তড়িৎ বলরেখা

বিখ্যাত বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে তড়িৎ ক্ষেত্রের স্পষ্ট ধারণা বের জন্য তড়িৎ বলরেখার কথা বলেন। এই রেখাগুলো সম্পূর্ণ কাল্পনিক। আমাদের জানা আছে যে, তড়িৎ চার্জের চারদিকে যে জায়গা জুড়ে চার্জের প্রভাব দেখা যায় তাকে তড়িৎ ক্ষেত্র বলে। তড়িৎ ক্ষেত্রে যেকোনো জায়গায় একটি মুক্ত একক ধনাত্নক চার্জ বসালে মুক্ত চার্জটি সেই তড়িৎক্ষেত্রের দ্বারা বল অনুভব করবে এবং চার্জটি তড়িৎ ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট পথ ধরে চলতে থাকবে। কোনো তড়িৎ ক্ষেত্রে মুক্ত একক চার্জের এ চলার পথকে তড়িৎ বা বিদ্যুৎ বলরেখা বলে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এদেরকে বৈদ্যুতিক ফ্লাক্সও বলে। বলরেখাগুলোর যে কোনো বিন্দুতে অংকিত স্পর্শক ঐ বিন্দুতে কোনো একটি একক ধনাত্নক চার্জের উপর বলের দিক নির্দেশ করে, অর্থাৎ তড়িৎ ক্ষেত্রের প্রাবলোর দিক নির্দেশ করে। সুতরাং-

তড়িৎ বলরেখা হচ্ছে তড়িৎ ক্ষেত্রের মধ্যে অংকিত খোলা বক্ররেখা যার কোনো বিন্দুতে অংকিত স্পর্শক ঐ বিন্দুতে লব্ধি বলের দিক নির্দেশ করে।

এখন, বলরেখাগুলোর সাথে লম্বভাবে স্থাপিত কোনো কল্পিত তলের একক ক্ষেত্রফলের ভেতর দিয়ে যতগুলো বলরেখা অতিক্রম করে তা তড়িৎ প্রাবল্যের সমানুপাতিক।

নিচের ছবিতে দেখো, একটি ধন চার্জ ও একটি ঋণ চার্জের জন্য তৈরি হওয়া বলরেখা কিভাবে কাজ করে সেটা দেখানো হয়েছে, যেখানে ধনাত্নক চার্জ থেকে বলরেখা গুলো বের হয়, ঋণাত্নক চার্জের দিকে বলরেখা গুলো ঢুকে –

দুটি ভিন্নজাতীয় চার্জের ক্ষেত্রে চার্জয়ের মধ্যবর্তী জায়গায় বলরেখাগুলো ধন চার্জ থেকে ঋন চার্জের দিকে সরল ও বক্ররেখা বরাবর যায়। তাই এদের মাঝের জায়গায় কোনো চার্জ রাখলে সেটি কোনো তড়িৎ বল অনুভব করবে।

আবার,  দুটি সমজাতীয় চার্জের ক্ষেত্রে চার্জয়ের মধ্যবর্তী জায়গার কিছু অংশে বলরেখাগুলো এমনভাবে বেঁকে যায় যে ঐ জায়গায় কোনো বলরেখা থাকে না। তাই ঐ জায়গায় কোনো চার্জ রাখলে সেটি কোনো তড়িৎ বল অনুভব করবে না। একে নিরপেক্ষ বিন্দু (Neutral Point) বলে।

তড়িৎ বলরেখার ধর্ম (Characteristics of electric lines of force)

  • তড়িৎ বলরেখা খোলা বক্ররেখা। 
  • রেখাগুলো ধন চার্জ হতে উৎপন্ন হয়ে ঋণ চার্জে গিয়ে শেষ হয়।
  • এটি ধন চার্জগ্রস্থ পরিবাহীর তল থেকে অভিলম্বভাবে বের হয় এবং কোনো তলে বা ঋণ চার্জগ্রস্ত তলে অভিলম্বভাবে শেষ হয়।
  • দুটি বলরেখা পরস্পরকে ছেদ করে না।
  • বলরেখাগুলো পরস্পরের উপর পার্শ্ব চাপ প্রয়োগ করে।
  • এরা পরস্পরকে পাশাপাশি ভাবে বিকর্ষণ করো।
  • কোনো পরিবাহীর অভ্যন্তরে বা ভেতরে বলরেখার কোনো অস্তিত্ব নেই।
  • বললেখাগুলোর যে কোনো বিন্দুতে স্পর্শক আঁকলে এটা সেই বিন্দুতে প্রাবলোর দিক নির্দেশ করে।
  • বলরেখা গুলো স্থির চার্জের জন্য খোলা বক্ররেখা, গতিশীল চুম্বক মেরুর জন্য বদ্ধ বক্ররেখা হিসেবে কাজ করে।

পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-

www.youtube.com/crushschool

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool