Current source হচ্ছে এক ধরনের active circuit element যেটি সার্কিটের মধ্যে কারেন্ট প্রবাহিত করতে পারে। কারেন্ট সোর্স গুলোতে বিভিন্ন ধরনের রেটিং থাকে, যেমন 2A, 5A ইত্যাদি। রেটিং এর মান অনুযায়ী কারেন্ট সোর্স সার্কিটে কারেন্ট প্রবাহিত করে।
কারেন্ট সোর্সকে দুটো ভাগে ভাগ করা হয়-
- Ideal Current Source
- Practical Current Source
Ideal Current Source
এরা এমন ধরনের কারেন্ট সোর্স যাদের অভ্যন্তরীণ রোধ বা internal resistance থাকে অনেক অনেক বেশি, অর্থাৎ infinity মানের। তাই এরা যে পরিমান কারেন্ট তৈরি করে তার পুরোটাই সার্কিটে কাজে লাগানো যায়। সেজন্য এই ধরনের কারেন্ট সোর্স গুলোর efficiency = 100% হয়। প্রতিটা কারেন্ট সোর্সের সাথে একটা internal resistance কে প্যারালালভাবে লাগানো হয়। যদি কোনো resistance এর মান infinity হয় তবে সেটাকে open circuit হিসেবে প্রতিস্থাপন করতে পারবেন আপনারা।
Ideal কারেন্ট সোর্স থেকে যে পরিমান কারেন্ট বের হয় তার মান সবসময় একই থাকে। যদি কারেন্ট সোর্সের দুই প্রান্তের ভোল্টেজকে পরিবর্তনও করা হয় তারপরেও কারেন্টের মান পরিবর্তন হবে না। Ideal current source থেকে বের হওয়া constant কারেন্টকে y axis এবং এর দুই প্রান্তের ভোল্টেজকে x axis বরাবর ধরা হলে আমরা যে গ্রাফটা পাবো সেটি দেখতে ঠিক এমন দেখাবে-
তবে বাস্তবে কোনো কারেন্ট সোর্সই Ideal current source না। কারন সার্কিটে কিছু না কিছু কারেন্ট লস ঘটে।
Practical Current Source
এই ধরনের কারেন্ট সোর্স গুলোতে একটা internal resistance প্যারালালভাবে যুক্ত থাকে যার resistance এর মান ইনফিনিটি হয় না, নির্দিষ্ট একটা মানের হয়। তাই এই ধরনের কারেন্ট সোর্স গুলো যে কারেন্ট তৈরি করে তার কিছু পরিমান কারেন্ট internal resistance দিয়ে প্রবাহিত হয়। নিচে একটা Practical current source এর সার্কিট ডায়াগ্রাম দেখানো হলো-
সার্কিট ডায়াগ্রাম থেকে দেখুন, Is নামক কারেন্ট সোর্সের দুইপ্রান্তে যে ভোল্টেজ V থাকে সেই ভোল্টেজের উপর কারেন্ট সোর্সটির মান নির্ভর করে। যদি V এর মান বাড়ানো হয় তবে Is এর মান কমে যাবে, অর্থাৎ কারেন্ট সোর্স কম পরিমান কারেন্ট প্রবাহিত করবে সার্কিটে। তাই Practical current source এর দুইপ্রান্তে ভোল্টেজ যত বাড়ানো হবে, সোর্স থেকে বের হওয়া কারেন্টের মান তত কমতে থাকবে। নিচে একটা practical current source থেকে বের হওয়া কারেন্ট এবং সেই সোর্সের দুইপ্রান্তের ভোল্টেজের মধ্যকার সম্পর্ক একটা গ্রাফের মাধ্যমে দেখানো হলো-
এছাড়া কারেন্ট সোর্সকে আরো কয়েকভাবে ভাগ করা যায়-
1) স্বাধীন কারেন্ট সোর্স (Independent Current Source)
এরা আবার দুই ধরনের-
- Direct Current Source
- Alternating Current Source
2) অধীন কারেন্ট সোর্স (Dependent Current Source)
এরাও দুই ধরনের-
- Current Controlled Current Source (CCCS)
- Voltage Controlled Current Source (VVCS)
এবার চলুন এই কারেন্ট সোর্সগুলোকে নিয়ে জানি আমরা।
স্বাধীন কারেন্ট সোর্স (Independent Current Source)
এই ধরনের কারেন্ট সোর্সগুলো সার্কিটে নির্দিষ্ট পরিমান কারেন্ট প্রবাহিত করে এবং এরা সার্কিটের কোনো উপাদানের উপর নির্ভর করে না।
একটা সার্কিটে দুই ধরনের independent current source থাকতে পারে-
- DC Independent current source এবং
- AC Independent current source
DC independent কারেন্ট সোর্স থেকে সবসময় একই মানের কারেন্ট বের হয়। তাই সময়ের সাথে কারেন্টের মানের কোনো পরিবর্তন হয় না। নিচে একটা DC independent current source এর প্রতীক এবং গ্রাফ দেখানো হলো-
আবার, AC Independent কারেন্ট সোর্স থেকে সবসময় ভিন্ন ভিন্ন মানের কারেন্ট বের হয়। অর্থাৎ সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে কারেন্টের মানের পরিবর্তন হয়। নিচে এই ধরনের কারেন্ট সোর্সের প্রতীক এবং গ্রাফ দেখানো হলো-
অধীন কারেন্ট সোর্স (Dependent Current Source)
যেসব কারেন্ট সোর্স গুলো নিজের থেকে কারেন্ট তৈরি করতে পারে না, সার্কিটের অন্যান্য উপাদানের উপর নির্ভর করে, তাকে Dependent current source বলে। এই ধরনের কারেন্ট সোর্স গুলো থেকে বের হওয়া কারেন্টের মান সমসময় একই থাকে না, সময়ের সাথে সাথে কারেন্টের মান উঠানামা করতে পারে। সার্কিটে Dependent current source গুলোর প্রতীক থাকে ডায়মন্ড আকারে বা হীরক আকারের।
Dependent Current Source গুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়-
Voltage Controlled Current Source (VCCS)
এই ধরনের কারেন্ট সোর্স গুলো থেকে বের হওয়া কারেন্টের মান নির্ভর করে সার্কিটের যেকোনো দুটো টার্মিনালের মধ্যবর্তী ভোল্টেজের উপর। নিচের সার্কিটের দিকে খেয়াল করুন, এখানে একটা Dependent current source থেকে iab পরিমান কারেন্ট প্রবাহিত হচ্ছে, যার মান নির্ভর করছে সার্কিটের c-d টার্মিনালের ভোল্টেজ Vcd এর উপর। তাই এই কারেন্ট সোর্সটি হচ্ছে VCCS.
Current Controlled Current Source (CCCS)
এই কারেন্ট সোর্সগুলো থেকে বের হওয়া কারেন্ট সার্কিটের অন্য একটা ব্রাঞ্চের কারেন্টের উপর নির্ভর করে। নিচের সার্কিটে খেয়াল করুন, একটা dependent current source এর কারেন্ট iab নির্ভর করছে সার্কিটের অন্য একটা ব্রাঞ্চের কারেন্ট icd এর উপর। তাই এই কারেন্ট সোর্সটি হচ্ছে CCCS.
কারেন্ট সোর্সের কৌশল
আমরা ইতোমধ্যে কারেন্ট সোর্সকে চিনে ফেলেছি। এখন আমরা কারেন্ট সোর্স নিয়ে দুটো মজার তথ্য জানবো। চলুন সেগুলো জেনে ফেলি :
Hacks 1
যদি একই দিকে কাজ করা দুটো কারেন্ট সোর্সকে প্যারালালভাবে যুক্ত করা হয় তবে তাদের দুজনের মোট কারেন্ট লোডের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে। যেমন- I1 ও I2 কারেন্টের দুটো কারেন্ট সোর্সকে প্যারালালভাবে যুক্ত করা হলে a নামক নোডে এই দুটো কারেন্ট মিলিত হবে এবং সেখানে I1 + I2 মানের মোট কারেন্ট পাওয়া যাবে। তখন লোড দিয়ে I1 + I2 মানের কারেন্ট প্রবাহিত হবে। নিচের ছবিতে দেখুন-
এই ধরনের সার্কিটে দুটো কারেন্ট সোর্সকে এভাবে ব্যবহার না করে একটা মাত্র equivalent বা তুল্য কারেন্ট সোর্স ব্যবহার করলেও হবে, যার থেকে বের হওয়া কারেন্টের মান হবে- I1 + I2
Hacks 2
যদি বিপরীদিকে কাজ করা দুটো কারেন্ট সোর্স প্যারালালভাবে যুক্ত থাকে তবে আগের নিয়মে আর কারেন্টের মানকে পাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে এই দুটো কারেন্ট সোর্স মিলে সার্কিটে দুই দিকে দুটো কারেন্ট প্রবাহিত হবে। নিচের ছবিতে দেখো, I1 মানের কারেন্ট সোর্স যেদিকে কারেন্ট প্রবাহিত করছে, I2 মানের কারেন্ট সোর্স ভিন্ন দিকে কারেন্ট প্রবাহিত করছে।
এক্ষেত্রে নোড a এর দিকে লক্ষ করি, I1 কারেন্ট a নোড দিয়ে ঢুকছে এবং I2 কারেন্ট a নোড থেকে বের হচ্ছে। আবার যদি I পরিমান কারেন্ট a নোড থেকে বের হয়ে লোডের দিকে যায় তবে a নোডের মধ্যে KCL apply করলে পাবো-
I + I2 = I12
or, I = I1 – I2
নিচের ছবিতে দেখুন, লোড দিয়ে প্রবাহিত হওয়া কারেন্টের মান-
এখন, আমরা কষ্ট করে এই সার্কিটে দুটো কারেন্ট সোর্সকে না দেখালেও পারি। যদি I1 > I2 হয় তবে সার্কিটের তুল্য কারেন্ট সোর্স বা equivalent কারেন্ট সোর্সের মান হবে I = I1 – I2, এবং এর দিক হবে I1 বরাবর, কারন I1 এর মান I2 এর চেয়ে বড় বলে। তখন I1 ও I2 কারেন্ট যুক্ত সোর্সকে সার্কিটে ব্যবহার না করে আমরা I মান যুক্ত কারেন্ট সোর্সকে সার্কিটে ব্যবহার করবো। নিচের ছবিতে দেখুন-
আবার I2 > I1 হলে সার্কিটের তুল্য কারেন্ট সোর্সের মান হবে I = I2 – I1, সেইসাথে I এর দিক হবে I2 বরাবর, কারন I2 এর মান I1 এর চেয়ে বড়। তখন আমরা I1 ও I2 কারেন্ট সোর্সকে আলাদাভাবে সার্কিটে ব্যবহার না করে এদের equivalent কারেন্ট সোর্স I কে ব্যবহার করতে পারবো। নিচের ছবিতে দেখুন-
Hacks 3
যদি I1 ও I2 মান যুক্ত দুটো কারেন্ট সোর্স সার্কিটের মধ্যে সিরিজ কানেকশনে যুক্ত থাকে এবং তাদের থেকে বের হওয়া কারেন্টের দিক যদি একইদিকে হয় তবে সেই সার্কিটের ডায়াগ্রাম দেখাবে ঠিক এমন-
খেয়াল করুন, এখানে I1 ও I2 একই তারের উপর বা পরিবাহীর উপর বসানো, তাই আমরা এদের দুজনকে সার্কিটে আলাদাভাবে ব্যবহার না করে এদের তুল্য কারেন্ট সোর্সকে সার্কিটে ব্যবহার করতে পারি। কিন্তু এখানে একটা কথা খুব ভালো করে মনে রাখতে হবে!
যদি দুটো বা তার বেশি current source একই পরিবাহীর উপর থেকে একই দিকে কারেন্ট প্রবাহিত করে, তবে সবগুলো কারেন্ট সোর্স থেকে বের হওয়া কারেন্টের মান সমান থাকবে। তাই আমাদের এই সার্কিটে দুটো কারেন্ট সোর্স যদিও I1 ও I2 পরিমান কারেন্ট সাপ্লাই করছে, এদের direction একই দিকে এবং অবস্থান একই পরিবাহীর উপরে বলে এই দুটো কারেন্টের মান সমান। অর্থাৎ I1 = I2. যদি এই দুটো কারেন্ট সোর্সকে সরিয়ে এদের equivalent কারেন্ট সোর্সকে এই সার্কিটে বসাতাম, তবে সেই কারেন্ট সোর্স থেকে বের হওয়া equivalent কারেন্টের মান হতো- I = I1 = I2
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
www.facebook.com/groups/mycrushschool
অতিথি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-
write@thecrushschool.com
Related posts:
- অনুবাদক প্রোগ্রাম
- অর্ধপরিবাহী কাকে বলে
- এফারেন্ট, একটিভ এবং রিএকটিভ পাওয়ার
- ওহমের সূত্র (Ohm’s Law)
- কার্শফের ভোল্টেজ সূত্র
- ক্যাথোড রে টিউব
- ড্রাগ কি ও ড্রাগের উৎস
- ব্যাটারির প্যারালাল কানেকশন
- ভোল্টেজ সোর্স
- ভোল্টেজের প্যারালাল কানেকশন
- ভোল্টেজের সিরিজ কানেকশন
- মোটর ও জেনারেটরের মধ্যে পার্থক্য
- রেকটিফায়ার কি
- রোধের সমবায় ubs
- হুইটস্টোন ব্রীজ