Translation হচ্ছে RNA থেকে প্রোটিন তৈরি হবার প্রক্রিয়াটা। আমাদের জানা আছে যে RNA মাত্র ১ টা সুতা নিয়ে গঠিত। এই RNA-এর বিভিন্ন প্রকারভেদ আছে। যেমন-
mRNA, tRNA, rRNA
আমাদের এই ৩টা RNA-কে নিয়ে একটু একটু করে জানতে হবে translation এর জন্য।
প্রথমেই mRNA. mRNA হচ্ছে messenger RNA. এটা এক সুতার এবং এরও দুই মাথায় 5′ end এবং 3′ end আছে। এই RNA টা message বা বার্তা বহন করতে পারে। আর সেই বার্তাটা হচ্ছে DNA এর কোড।
আমাদের DNA অনেকগুলো A-T-C-G এর কোডের সমন্বয় নিয়ে তৈরি। এই কোড গুলোকে DNA থেকে রাইবোজোমে নিয়ে যায় mRNA. রাইবোজোম সেই mRNA-এর দেয়া কোড অনুযায়ী প্রোটিন বানায় এবং এসব প্রোটিন আমাদের শরীরের সব ধরনের বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী। যেমন আমাদের নখ হচ্ছে স্কেরোপ্রোটিন, চুল হচ্ছে কেরাটিন প্রোটিন।
এখন mRNA নিয়ে আরেকটু জানি। mRNA এর একটা সুতায় অনেকগুলো নাইট্রোজেন ক্ষারের কোড থাকে, যেমন A-T-C-U. এই কোড গুলো সে DNA-এর কাছ থেকে Transcription প্রক্রিয়ার আগেই পেয়েছিলো। তবে mRNA এর কোড পড়ার সিস্টেম হচ্ছে তিনটা তিনটা লেটার এক করে পড়া। যেমন- UAG, UGA, GAU, AUG এভাবে পড়তে হয়।
এখন প্রতিটা mRNA সুতার শুরুতে একটি বিশেষ কোড AUG থাকে। এই তিনটা নাইট্রোজেন ক্ষার কোড দিয়ে যেকোনো mRNA এর সুতা শুরু হয়। তাই AUG কে Start Coden বলে।
Start Coden এর পর আরো বিভিন্ন ধরনের কোড বসতে পারে mRNA এর সুতাতে। এখন এই কোডের কাজ হচ্ছে রাইবোজোমে গিয়ে প্রোটিন বানানো। কিন্তু তারা প্রোটিনকে সরাসরি বানাতে পারবে না। কারন প্রোটিন এর একটা একক (unit) আছে। আর সেটা তোমরা সবাই জানো- অ্যামিনো এসিড (Amino Acid).
তাই আমাদের mRNA গুলো শুধুমাত্র ছোট ছোট Amino acid বানায় যেটা প্রোটিনের মনোমার। পরে এসব Amino acid গুলো জোট বেঁধে বেঁধে প্রোটিন বানায়। আমাদের শরীরে টোটাল ২০ ধরনের Amino acid আছে। এরাই আমাদের শরীরে বৈশিষ্ট্য ঠিক করে দেয়।
mRNA এর start coden থেকে Amino acid বানানো শুরু হয়। তবে প্রতি ৩ টা কোডের জন্য ১টা Amino acid-এর অনু পাই আমরা। যেমন AUG এর জন্য ১টা, GAU এর জন্য ১টা, কিংবা UGA এর জন্য ১টা করে Amino acid পাবো আমরা।
mRNA এর যেমন Start coden আছে, ঠিক তেমনি end coden ও আছে। start coden ১টা থাকলেও End coden থাকে ৩টা, যেমন- UAG, UGA, UAA.
এবার আসি rRNA এর কথায়। এটার পুরো নাম ribosomal RNA. প্রোটিন তৈরির জন্য আমাদের আরেকটা জিনিস লাগবে, যেটার নাম হচ্ছে রাইবোজোম। rRNA এই রাইবোজোমকে তৈরি করে। তাহলে চলো একটা রাইবোজোমের ফিগার দেখে ফেলি-
রাইবোজোমের শরীরে ২টা পার্ট আছে। উপরের বড় পার্টের নাম 50s, নিচের ছোট পার্টের নাম 30s. আমাদের কোষের ভেতর রাইবোজোমের বড় এবং ছোট অংশ একই সাথে লাগানো থাকে না। আলাদাভাবে থাকে ।Translation প্রক্রিয়ায় রাইবোজোমের এই দুটো পার্টের মাঝখানে mRNA টা বসে যায়। তারপর রাইবোজোমের ৩ টা পকেট তৈরি হয়। পকেট ৩ টার নাম E site, P site এবং A site.
এবার সবশেষে tRNA এর কথায় আসি। এর মানে হচ্ছে transfer RNA. এটার কাজ হচ্ছে Amino acid এর ছোট ছোট অনুকে transfer করে রাইবোজোমে নিয়ে আসা। tRNA অন্যান্য RNA এর মতই এক সুতার, তবে সেই সুতাটা বিভিন্নভাবে পেঁচিয়ে একটা বিশেষ আকার ধারন করে থাকে। tRNA এর নিচের দিকে ৩টা কোড থাকে যাদের Anti coden বলা হয় এবং উপরের দিকে একটা Amino acid অনু বসে থাকে। Anti coden জায়গাটায় A-C-G-U এই ৪টা কোডের থেকে ৩টা করে কোড থাকে। যেমন- UAA, AGC এরকম।
এবার আমরা Translation এর একদম ভেতরে ঢুকে যাবো। তাহলে চলো শুরু করি–
প্রথমেই রাইবোজোমের ছোট পার্টকে (30s) দেখি, যেখানে P এবং A দুটো পকেট দেখা যাচ্ছে। Translation-এর শুরুতে এই পার্টের ঠিক উপরে এসে mRNA টা বসে। mRNA এর start coden AUG টা ঠিক P পকেটের উপর থাকে। P দিয়ে পেপটাইড পকেট বুঝায়। এই পকেটটা Amino acid গুলোর মাঝে পেপটাইড বন্ধন বানাতে সাহায্য করে।
এবার 30s রাইবোজোম এবং mRNA এদের উপর এসে লম্বা হয়ে দাঁড়ায় tRNA। আগেই বলেছি এটার একদিকে Amino acid অনু আরেক দিকে Anti coden অংশ থাকে। Anti coden অংশটা বসে থাকে mRNA এর কোডের ঠিক উপরে।
যখন Anti coden এর ৩টা কোড এবং mRNA এর ৩টা কোড একে অপরের বিপরীতে মিলে যায় (যেমন- anti coden এর A এর সাথে mRNA এর U কোড) তখন tRNA এর উপরে যে প্রোটিন বসে ছিলো সেটা tRNA থেকে খুলে গিয়ে রাইবোজোমে বসতে চাইবে। আর ঠিক তখনি রাইবোজোমের বড় পার্টটা (50s) এসে ছোট পার্টের (30s) উপর বসে যাবে।
mRNA এর start coden AUG-এর কাজ শেষ। এবার start coden-এর পরের কোডটা কাজ করবে। ধরা যাক পরের কোডটা UUU, এটা A পকেটের উপর বসে থাকবে। তখন আগের মতই আরেকটা নতুন tRNA এসে তার Anti coden পার্টটা সেই UUU কোডের উপর বসবে। যদি নতুন আসা tRNA এর anti coden টা UUU এর বিপরীতে মিলে যায় (যদি AAA হয়) তখন নতুন tRNA তার মাথায় থাকা Amino Acid কে ছেড়ে দিবে। ঠিক আগের ঘটনার মতই। এরপর tRNA থেকে ছাড় পাওয়া দুটো Amino Acid নিজেদের মাঝে পেপটাইড বন্ড বানিয়ে জোড়া লাগে।
এবার খেয়াল করো, প্রথম যে tRNA ছিলো সেটা তার মাথায় থাকা Amino acid আগেই চলে গেছে, তাই সেটার আর কোনো কাজ নেই। সেটা এবার E পকেট দিয়ে exit হবে বা বের হয়ে যাবে। তারপর A পকেটের উপর নতুন mRNA কোড বসবে এবং আরেকটা নতুন tRNA এসে mRNA কোডের উপর বসবে। এভাবে প্রতিটা নতুন tRNA আসার সাথে সাথে একটা করে Amino acid রাইবোজোমে চলে যায়। অনেকগুলো Amino acid মুক্ত হবার পর তারা নিজেদের মধ্যে পেপটাইড বন্ড বানিয়ে প্রোটিন বা আমাদের দেহের বৈশিষ্ট্যগুলো বানায়।
তবে একটা দুঃখের কথা হলো সব tRNA এর anti coden গুলো mRNA এর code-এর সাথে মিলে না। যখন মিলে না তখন আর Amino acid মুক্ত হয় না। tRNA এর সাথেই থেকে যায়।
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
www.facebook.com/groups/mycrushschool
অতিথি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-
write@thecrushschool.com