শক্তি ও শক্তির বিভিন্ন রূপ

শক্তি

কোনো বস্তুর কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে। শক্তির বিভিন্ন রূপ থাকে। বস্তু সর্বমোট যতখানি কাজ করতে পারে তাই হচ্ছে বস্তুর শক্তির পরিমাপ। যেহেতু কোনো বস্তুর শক্তির পরিমাপ করা হয় তা দ্বারা সম্পন্ন কাজের পরিমাণ থেকে। সুতরাং, শক্তি ও কাজের পরিমাণ অভিন্ন। শক্তির কোনো দিক নেই। কাজেই শক্তি স্কেলার রাশি।

মাত্রা : শক্তির মাত্রা ও কাজের মাত্রা একই।

অর্থাৎ, [E] = [ML2T-2]

একক : শক্তির একক ও কাজের একক একই অর্থাৎ, জুল (J)।

শক্তির বিভিন্ন রপের মধ্যে বিদ্যুৎ হচ্ছে এক ধরণের রূপ। সাধারণত বিদ্যুৎ শক্তির হিসাব নিকাশের সময় কিলোওয়াট ঘণ্টা (kWh) এককটি ব্যবহৃত হয়। এক কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কোন যন্ত্র এক ঘণ্টা কাজ করলে যে শক্তি ব্যয় হয় তাকে এক কিলোওয়াট – ঘণ্টা বলে।

1 kWh = 1000 Wh = 1000 Js-1 x 3600 s

          = 3.6 x 106J

শক্তির বিভিন্ন রূপ

শক্তির বিভিন্ন রূপ

শক্তি আছে বলেই এ জগৎ গতিশীল। শক্তি না থাকলে জগৎ অচল হয়ে পড়বে। আলোক শক্তি আছে বলেই আমরা দেখতে পাই, শব্দ শক্তি আছে বলেই আমরা শুনতে পাই। যান্ত্রিক শক্তির বদৌলতে আমরা চলাফেরা করি। বিদ্যুৎ শক্তির সাহায্যে পাখা ঘুরছে, কলকারখানা চলছে। এ মহাবিশ্বে শক্তির বিভিন্ন রূপ বিরাজ করছে।

মোটামুটিভাবে আমরা শক্তির নয়টি রূপ পর্যবেক্ষণ করি। যথা-

যান্ত্রিক শক্তি

এই ধরণের শক্তি কোনো বস্তু তার স্থির কিংবা গতিশীল অবস্থার জন্য লাভ করে। এটি দুই ধরণের- বিভব শক্তি, গতিশক্তি।

তাপ শক্তি

তুমি যখন এক কাপ গরম কফি কিছু সময়ের জন্য রেখে দিবে, তখন দেখতে পাবে যে কফি ঠান্ডা হয়ে গেছে। এর কারণ এটি আশেপাশের পরিবেশে তাপ হারায়, যেখানকার তাপ কফির তুলনায় কম তাপমাত্রায় থাকে।

তাপ শক্তি হল শক্তির একটি রূপ যা যে কোনও বস্তুর কণাগুলির মোট গতিশক্তি থেকে তৈরি হয়। এই শক্তি অণুগুলির এলোমেলো গতির ফলে স্থানান্তরিত হয়। ফলে তারা একে অপরকে বাউন্স করে এবং শক্তির স্থানান্তর ঘটায়। তাপ উচ্চ তাপমাত্রার বস্তু থেকে (কণার বেশি গতিশক্তি) থেকে নিম্ন তাপমাত্রার বস্তুতে (কণাগুলির কম গতিশক্তি) প্রবাহিত হয়।

শব্দ শক্তি

বস্তুর কম্পনের ফলে  এই শক্তি তৈরি হয়।

আলোক শক্তি

ফোটন নামক এক ধরণের শক্তির কণা বা প্যাকেট নিয়ে এটি গঠিত।

চৌম্বক শক্তি

চুম্বক পদার্থের সাথে চৌম্বক পদার্থের যে আকর্ষণ শক্তি থাকে তাই চৌম্বক শক্তি।

বিদ্যুৎ শক্তি

রাসায়নিক শক্তি

উদ্ভিদ খাদ্য তৈরি করতে সৌরশক্তি, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং পানি ব্যবহার করে। উদ্ভিদের খাবার মানুষ এবং প্রাণীরা খেয়ে থাকে। উদ্ভিদের তৈরি খাবারগুলো আমাদের দেহে ভেঙে যায় এবং আমরা শক্তি পাই। এটি হচ্ছে রাসায়নিক শক্তি।

রাসায়নিক শক্তি হল এমন শক্তি যা রাসায়নিক যৌগের বন্ধনে জমা থাকে। একটি রাসায়নিকভাবে স্থিতিশীল যৌগের মধ্যে এর আলাদা অংশের তুলনায় কম শক্তি জমা থাকে। যখন একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হয়, তখন পরমাণুর বিন্যাসের ফলে শক্তির শোষণ বা শক্তির মুক্তি ঘটে।

নিউক্লিয় শক্তি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরের পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ হয়। ফলে যে ধ্বংস হয়েছিল তখন তার পরিণতি আজও দেখা যায়। এগুলি ছিল পারমাণবিক বোমা। আজ পর্যন্ত মানবজাতির সবচেয়ে বিপজ্জনক আবিষ্কার এগুলো।

পারমাণবিক শক্তি হল পরমাণুর নিউক্লিয়াসে থাকা শক্তি। পরমাণুতে থাকা কণিকা থেকে নিউক্লিয় শক্তির উৎপত্তি।  নিউক্লিয়ার ফিউশন বা ফিশন বিক্রিয়ার সময় এই শক্তি নির্গত হয়। এটি নিয়ন্ত্রিত হলে এই শক্তি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায়।

সৌর শক্তি

সূর্য হচ্ছে এই শক্তির প্রধান উৎস।

মহাকর্ষ শক্তি

মহাবিশ্বে একটি বস্তু আরেকটি বস্তুকে যে শক্তিবলে আকর্ষণ করে তাই মহাকর্ষ শক্তি।

আয়নীকরণ শক্তি

এই শক্তি দ্বারা পরমানু থেকে ইলেকট্রনকে সরিতে ফেলা যায়।

তেজস্ক্রিয় শক্তি

স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে কোনো পরমাণু থেকে এই ধরণের শক্তি যুক্ত বিকিরণ নির্গত হয়।

শক্তির রূপ

পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-

www.youtube.com/c/CrushSchool

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool

1 Comment

  1. Very good post. I absolutely appreciate this website. Stick with it!

Comments are closed