জৈব যৌগ শাখাটা অনেক বড় একটা শাখা। তাই এর প্রকারভেদও অনেকগুলো। শুরুতে একটা ডায়াগ্রামের মাধ্যমে দেখে ফেলি জৈব যৌগের প্রকারভেদটা-
এবার আমরা জৈব যৌগের প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তারিত জানা শুরু করি। উৎসের উপর ভিত্তি করে জৈব যৌগ দুই প্রকার-
a) অ্যালিফেটিক (Aliphatic) : গ্রীক শব্দ Aliphar মানে চর্বি। এদেরকে গঠনের উপর ভিত্তি করে দুইভাগে ভাগ করা যায়-
i) মুক্ত শিকল (Open Chain Structure) –
এরা আবার দুই প্রকার-
-
- সরল মুক্ত শিকল
- শাখায়িত মুক্ত শিকল
সরল ও শাখায়িত মিলে আবার দুটো ভাগ আছে-
সম্পৃক্ত (Saturated) : এসব যৌগে পাই বন্ধন নেই। অ্যালকেন হচ্ছে এই ধরনের জৈব যৌগ। বিভিন্ন ধরনের অ্যালকেনের মধ্যে মিথেন (CH4), ইথেন (C2H6), প্রোপেন (C3H8), বিউটেন (C4H10), পেন্টেন (C5H12) অন্যতম।
অসম্পৃক্ত (Unsaturated) : এসব যৌগে পাই বন্ধন আছে। অ্যালকিন ও অ্যালকাইন হচ্ছে এই ধরনের জৈব যৌগ। বিভিন্ন ধরনের অ্যালকিনের মধ্যে ইথিন (C2H4), প্রোপিন (C3H6), বিউটিন (C4H8), পেন্টিন (C5H10), হেক্সিন (C6H12) অন্যতম। আবার বিভিন্ন ধরনের অ্যালকাইনের মধ্যে ইথাইন (C2H2), প্রোপাইন (C3H4), বিউটাইন (C4H6), পেন্টাইন (C5H8), হেক্সাইন (C6H10) অন্যতম।
ii) বদ্ধ শিকল (Ring Structure) বা চাক্রিক বা বলয়াকার –
এরা আবার দুই প্রকার-
কার্বোসাইক্রিক যৌগ : এসব যৌগের চক্র তৈরি হয় পুরোটা কার্বনের মাধ্যমে। যেমন : সাইক্রোপ্রোপেন, সাইক্রোবিউটেন, সাইক্রোপেন্টেন ইত্যাদি।
হেটারো সাইক্রিক যৌগ : এদের চক্র তৈরি হয় পুরোটা কার্বন ছাড়াও অন্য মৌল দিয়ে। যেমন : ইথিলিন অক্সাইড, টেট্রাহাইড্রো ফিউরান, টেট্রাহাইড্রো থায়োফিন ইত্যাদি।
b) অ্যারোমেটিক (Aromatic) : গ্রীক শব্দ Aroma অর্থ সুগন্ধি। এদেরকে আবার দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে-
i) সুষম চাক্রিক : এই ধরনের অ্যারোমেটিক চাক্রিক যৌগে C এর তৈরি বদ্ধ শিকলে অন্য কোনো মৌল বা যৌগ মূলক যুক্ত থাকে না। সেইসাথে C ও H এর সংখ্যা ও অবস্থান সুষমভাবে বণ্টন করা থাকে। যেমন – বেনজিনের গাঠনিক সংকেত দেখো, এখানে বন্ধনের প্রতিটা অংশে C ও H একই অনুপাতে সাজানো রয়েছে। বেনজিন ছাড়াও টলুইন, ন্যাপথেলিন, অ্যানথ্রাসিন, বাই ফিনাইল এরাও সুষম চাক্রিক অ্যারোমেটিক যৌগ।
ii) বিষম চাক্রিক : এই ধরনের অ্যারোমেটিক চাক্রিক যৌগে C এর তৈরি বদ্ধ শিকলে অন্য কোনো মৌল বা যৌগ মূলক এসে যুক্ত হয়। যেমন – পিরিডিনের গাঠনিক সংকেত দেখো, এখানে কার্বন শিকলের মাঝে নাইট্রোজেন এসে যুক্ত হয়েছে। পিরিডিন ছাড়াও থায়োফিন, পাইরোলিডিন, ফিউরান এরাও বিষম চাক্রিক অ্যারোমেটিক যৌগ।
এবার আমরা আরেকটা ছোট্ট বিষয় নিয়ে জানবো, সেটা হচ্ছে একটা জৈব যৌগকে কয়ভাবে প্রকাশ করা যায় সেটা নিয়ে।
জৈব যৌগকে প্রকাশের পদ্ধতি
কোনো জৈব যৌগকে প্রধানত ৪টা উপায়ে প্রকাশ করা যায়। এগুলো হচ্ছে-
a) আণবিক সংকেত (Molecular Structure) অনুসারে- এক্ষেত্রে শুধুমাত্র কোনো জৈব যৌগে কি কি মৌল কি পরিমানে আছে সেটা প্রকাশ করা হয়। যেমন বিউটেনের আণবিক সংকেত C4H10
b) কম বিস্তৃত গাঠনিক সংকেত অনুসারে (Condensed Structural Formula / CSF)- এক্ষেত্রে কেবল কার্বন-কার্বন মধ্যকার বন্ধনকে দেখানো হয়। যেমন বিউটেনের ক্ষেত্রে CH3-CH2-CH2-CH3
c) বিস্তৃত গাঠনিক সংকেত অনুসারে (Expanded Structural Formula / ESF)- এক্ষেত্রে জৈব যৌগের সংকেতের প্রতিটা মৌলের মধ্যকার বন্ধনকে দেখানো হয়। যেমন বিউটেনের ক্ষেত্রে,
d) বন্ধন রেখা ব্যবহার করে (Bond Line Notation / BLN)- এক্ষেত্রে কার্বন থাকার জায়গা গুলোতে পয়েন্ট / বিন্দু দিয়ে প্রকাশ করা হয় এবং পর পর দুটো কার্বনের মধ্যে একটা রেখা দিয়ে প্রকাশ করা হয়। যেমন বিউটেনের ক্ষেত্রে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
www.facebook.com/groups/mycrushschool
অথিতি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-
write@thecrushschool.com
Related posts:
- উদ্ভিদজগতের শ্রেণীবিন্যাস (Classification of Plant Kingdom)
- এন্টেনার প্রকারভেদ (Classification of Antenna)
- ওয়েবসাইটের প্রকারভেদ (Classification of Website)
- কার্যকরী মূলক (Functional Group)
- জৈব যৌগের গাঠনিক সমাণুতা (Structural Isomerism of Organic Compounds)
- জৈব যৌগের প্রাচুর্যতা (Excess of Organic Compounds)
- জৈব যৌগের সূচনা (Principle of Organic Chemistry)
- জৈব রসায়নের ইতিহাস (History of Organic Chemistry)
- জৈবযৌগের সমাণুতা (Isomerism of Organic Compound)
- ত্রিমাত্রিক / স্টেরিও সমাণুতা (Operational / Stereo Isomerism)
- প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ (Primary & Secondary Standard Reagents)
- মৌলের প্রতীক ও সংকেত (Symbols and Signals of the Element)
- শ্রেণীবিন্যাসের এককসমূহ (Units of Classification)
- শ্রেণীবিন্যাসের প্রকারভেদ (Classification of Taxonomy)
- হাইড্রোকার্বনের আণবিক সংকেত নির্ণয় (Determination of Molecular Formula of Hydrocarbons)