উপাদান এবং সংযুতি (composition) অনুসারে পদার্থসমূহের নিম্নলিখিত শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে :
১. পদার্থ
মিশ্রণ
-
- অসমসত্ব মিশ্রণ
- সমসত্ব মিশ্রণ
২. খাঁটি বস্তু
মৌল
-
- অধাতু
- ধাতু
যৌগ
মিশ্রণ : দুই বা ততোধিক পদার্থকে যে কোনো অনুপাতে একত্রে মিশালে যদি তারা নিজ নিজ ধর্ম বজায় রেখে পাশাপাশি অবস্থান করে, তবে উক্ত সমাবেশকে মিশ্রণ বলা হয়। মিশ্রণ দুই প্রকারের হতে পারে। যেমন, অসমসত্ত্ব মিশ্রণ ও সমসত্ব মিশ্রণ।
অসমসত্ত্ব মিশ্রণ : যে মিশ্রণের বিভিন্ন অংশে তার উপাদানসমূহ বিভিন্ন অনুপাতে থাকে, তাদের পৃথক অস্তিত্ব লক্ষ করা যায় এবং যার বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন ধর্ম প্রদর্শন করে, তাকে অসমসত্ত্ব মিশ্রণ বলা হয়। যেমন, বালি ও চিনির মিশ্রণ একটি অসমসত্ত্ব মিশ্রণ। এ মিশ্রণের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে পরীক্ষা করলে দেখা যাবে, কোনো অংশে বালির পরিমাণ বেশি, অন্যত্র কম। এছাড়া খালি চোখে অথবা অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে বালি ও চিনির দানা পৃথকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব। পানি যোগ করলে চিনি দ্রবীভূত হবে, বালি হবে না। অর্থাৎ দুইটি অংশ ভিন্ন ধর্ম প্রদর্শন করে।
সমসত্ত্ব মিশ্ৰণ : যে মিশ্রণের সকল অংশে তার উপাদানসমূহ একই অনুপাতে বিদ্যমান এবং যাতে একাধিক বস্তুর অস্তিত্ব সহজে বুঝা যায় না, তাকে সমসত্ব মিশ্রণ বলা হয়। পানিতে চিনির দ্রবণ বা শরবত একটি সমসত্ত্ব মিশ্রণ। তার বিভিন্ন অংশে পানি ও চিনির অনুপাত একই। অণুবীক্ষণ যন্ত্র দ্বারাও চিনির অস্তিত্ব পৃথকভাবে বুঝা যায় না। সাগরের পানি নানা প্রকার লবণের সমসত্ব মিশ্রণ। রোদের তাপে পানি শুকিয়ে সাগর পাড়ের লবণ খামারিরা লবণ সংগ্রহ করে। সাগরের কিছু পরিমাণ পরিষ্কার পানি ফুটিয়ে তুমিও পরীক্ষা করে দেখতে পার।
খাঁটি বস্তু (Pure substance) : নির্দিষ্ট ও অপরিবর্তনীয় রাসায়নিক সংযুক্তি ও ধর্ম বিশিষ্ট পদার্থকে খাঁটি বস্তু বলা হয়। যেমন, বিশুদ্ধ সোনা, বিশুদ্ধ পানি প্রত্যেকটি খাঁটি বস্তু। খাঁটি বস্তুকে দুইটি প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা হয়; (১) মৌল বা মৌলিক পদার্থ এবং (২) যৌগ বা যৌগিক পদার্থ।
মৌল বা মৌলিক পদার্থ (Element) : যে বস্তুকে রাসায়নিকভাবে বিশ্লেষণ করে অন্য কোনো সহজ বস্তুতে রূপান্তরিত করা যায় না, তাকে মৌল বা মৌলিক পদার্থ বলা হয়। সোনা, তামা, লোহা, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন প্রত্যেকে এক একটি মৌল। এদের যে কোনো একটিকে বিশ্লেষণ করে অন্য বস্তু পাওয়া যাবে না।
মৌলিক পদার্থকে গুণের ক্রমানুসারে দুইটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায় : ধাতু এবং অধাতু।
ধাতু (Metals) : চকচকে এবং তাপ ও বিদ্যুৎ সুপরিবাহী মৌলকে ধাতু বলা হয়। যেমন- তামা, লোহা, স্বর্ণ ইত্যাদি।
অধাতু (Non-metals) : প্রধানত তাপ ও বিদ্যুৎ অপরিবাহী মৌলসমূহকে অধাতু বলে। যেমন- নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ক্লোরিন ইত্যাদি।
যৌগ বা যৌগিক পদার্থ (Compound) : যে বস্তুকে রাসায়নিকভাবে বিশ্লেষণ করলে দুই বা ততোধিক মৌলিক পদার্থ পাওয়া যায়, তাকে যৌগ বা যৌগিক পদার্থ বলা হয়। যেমন- হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন এ দুইটি মৌল নির্দিষ্ট ভর অনুপাতে পরস্পর যুক্ত হয়ে পানি উৎপন্ন করে। অতএব, পানি একটি যৌগিক পদার্থ।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- অণু ও পরমাণু (Molecules and Atoms)
- উদ্ভিদজগতের শ্রেণীবিন্যাস (Classification of Plant Kingdom)
- একই পদার্থের তিনটি ভৌত অবস্থা (Three Physical States of the same Substance)
- ওয়েবসাইটের প্রকারভেদ (Classification of Website)
- জৈব যৌগের প্রকারভেদ (Classification of Organic Chemistry)
- তরল পদার্থের বাষ্পচাপ (Vapour Pressure of Liquid)
- পদার্থ ও পদার্থের অবস্থা (Matter & State of Matter)
- পদার্থ ও পদার্থের অবস্থা (Matter & States of Matter)
- পদার্থের অবস্থা ও পরিবর্তন
- পদার্থের পরিবর্তন (Changes in Matter)
- পদার্থের বিভিন্ন অবস্থার কারণ (Causes of Different States of Matter)
- বৃষ্টিপাতের শ্রেণিবিভাগ (Classification of Rainfall)
- মৌলিক ও লব্ধ রাশি (Fundamental and Derived Quantities)
- শ্রেণীবিন্যাসের এককসমূহ (Units of Classification)
- শ্রেণীবিন্যাসের প্রকারভেদ (Classification of Taxonomy)