থাকে। এই সময় সার্কিটের পাওয়ার ফ্যাক্টর Lagging থাকে।
আবার যখন সার্কিটের লোড capacitive থাকে তখন Apparent power S দ্বিমাত্রিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় ৪র্থ চতুর্ভাগে (বা 4th Quadrant-এ) থাকে। এই সময় সার্কিটের পাওয়ার ফ্যাক্টর Leading থাকে। নিচের ছবিতে দেখো-
এই তিন ধরনের পাওয়ারকে বোঝার জন্য একটা বাস্তব উদাহরণ দেয়া যায়। ধরো তুমি একটা গ্লাসে কোকাকোলা কিংবা বিয়ার ঢেলে নিলে। তখন দেখবে তোমার গ্লাসের নিচের দিকে বিয়ার এবং উপরের দিকে কিছু ফেনা তৈরি হয়েছে। কিছুক্ষণ পর সেই ফেনাটা উধাও হয়ে যাবে এবং গ্লাসের মধ্যে শুধুমাত্র সেই তরল বিয়ারটা রয়ে যাবে।
অর্থাৎ, তুমি শুধুমাত্র অবশিষ্ট রয়ে যাওয়া কোকাকোলাটাই খেতে পারবে, উড়ে যাওয়া ফেনাটা খেতে পারবে না। এখানে উড়ে যাওয়া ফেনাটা হচ্ছে Reactive Power, যেটা কোনো কাজে আসে না। গ্লাসের তলে রয়ে যাওয়া তরল বিয়ারটা হচ্ছে Active Power, যেটা কাজে লাগে। আর তুমি বোতল থেকে যে বিয়ার গ্লাসে ঢেলেছো সেটা পুরোটো হচ্ছে Apparent Power, যেটার মধ্যে ফেনা (বা Reactive Power) এবং তরল কোকাকোলা (বা Active Power) দুটোই ছিলো।
অর্থাৎ-
Apparent Power = Active Power + Reactive Power
ক্রাশ স্কুলের Youtube চ্যানেলের জয়েন করুন-
অথিতি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-
write@thecrushschool.com