বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ে জানতে হলে আগে জানতে হবে কোনো তড়িৎ শক্তির উৎস বা ব্যাটারির দু’প্রান্ত একটি পরিবাহী তার দ্বারা সংযুক্ত করা হলে, পরিবাহীর দু’প্রান্তে বিভব পার্থক্যের সৃষ্টি হয় এবং পরিবাহীর ভিতরে দৈর্ঘ্য বরাবর তড়িৎ ক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়। এর ফলে পরিবাহীর মুক্ত চার্জ অর্থাৎ ইলেকট্রন বল অনুভব করে এবং চার্জের প্রবাহ সৃষ্টি হয়। চার্জের প্রবাহই হলো ‘কারেন্ট’। অতএব-
পরিবাহীর কোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে অভিলম্বভাবে বাহ্যিক বলের প্রভাবে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ বৈদ্যুতিক চার্জ একটি নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত হয় তাকে তড়িৎ প্রবাহ বলে। এক কথায় বলা যায় একক সময়ে পরিবাহীর কোনো বিন্দু দিয়ে চার্জের প্রবাহ হলো বিদ্যুৎ প্রবাহ। একে I বা i দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
বিদ্যুৎ প্রবাহ এর রাশিমালা
মনে করি AB একটি পরিবাহী। পরিবাহীর ছায়াবৃত্ত (Shaded) অংশের ভিতর দিয়ে t সময়ে q পরিমাণ চার্জ প্রবাহিত হয়। অতএব প্রবাহমাত্রা,
i = q / t
প্রবাহের হার ধ্রুবক বা একই মানের না হলে এই সমীকরণের পরিবর্তে বিদ্যুৎ প্রবাহের রাশিমালা হবে-
i = dq / dt
এখানে dq হলো অতি ক্ষুদ্র dt সময়ে প্রবাহিত চার্জের পরিমাণ।
প্রচলিত প্রথা অনুসারে ধনাত্মক চার্জ যেদিকে প্রবাহিত হয় বিদ্যুৎ প্রবাহের দিক সেদিকে হবে। ঋণাত্মক চার্জের প্রবাহের জন্য বিদ্যুৎ প্রবাহ বিপরীত দিকে হবে।
বিদ্যুৎ প্রবাহের একক : এস. আই. (SI) পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ প্রবাহ বা প্রবামাত্রার একক হলো অ্যাম্পিয়ার (Ampere, সংক্ষেপে A)। ফরাসি বিজ্ঞানি আম্পিয়ারের সম্মানে এ নামকরণ করা হয়েছে। মনে রাখা দরকার যে,
সকল তড়িৎ রাশির একক অ্যাম্পিয়ার থেকে উদ্ভূত হয়।
এক অ্যাম্পিয়ার বিদ্যুৎ প্রবাহ : পরিবাহীর কোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে অভিলম্বভাবে 1 সেকেণ্ডে 1 কুলম্ব চার্জ প্রবাহিত হলে, ঐ পরিবাহীতে যে প্রবাহ মাত্রার সৃষ্টি হয়, তাকে এক অ্যাম্পিয়ার বলা হয়। অতএব-
1 অ্যাম্পিয়ার = 1 কুলম্ব / 1 সেকেন্ড
or, কুলম্ব = অ্যাম্পিয়ার x সেকেন্ড
অল্প পরিমান তড়িৎ প্রবাহমাত্রার একক হিসেবে মিলি অ্যাম্পিয়ার অর্থাৎ 10-3 অ্যাম্পিয়ার এবং মাইক্রো-অ্যাম্পিয়ার অর্থাৎ 10-6 অ্যাম্পিয়ার ব্যবহার করা হয়।
বিদ্যুৎ প্রবাহের দিক নির্দেশের প্রচলিত নিয়ম
কোনো পরিবাহীকে ব্যাটারীর দুই প্রান্তের সঙ্গে যুক্ত করলে পরিবাহীর ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ হয়। চল বিদ্যুৎ যখন আবিষ্কার হয় তখনও ইলেকট্রন আবিষ্কৃত হয়নি। তখন ধারণা করা হত ধনাত্মক আধান উচ্চতর বিভব হতে নিম্নতর বিভবের দিকে প্রবাহিত হয়। পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হন যে বিদ্যুৎ প্রবাহের কারণ ইলেকট্রনের প্রবাহ। আমরা জানি, ইলেকট্রন ঋণাত্মক চার্জযুক্ত এবং নিম্ন বিভব হতে উচ্চ বিভবের দিকে ইলেকট্রন প্রবাহিত হয়। সুতরাং বিদ্যুৎ প্রবাহের দিক হওয়া উচিত নিম্ন বিভব হতে উচ্চ বিভবের দিকে। কিন্তু এখনও সর্বত্র পূর্বের ধারণা, অর্থাৎ উচ্চ বিভব হতে নিম্ন বিভবের দিকে চার্জের প্রবাহকে বিদ্যুৎ প্রবাহের দিক হিসেবে ধরা হয়।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
www.facebook.com/groups/mycrushschool