গ্যাসের ক্রান্তি বা সন্ধি বা সংকট তাপমাত্রা
যে তাপমাত্রার উপরে ইচ্ছামত চাপ প্রয়োগ করেও কোন গ্যাসীয় পদার্থকে তরলীভূত করা যায় না, অথচ ঐ তাপমাত্রায় ও তার নিচে সে গ্যাসকে প্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগে তরলে রূপান্তরিত করা যায়, তাকে সে গ্যাসের ক্রান্তি বা সন্ধি তাপমাত্রা বা সংকট তাপমাত্রা (critical temperature) বলা হয়। গ্যাসের ক্রান্তি বা সংকট তাপমাত্রাকে Tc দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ CO2 এর ক্রান্তি তাপমাত্রা Tc = 31.1°C বা 304.2K, অর্থাৎ 31.1°C তাপমাত্রার উপরে যথেষ্ট চাপ প্রয়োগে একে তরলীভূত করা সম্ভব নয়। অথচ 31.1°C বা তার নিচের তাপমাত্রায় প্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগে CO2 গ্যাসকে তরলে রূপান্তরিত করা যায়।
গ্যাসের ক্রান্তি বা সন্ধি চাপ
কোন গ্যাসকে তার ক্রান্তি তাপমাত্রায় রেখে তরলিত করতে সর্বনিম্ন যে চাপ প্রয়োগ করতে হয়, তাকে সে গ্যাসের ক্রান্তি বা সন্ধি চাপ (critical pressure) বলা হয়। গ্যাসের ক্রান্তি চাপকে Pc দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। যেমন- 31.1°C তাপমাত্রায় CO2 গ্যাসকে তরলে পরিণত করতে হলে তার উপর অন্তত 72.9 atm চাপ প্রয়োগ করতে হয়। সুতরাং CO2 এর ক্রান্তি চাপ Pc হচ্ছে 72.9 atm চাপ।
গ্যাসের ক্রান্তি বা সন্ধি আয়তন
কোন গ্যাসের ক্রাস্তি চাপ ও ক্রান্তি তাপমাত্রায় তার 1 মোল (mole) পরিমাণ আয়তনকে তার ক্রান্তি বা সন্ধি আয়তন বলা হয়। গ্যাসের ক্রান্তি আয়তনকে V দ্বারা প্রকাশ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, CO2 এর ক্রান্তি আয়তন V = 95.65 mLmol-1। অর্থাৎ 31.1°C তাপমাত্রায় এর 72.9 atm চাপে 1 মোল (mole) অর্থাৎ 44g CO2 এর আয়তন 95.65 mL হয়।
a) হিলিয়াম (He) এর ক্রান্তি তাপমাত্রা, Tc = -267.65°C, ক্রান্তি চাপ Pc = 1.26 atm.
b) একইভাবে H2 এর ক্রান্তি তাপমাত্রা T = – 240°C, ক্রান্তি Pc = 12.8 atm এবং ক্রান্তি আয়তন Vc = 64.51 mLmol-1।
c) অনুরূপভাবে O2 এর ক্রান্তি তাপমাত্রা Tc = 118.80°C, ক্রান্তি চাপ Pc = 49.7 atm এবং ক্রান্তি আয়তন Vp = 74.42 mLmol-1।
d) H2S এর ক্রান্তি তাপমাত্রা Tc = 100.4°C, ক্রান্তি চাপ Pc = 89.05 atm
ক্রান্তি বা সন্ধি তাপমাত্রার ব্যাখ্যা
গ্যাসের গতিতত্ত্ব মতে, সন্ধি বা ক্রান্তি তাপমাত্রা হচ্ছে এমন একটি তাপমাত্রা যার উপরে অণুসমূহের স্থানান্তর গতি এত বেশি হয় যে, চাপ প্রয়োগে অণুসমূহকে পরস্পরের যত নিকটে আনা হোক না কেন, তরলে পরিণত হওয়ার জন্য তার আন্তঃআণবিক বল যথেষ্ট হয় না। যখন কোন গ্যাসীয় পদার্থের তাপমাত্রা তার ক্রান্তি তাপমাত্রার নিচে থাকে, তখন তাকে সাধারণত বাষ্প (Vapour) হিসেবে ধরা হয়। সুতরাং বাষ্পকে চাপ প্রয়োগ করেই তরলে পরিণত করা যায়।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- আদর্শ আচরণ থেকে বাস্তব গ্যাসের বিচ্যুতির কারণ
- আদর্শ গ্যাস ও বাস্তব গ্যাস
- একই পদার্থের তিনটি ভৌত অবস্থা
- গে-লুস্যাকের গ্যাসের চাপের সূত্র
- গ্যাসীয় অবস্থা
- গ্যাসের অণুর গতিবেগ হিসাবকরণ
- গ্যাসের গতিতত্ত্ব থেকে গ্যাসীয় সূত্র সমূহের উপপাদন
- গ্যাসের ঘনত্বের উপর চাপের প্রভাব
- গ্যাসের তরলীকরণ
- গ্যাসের সূত্রসমূহ
- চার্লসের সূত্র
- বয়েলের সূত্র ও চার্লসের সূত্রের সমন্বয়
- বয়েলের সূত্র, চার্লসের সূত্র ও অ্যাভোগাড্রোর সূত্রের সমন্বয়
- বাস্তব গ্যাসের জন্য অ্যামাগা’র পরীক্ষা
- বাস্তব গ্যাসের প্রেষণ গুণাঙ্ক ও আদর্শ আচরণ