চন্দ্রশেখর সীমা

চন্দ্রশেখর সীমা নিয়ে জানার আগে নক্ষত্রের কিছু বিষয় নিয়ে জানবো। একটা নক্ষত্রের জ্বালানী যখন পুরোপুরি শেষ হয়ে যায় তখন সেটি দানবীয় আকৃতির হওয়া শুরু করে এবং আস্তে আস্তে ঠান্ডা হতে থাকে। প্রায় এক মিলিয়ন বছর পর দানব নক্ষত্রটি ঠান্ডা হওয়া শুরু করে এবং এই দানবীয় নক্ষত্রের শেষ পরিণতি কি হবে সেটা নির্ভর করে তার আদি ভরের উপর। অর্থাৎ-

তাহলে বলা যায়, সব নক্ষত্র একই ভর নিয়ে জন্ম হয় না। কোনো কোনো নক্ষত্রের ভর অনেক কম থাকে এবং কোনো কোনো নক্ষত্রের ভর অনেক বেশি থাকে। কোনো নক্ষত্র জন্মের সময় কি পরিমাণ ভর থাকলে সেটি দানবীয় অবস্থায় পরিণত হবে সেটা নির্ধারণ করা হয় একটা স্কেল কিংবা সীমা দ্বারা, যাকে চন্দ্রশেখর সীমা বলে।

চন্দ্রশেখর নামক এক জ্যোতির্বিদ মাত্র 19 বছর বয়সে এই সীমাটি বের করেন। পরবর্তীতে 1983 সালে তিনি এটির জন্য নোবেল পুরস্কার পান।

চন্দ্রশেখর সীমা অনুযায়ী-

একটা নক্ষত্র শীতল হবার সময় সারা জীবন ধরে সম্প্রসারিত হয় না। প্রতিটা নক্ষত্রের একটা লিমিট বা সীমা থাকে তার বাহিরের আবরণ সম্প্রসারিত হবার জন্য। যখন নক্ষত্রটি এই সীমা অতিক্রম করে ফেলে তখন নক্ষত্রটি একটি বেলুনের মত ফেটে যায় এবং এটি তার বাইরের সমস্ত আবরণ ছুড়ে ফেলে দেয়। নক্ষত্রের বাইরের আবরণ বলতে বোঝায় বিভিন্ন ধরনের গ্যাস ও ধূলিকণা। নক্ষত্র ফেটে যাবার পর প্রচুর পরিমাণ শক্তি নির্গত হয় তাপ এবং আলো হিসেবে। এই আলোকে আমরা পৃথিবীতে বসে খালি চোখেই দেখতে পারি কিংবা টেলিস্কোপ এর মাধ্যমেও স্পষ্টভাবে দেখা সম্ভব।

নক্ষত্রের বিস্ফোরণ বা নোভা স্টার ঘটার পর নক্ষত্রতে অবশিষ্ট কিছু জিনিস থেকে যায়। এই অবশিষ্ট জিনিসগুলোকে শ্বেত বামন নক্ষত্র বা White Dwarf Star বলা হয়। শ্বেত বামন নক্ষত্রের মধ্যে কোনো হাইড্রোজেন জ্বালানি থাকে না। ফলে বিস্ফোরণের সময় নক্ষত্র যে আলো তৈরি করেছিলো সেই আলোর উজ্জ্বলতা আস্তে আস্তে কমতে থাকে এবং অনেক দিন এভাবে শ্বেত-বামন তার উজ্জ্বলতা হারাতে হারাতে আলোহীন হয়ে পড়বে। সবশেষে সেটি কালো বামন নক্ষত্র বা Black Dwarf Star-এ পরিণত হবে।

যখন কোনো নক্ষত্রের ভর 1.4M0 এর সমান বা তার ছোট হয় তখন নক্ষত্রের শেষ পরিণতি এভাবে শ্বেত বামন এবং কালো বামন হয়। তাই 1.4M0 এর নিচে ভর নিয়ে যত নক্ষত্র জন্ম নিবে তাদের সবার শেষ পরিণতি হবে শ্বেত বামন নক্ষত্র এবং কালো বামন নক্ষত্র হিসেবে।

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool

অতিথি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-

write@thecrushschool.com