কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ

কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ নিয়ে এখন আলোচনা করবো। আমরা এবং আমাদের আশেপাশে যত বস্তু আছে, প্রতিটা বস্তু সারাক্ষণ কিছু না কিছু পরিমান রেডিয়েশন বিকিরণ করে। যেমন তুমি যদি তোমার হাতকে কানের কাছে নিয়ে যাও তবে কিছু সময় পর তোমার হাতে সামান্য পরিমান গরম লাগবে। অর্থাৎ তোমার কান এখানে তাপ বিকিরণ করছে। তবে সব বস্তুর বিকিরণের ক্ষমতা এবং পরিমান সমান না।

কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ কি

প্রতিটা বস্তু তার শরীর থেকে যে পরিমান শক্তি বা এনার্জি বিকিরণ করে সেটা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ আকারে থাকে। এই ওয়েভ বা তরঙ্গের তীব্রতা (Intensity) হচ্ছে বস্তুর পরম তাপমাত্রার (Absolute temperature of object) কেলভিনের চতুর্ঘাতের সমানুপাতিক।

প্রতিটা বস্তু যেমন এনার্জি বা রেডিয়েশন বিকিরণ করে, তেমন শোষণও করে। তবে কোনো বস্তুর উপর যেকোনো রেডিয়েশন বা আলো পড়লে বস্তুটি সেটাকে পুরোপুরিভাবে শোষণ করতে পারে না।

যে বস্তুটি তার উপরে পড়া রেডিয়েশন বা আলোর সবটুকু শোষণ করতে পারে তাকে Black body বা কৃষ্ণবস্তু বলে।

কৃষ্ণবস্তু

তাহলে Black body হচ্ছে এক ধরনের ideal object. তবে বাস্তবে কোনো বস্তুই তার উপরে পড়া রেডিয়েশনের ১০০% শোষণ করতে পারে না বলে বাস্তবে Black body নেই। এটি পিজিক্সের একটা ধারণা মাত্র। তবে black body তৈরি করার একটা খুব সুন্দর উপায় হচ্ছে, এমন একটা ফাঁপা বস্তুকে নিতে হবে যেটাতে একটা ছিদ্র থাকতে। সেই ছিদ্রপথে কোনো আলোকরশ্মি ঢুকলে সেটা বস্তুর ভেতরে বারবার প্রতিফলিত হবে কিন্তু বের হতে পারবে না।

যদি আমরা black body কে গরম করি তবে সেটা বিভিন্ন wavelength যুক্ত রেডিয়েশন নিঃসরণ করবে। অর্থাৎ Black body তে ভিন্ন ভিন্ন তাপমাত্রা প্রয়োগ করলে সেটি ভিন্ন ভিন্ন তীব্রতার ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন বের করবে।

এবার একটা গ্রাফ দেখি আমরা যেখানে x axis বরাবর থাকবে-

   একটা black body কে গরম করার ফলে এর থেকে বের হওয়া রেডিয়েশনের তীব্রতার (intensity) পরিমাণ,

এবং y axis বরাবর থাকবে-

   রেডিয়েশন বা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভের wavelength, যার একক micro meter.

কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ

গ্রাফ থেকে দেখা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বা 2500k তাপমাত্রায় একটা black body থেকে বিভিন্ন তীব্রতার রেডিয়েশন বের হয়, কিন্তু মাত্র একটা রেডিয়েশনের তীব্রতা থাকে সর্বোচ্চ। একে Peak intensity বলে।

আবার তাপমাত্রা যদি 2500k থেকে দ্বিগুন করে 3000k পর্যন্ত করা হয় তবে black body থেকে বের হওয়া ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের তীব্রতা (intensity) আগের থেকেও অনেক বেড়ে যাবে। একইসাথে peak intensity এর মানও বাড়বে। একইভাবে 3500k তাপমাত্রার জন্য peak intensity আরো বাড়বে।

ভীনের সূত্র

এখন peak intensity এর wavelength এবং black body তে দেয়া তাপমাত্রার মাঝে যে সম্পর্ক তৈরি হয় সেটাকে ভীনের সূত্র বা wien’s law দিয়ে প্রকাশ করা যায়। যদি peak intensity এর wavelength λ এবং তাপমাত্রা T হয় তবে ভীনের সূত্রানুসারে-

   λT = 2.9 * 10-3 mk (মিটার কেলভিন)

ভীনের এই সূত্র ব্যবহার করে আমরা যেকোনো wavelength বা কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ এর আলোর তাপমাত্রা বের করে ফেলতে পারি। যেমন আমাদের সূর্য থেকে আসা আলোর peak intensity এর wavelength λ = 500 μm. তাহলে সূর্য পৃষ্টের তাপমাত্রা যদি T হয় তবে,

   T = (2.9 * 10-3) / (500 * 10-9)

      = 5800 k

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool

অতিথি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-

write@thecrushschool.com