সেলুলার নেটওয়ার্ক কি

সেলুলার নেটওয়ার্ক কি সেটা নিয়ে জানার আগে জানতে হবে মোবাইল ফোন হচ্ছে এক ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস যাকে Cellular Communication System-এর মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়। তাই মোবাইল ফোনকে সেলফোন বা হ্যান্ডসেট বলে। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা একে অপরের সাথে মোবাইলের মাধ্যমে একটা কিংবা অনেকগুলো Base Station-এর আন্ডারে যোগাযোগ করতে পারেন।

Cellular Communication হচ্ছে এক ধরনের Duplex System, যেখানে একই সাথে sender এবং receiver একইসময় যোগাযোগ করতে পারেন। মোবাইল শব্দটি এসেছে “mobility” থেকে, যার অর্থ হচ্ছে সঞ্চারণশীল বা চলমান। অর্থাৎ এই ডিভাইস ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা চলমান অবস্থায় থেকে যেকোনো যায়গা থেকে যোগাযোগ করতে পারেন।

সেলুলার নেটওয়ার্ক কি

এখন সেলুলার নেটওয়ার্ক কি সেটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। মোবাইল ফোন গুলো যে Base station এর আন্ডারে থেকে কাজ করে সেই base station গুলো একটা Antenna এর মাধ্যমে প্রতিটা এলাকায় নির্দিষ্ট কিছু জায়গাকে cover করে রাখে। এই জায়গা বা area গুলোর মধ্যে থাকা যেকোনো মোবাইল তখন base station কে ব্যবহার করে telecommunication ঘটাতে পারে। একটা মোবাইল ফোন এবং base station এর antenna এর মধ্যে radiowave সিগন্যাল কাজ করে।

তাই যেকোনো বাঁধা থাকুক না কেন, ঘরের ভেতরে হোক কিংবা রুমের ভেতরে হোক, আমরা সহজেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অনেক দূরে থাকা মানুষদের সাথে যোগাযোগ করতে পারি। কেননা radiowave যেকোনো বাঁধা অতিক্রম করতে পারে।

শুরুতে মোবাইল ফোনকে ডিজাইন করা হয়েছিল Voice communication system এর জন্য। কিন্তু এখনকার মোবাইল ফোনগুলোতে voice transmit করার পাশাপাশি মেসেজ আদান-প্রদান, ইমেইল পাঠানো, ইন্টারনেট চালানো, বিভিন্ন ধরনের গেম খেলা কিংবা ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা ইত্যাদি সব কাজই করা যায়।

Cellular Communication System কিভাবে কাজ করে?

একটা স্থির এবং একটা চলনশীল বস্তুর মধ্যে Cellular Communication তৈরি করা হয়। যে বস্তুটি চলনশীল সেটি হচ্ছে আমাদের ব্যবহার করা মোবাইল ফোন, আর যেটি স্থির থাকে সেটি হচ্ছে Base station। অর্থাৎ একটা Cellular Communication System মোট দুটো অংশ নিয়ে গঠিত-

  1. Statable Object (Base Station)
  2. Moving Object (Mobile Phone Device)

Base station আবার দুটো ভাগ নিয়ে তৈরি-

  1. Base station Office
  2. Antenna

সেলুলার নেটওয়ার্ক কি সেটা নিয়ে ইতোমধ্যে জেনে গেছি। একটা base station এর চারপাশে যে জায়গা বা area জুড়ে মোবাইল নেটওয়ার্কের coverage থাকে তাকে Cell বলে। অর্থাৎ প্রতিটা Cell গঠিত হয় একটা Antenna এবং Base station office দিয়ে। তাই cell নিয়ে তৈরি হওয়া এই ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে Cellular Communication বলা হয়। Base station-এ থাকা Antenna রেডিও ওয়েভ সিগন্যালকে transmit বা receive করতে পারে এবং base station office পুরো base station এর কার্যকলাপকে পরিচালনা করে।

Cellular communication system এর প্রতিটা cell এর একটা নির্দিষ্ট frequency থাকে। এই frequency ব্যবহার করে Base station এর Antenna কাজ করে। একইসাথে এই antenna কোনো মোবাইলের data connection কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাই একটা Base station যেকোনো ফোনের data signal কে transmit, receive এবং control করতে পারে।

সেলুলার নেটওয়ার্ক কি ও সেল কি?

Cellular communication system এর প্রতিটা cell এর আকৃতি (Shape) বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন- বৃত্তাকার (Circular), বর্গাকার (Square), ত্রিভুজাকার (Triangular), পঞ্চভুজ (Pentagon) ইত্যাদি। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত Cell এর shape হচ্ছে ষড়ভুজাকার বা Hexagon shape। এর কয়েকটা কারণ হচ্ছে-

  • Hexagon আকৃতির cell এর coverage area সবচেয়ে বেশি থাকে।
  • Hexagon cell এর ঠিক মাঝে Antenna স্থাপন করলে সেই cell-এর প্রতিটা শীর্ষবিন্দু থেকে Antenna-এর দূরত্ব সমান থাকে।
  • পাশাপাশি অনেকগুলো hexagon cell এর মাঝে কোনো ফাঁকা জায়গা থাকে না। তাই একটা দেশে যদি অনেকগুলো hexagon আকৃতির cell গঠন করা হয় তবে তাদের মাঝে কোন ফাঁকা স্থান থাকবে না বলে খুব সহজেই continuously মোবাইল কমিউনিকেশন করা যাবে।

সেলুলার নেটওয়ার্ক কি

প্রতিটা Hexagon cell এর diameter সাধারণত 10 থেকে 20 কিলোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই ধরনের Cell কে সাধারণত Macro Cell বলে, যেটি বড় কোনো এলাকায় cellular network এর coverage দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়।

আবার ঘনবসতি পূর্ণ এলাকাতে যখন মোবাইল ব্যবহারকারীর পরিমাণ বেশি থাকে তখন প্রতিটা cell কে আরো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র cell এ ভাগ করা হয়, যাদেরকে Micro Cell বলে। এক্ষেত্রে প্রতিটা cell এর diameter হয় 1 kilometer পর্যন্ত।

এছাড়া এমন অনেক অতি ক্ষুদ্র জায়গা আছে যেমন কোনো বিল্ডিং বা টানেলের মধ্যে Cellular network তৈরি করার জন্য খুব ছোট সাইজের cell ব্যবহার করা হয়, যাকে Pico Cell বলে। এই ধরনের cell গুলোর জন্য base station এর power level অনেক কম থাকে এবং Antenna গুলো খুব অল্প পরিমাণ জায়গা coverage দিতে পারে।

যখন আমরা কোনো নির্দিষ্ট নাম্বারে ফোন করি তখন আমাদের ফোনের মাধ্যমে সেই নাম্বারের সিগন্যাল base station এর Antenna তে গিয়ে received হয়। Antenna তখন একটা নির্দিষ্ট radiowave frequency এর মাধ্যমে সেই নাম্বারের user কে খোঁজার জন্য তার cell এর coverage area তে signal transmit করে।

যদি আমাদের কাঙ্খিত user সেই base station এ না থাকে তবে base station অভ্যন্তরীণভাবে সেই নাম্বারকে মোবাইল অপারেটরের অফিসে পাঠিয়ে দেয় যাকে MTSO বা Mobile Telecommunication Switching Office বলে। একটা নির্দিষ্ট মোবাইল অপারেটরের MTSO এর সাথে পুরো দেশের সেই অপারেটরের প্রত্যেকটা Base station সংযুক্ত থাকে। কাজেই MTSO তখন পুরো দেশের প্রতিটা base station এ নাম্বারটা কে ছড়িয়ে দেয়। ফলে দেশের যেকোনো প্রান্তে যদি এই নাম্বারের ব্যবহারকারী থাকেন তবে তার সাথে আমারা মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারি।

আমাদের দেশে সেলুলার নেটওয়ার্ক কিভাবে কাজ করে

আমাদের দেশে রবি কিংবা গ্রামীণফোন, এসব মোবাইল অপারেটরের প্রতেকের জন্য MTSO রয়েছে। মূলত MTSO হচ্ছে একটা মোবাইল অপারেটরের হেডকোয়ার্টার। এতে প্রতিটা ব্যবহারকারীর ফোন নম্বর এবং তাদের ডেটাবেজ, সেইসাথে তাদের Location track করার মত ক্ষমতা থাকে। একটা দেশে বিভিন্ন MTSO-কে নিয়ন্ত্রণ করে সেই দেশের সরকারের একটা বিশেষ সংস্থা যাকে PSTN (Public Switched Telephone Network) বলা হয়। তাই একটা সম্পূর্ণ Celular Communication System গঠিত হয় PSTN, MTSO এবং Base Station নিয়ে। নিচে একটা Cellular Communication System এর ব্লক ডায়াগ্রাম দেখানো হলো-

Base station এ থাকা একটা Antenna শুধুমাত্র একটা hexagon cell এর area কে coverage করতে পারে। তাই আমাদের দেশের যেকোনো একটা জায়গা যেমন উত্তরাতে যদি কোনো মোবাইল কোম্পানি এর base station থাকে, তবে সেই base station এর Antenna শুধুমাত্র উত্তরাতে থাকা মোবাইল ফোন গুলোকে তার নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত করতে পারবে। কিন্তু সেই Antenna পাশের এলাকা যেমন বনানী এর কোনো মোবাইলকে তার নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত করতে পারবে না।

প্রতিটা base station এর antenna থেকে দুই-তিন সেকেন্ড পরপর একটা Radiowave তৈরি করে যা সম্পূর্ণ cell এর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। তখন এই cell-এর আন্ডারে থাকা সকল মোবাইল অটোমেটিক ভাবে antenna এর সাথে connected হয়ে যায়। তাই মোবাইল চালু করার পর আমরা প্রায়ই দেখি প্রথম ২-৩ সেকেন্ড মোবাইলে নেটওয়ার্ক থাকে না, কিন্তু তার পরেই মোবাইলে নেটওয়ার্ক বা data connection চলে আসে। তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম সেলুলার নেটওয়ার্ক কি।

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool

অথিতি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-

write@thecrushschool.com