উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে সুমেরু অঞ্চল থেকে আগত ল্যাব্রাডার স্রোতের শীতল ও গাঢ় সবুজ রঙের জল এবং উপসাগরীয় স্রোতের উষ্ণ ও গাঢ় নীল জল বেশ কিছু দূর পর্যন্ত পাশাপাশি কিন্তু বিপরীত দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এই দুই বিপরীতমুখী স্রোতের মাঝে একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা স্পষ্ট দেখা যায়, এই সীমারেখাকে হিমপ্রাচীর বলে। কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত আটলান্টিক মহাসাগরে হিমপ্রাচীরের সীমারেখা বহুদূর পর্যন্ত স্পষ্ট দেখা যায়। বিপরীতমুখী দুই সমুদ্রস্রোতের উষ্ণতার পার্থক্যের জন্য এই অঞ্চলে প্রায়ই ঘন কুয়াশা ও প্রবল ঝড়বৃষ্টি হয়। উষ্ণস্রোতের উপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ু উষ্ণ ও আর্দ্র হয়। পক্ষান্তরে শীতল স্রোতের উপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ু শীতল ও শুরু হয়। এ বিপরীতধর্মী দুই বায়ুর সংমিশ্রণে মিলনস্থলে প্রায়ই কুয়াশা ও বড়-তুফান লেগে থাকে।
শৈবাল সাগর (Sea Moss)
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের প্রান্ত দিয়ে বিভিন্ন স্রোত প্রবাহের ফলে পানির আবর্তের মধ্যে কোনো স্রোত থাকে না। স্রোতহীন এই পানিতে ভাসমান আগাছা ও শৈবাল সঞ্চিত হয়। একে শৈবাল সাগর বলে।
সুনামী
সমুদ্রের তলদেশে ভূমিকম্প হলে তা উপরের পানিতে বিশাল ঢেউয়ের সৃষ্টি করে। ভূকম্পন সৃষ্ট এ সমুদ্র ঢেউ সুনামী (Tsunami) নামে পরিচিত। সুনামী উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবল বেগে আছড়ে পড়ে। জাপান উপকূলে ১৭০৩ সালে সুনামীর কারণে যে জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়েছিল তাতে প্রায় ১ লক্ষ লোক মারা যায়। ২০০৪ সারে ভারত মহাসাগরে সংঘটিত সুনামীর কারণে শ্রীলংকা, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় অনেক লোক মারা যায়।
সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস
সমুদ্রের বুকে নিম্নচাপের সৃষ্টি হলে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয় এবং সমুদ্রের পানির উত্থান-পতন ঘটে। এরই নাম সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস। সূর্যের প্রবল তাপে সমুদ্রের কোথাও কোথাও বায়ুশূন্যতার সৃষ্টি হয় এবং সেখানে নিম্নচাপজনিত কারণে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের উদ্ভব হতে দেখা যায়।
সমুদ্র বায়ু প্রবল বেগে প্রবাহিত হয় কখন?
উপকূলে সকালের সূর্যতাপ স্থানীয় ভূমির তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং সেখানে একটি নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়, ফলে নিকটস্থ সমুদ্রের অপেক্ষাকৃত শীতল বায়ু স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। একে সমুদ্র বায়ু বলে। বিকেলের দিকে অর্থাৎ অপরাহ্নে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঐ নিম্নচাপ অঞ্চলে সমুদ্রের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে বায়ু প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- জোয়ার ও ভাটা (High Tide & Low Tide)
- জোয়ার-ভাটার প্রকারভেদ ও প্রভাব (Types & Effects of Tides)
- পানিচক্র (Water Cycle)
- পৃথিবীর বাহ্যিক গঠন : পর্বত (External Structure of the Earth : Mountains)
- পৃথিবীর বাহ্যিক গঠন : সমভূমি (External Structure of the Earth : Plains)
- বায়ু প্রবাহ (Airflow)
- বায়ুপ্রবাহের প্রকারভেদ : নিয়ত বায়ু (Types of Airflow : Planetary Winds)
- বায়ুপ্রবাহের প্রকারভেদ : সাময়িক বায়ু (Types of Airflow : Temporary Winds)
- বায়ুপ্রবাহের প্রকারভেদ : স্থানীয় বায়ু (Types of Airflow : Local Winds)
- বায়ুর তাপ, চাপ ও আদ্রতা (Air heat, Pressure & Humidity)
- বৃষ্টিপাতের শ্রেণিবিভাগ (Classification of Rainfall)
- ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন
- সমুদ্র তলদেশের ভূমিরূপ (Landforms of the Seafloor)
- সমুদ্রস্রোত (Sea Tide)
- সমুদ্রস্রোতের প্রভাব ও গুরুত্ব (The effect and importance of Ocean Currents)