কঠিন পদার্থসমূহে অণুসমূহ যতদূর সম্ভব পরস্পরের কাছাকাছি অবস্থান করে এবং নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে। এ কারণে কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন এবং নির্দিষ্ট আকৃতি বা কাঠামো থাকে। কঠিন অবস্থায় অণুসমূহ পরস্পরের কাছাকাছি স্থিরভাবে অবস্থান করায় সাধারণভাবে কঠিন অবস্থায় যে কোন পদার্থের ঘনত্ব সর্বোচ্চ।
কাঠামোর উপর ভিত্তি করে কঠিন পদার্থ দু শ্রেণীতে বিভক্ত, যেমন-
- দানাদার বা কেলাসাকার (crystalline) ও
- অদানাদার (amorphous)
দানাদার পদার্থ : দানাদার বা কেলাসাকার পদার্থের অণু বা কণাগুলো নির্দিষ্ট ক্রমে সজ্জিত হয়ে নির্দিষ্ট ত্রিমাত্রিক জ্যামিতিক আকৃতিতে থাকে। এরূপ গঠনকে কেলাস গঠন বলে। যেমন- NaCl এর কেলাস ঘনক আকৃতির, পটাস অ্যালাম কেলাস অষ্টতলক, আর্দ্র ফেরাস সালফেট মনোক্লিনিক কেশাস গঠনবিশিষ্ট হয়। অদানাদার পদার্থ : অদানাদার কঠিন পদার্থে অণু বা কণাগুলো এলোমেলোভাবে থাকে, কোন নির্দিষ্টক্রমে সজ্জিত থাকে না। যেমন- চুন, কাচ, ময়দা, প্লাস্টিক ইত্যাদি অদানাদার পদার্থ।
প্রায় সব সমসত্ত্ব কঠিন পদার্থ দানাদার বা কেলাসাকার। অর্থাৎ যে সব অণু পরমাণু বা আয়ন দ্বারা কোন কঠিন পদার্থ গঠিত, তারা সুনির্দিষ্ট ও সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান করে একটি ত্রিমাত্রিক জ্যামিতিক কাঠামো তৈরি করে। কেলাসের কাঠামো বোঝানোর জন্য “কেলাস-জালি” ও কেলাসের “একক কোষ বা সেল”– এ দুটি পদ (term) ব্যবহার করা হয়।
1) কেলাস জালি বা ল্যাটিস (Crystal Lattice)
কেলাসাকার পদার্থের কেলাস গঠনের মূল উপাদান হল পরমাণু বা আয়ন বা ক্ষেত্র বিশেষে অণুর কেন্দ্র। কেলাস গঠনে এসব উপাদানের অবস্থানকে বিন্দুর আকারে ত্রিমাত্রিকভাবে সাজানো অবস্থায় দেখানো হয়। এ সব বিন্দুর ‘নিয়মিত সজ্জার’ বারবার অবস্থান করা ত্রিমাত্রিক বিন্যাসকে কেলাস জালি বা ল্যাটিস (lattice) বলা হয়। এ ত্রিমাত্রিক বিন্যাসের বিন্দুগুলোকে কাল্পনিক অক্ষ দ্বারা যুক্ত করলে সম্পূর্ণ কেলাস জালি অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র একই রকম ব্লক (block)-এ বিভক্ত দেখায়। এ ক্ষুদ্রতম মৌলিক ব্লকগুলোকে ঐ কেলাসের একক কোষ বা সেল বলে।
2) কেলাসের একক কোষ বা সেল (Unit cell)
কোনো কেলাস বা স্ফটিকের যে ক্ষুদ্রতম অংশ, যার মধ্যে সব মৌলিক অংশ পুনরাবৃত্তি ছাড়া থাকে, তাকে একক কোষ বা সেল বলা হয়। একক কোষ হল কেলাস জালির ক্ষুদ্রতম মৌলিক ত্রিমাত্রিক একক বা ব্লক। যেহেতু একক কোষসমূহ একটির সাথে একটি যুক্ত হয়ে বড় কেলাস সৃষ্টি করে, সেহেতু একক কোষের ন্যায় এর কেলাসের আকৃতি থাকে। কেলাসের আকার একক কোষ অপেক্ষা অনেক অনেক বড় হয়।
একক কোষের বৈশিষ্ট্য
প্রত্যেকটি একক কোষের মধ্যে আটটি কোণা (corner), বারটি ধার (cdge) এবং ছয়টি পৃষ্ঠতল (face) থাকে।
কেলাসের শ্রেণীবিভাগ (Classification of Crystals)
কেলাসের ক্ষেত্রে জ্যামিতির x, y, z-অক্ষ বরাবর একক দূরত্বকে যথাক্রমে a, b, c দ্বারা এবং অক্ষগুলোর পারস্পরিক কোণাগুলোকে α, β, γ দ্বারা প্রকাশ করে প্রকৃতিতে প্রাপ্ত কেলাসগুলোকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ব্রাভেইজ (A. Brsaus) নিম্নরূপে সাতটি মূল শ্রেণীতে বিন্যস্ত করেন। এগুলো হচ্ছে-
- কিউবিক বা ঘনক
- টেট্রাগোনাল
- অর্থোরম্বিক
- মনোক্লিনিক
- ট্রাইক্লিনিক
- রম্বোহেড্রাল
- হেক্সাগোনাল
এসব একক কোষের গঠন চিত্র গুলো চলো দেখে ফেলি-
এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য, যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।
(সুরা বাকারা : ২-৩)
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট, পারসেক ও আলোক দিগন্ত (Astronomical Unit, Parsec & Light Horizon)
- ঊর্ধ্বপাতন কাকে বলে?
- একই পদার্থের তিনটি ভৌত অবস্থা (Three Physical States of the same Substance)
- কেলাস কাকে বলে?
- কেলাস পানি কি?
- তরল স্ফটিক ও প্লাজমা (Liquid Crystal and Plasma)
- পদার্থ ও পদার্থের অবস্থা (Matter & States of Matter)
- পদার্থের বিভিন্ন অবস্থার কারণ (Causes of Different States of Matter)
- পরিমাপ ও পরিমাপের একক (Unit of Measurement & Measurement)
- প্রসঙ্গ বিন্দু ও প্রসঙ্গ কাঠামো (Reference Point & Reference Frame)
- বিভিন্ন প্রকার ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া (Different types of Actions and Reactions)
- ভাইরাসের গঠন (The Structure of the Virus)
- ভৌত রাশি ও একক (Physical Quantity & Unit)
- সমরূপতা কি?
- সোদক কেলাস কাকে বলে?