ব্ল্যাকহোল নিয়ে ভালোভাবে জানতে হলে এর দুটো বিষয় নিয়ে জানা দরকার। একটি ঘটনা দিগন্ত, অপরটি হকিং রেডিয়েশন।
যদি সংকট ব্যাসার্ধের সমান ব্যাসার্ধ ধরে একটা গোলককে কল্পনা করি তবে সেই গোলকের পৃষ্ঠকে ঘটনা দিগন্ত বা Event Horizon বলে।
যেহেতু ব্ল্যাকহোল থেকে কোনো আলো বের হয় না সেহেতু ব্ল্যাকহোলের কোনো বর্ণ নেই এবং এটি দেখতে কালো দেখায়। ব্ল্যাকহোল সম্পর্কে এই ধারণাটি ছিল অনেক আগের। কিন্তু বর্তমানে দেখা গেলো ব্ল্যাকহোলের ঘটনা দিগন্তের জায়গায় বিভিন্ন ধরনের রেডিয়েশন ঘটে, যেখানে ফোটন, নিউট্রিনো ইত্যাদি নিঃসরণ হয়। যেহেতু ঘটনা দিগন্ত থেকে ফোটন নিঃসরণ হয়, তাই ব্ল্যাকহোল এর চারপাশে ঘটনা দিগন্তের রেডিয়েশনের জন্য আলো দেখা যায়। তবে এই আলোর পরিমাণ খুবই সামান্য।
ঘটনা দিগন্ত থেকে বের হয়ে আসা ফোটন কণাগুলো হকিং রেডিয়েশন বলে। বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং প্রথম এই ধরনের রেডিয়েশনের বর্ণনা দেন।
হকিং রেডিয়েশন বের হবার ফলে ব্ল্যাকহোলের চারপাশে সামান্য কিছু আলো দেখা যায়। তাই এখনকার মতবাদ অনুযায়ী ব্ল্যাক হোল সম্পূর্ণ কালো না, এর মধ্যে উজ্জ্বল হকিং রেডিয়েশন আছে।
আবার খেয়াল করো, ব্ল্যাকহোলের ভর কখনো হারায় না। কেননা এর ভর অসীম। কিন্তু হকিং রেডিয়েশন আবিষ্কার হবার পর দেখা গেল ব্ল্যাকহোলের ঘটনা দিগন্ত থেকে নিউট্রিনো, ফোটন ইত্যাদি কণাগুলো হকিং রেডিয়েশন মাধ্যমে বের হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ ব্ল্যাক হোল তার ভর কিছুটা হলেও হারাচ্ছে। এভাবে চলতে চলতে একটা সময় ব্ল্যাকহোল তার সমস্ত ভর হারিয়ে ফেলবে, তখন ব্ল্যাকহোল মহাকাশ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
হকিং রেডিয়েশন আবিষ্কার হবার আগে ধারণা করা হতো ব্ল্যাকহোলের পরবর্তীতে হয়ত আরো একটা ধাপ আছে। কিন্তু হকিং রেডিয়েশন আবিষ্কার হবার পর বোঝা গেল যে একটা সময় ব্ল্যাক হোল তার সমস্ত ফোটন এবং নিউট্রিনো হারিয়ে নিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে মহাকাশ থেকে।
এখন পর্যন্ত এমন কোন টেকনোলজি আবিষ্কার হয়নি যেটি হকিং রেডিয়েশনকে শনাক্ত করতে পারবে। কাজেই স্টিফেন হকিং এর এই মতবাদটি থিউরিটিক্যাল হলোও কোনমতেই প্র্যাকটিক্যাল বা বাস্তবে প্রমাণ করা যায়নি।
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
www.facebook.com/groups/mycrushschool
অতিথি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-
write@thecrushschool.com
Related posts:
- অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট, পারসেক ও আলোক দিগন্ত (Astronomical Unit, Parsec & Light Horizon)
- আলোক সম্পর্কিত প্লাঙ্কের কোয়ান্টাম তত্ত্ব (Planck’s Quantum Theory of Light)
- কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ ও ভীনের সূত্র (Black Body Radiation & Wien’s Law)
- গে-লুস্যাকের গ্যাস আয়তন সূত্র (Gay-Lussac’s Law of Gaseous Volumes)
- চন্দ্রশেখর সীমা (Chandrasekhar Limit)
- নক্ষত্রের জন্ম (Birth of Star)
- নক্ষত্রের মৃত্যু (Death of Star)
- বার্ড ফ্লু ও সোয়াইন ফ্লু (Bird Flu & Swine flu)
- বিগ ব্যাং এর পরবর্তী মহাবিশ্ব ও সময়সীমা (Universe & Time Frame after the Big Bang)
- বিগ ব্যাং এর শেষ ভাগ (Last Portion after the Big Bang)
- বিগ ব্যাং মডেল (Big bang Model)
- বিভিন্ন প্রকার ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া (Different types of Actions and Reactions)
- মহাজাগতিক বস্তু : ছায়াপথ
- মিউটেশন কিভাবে ঘটে?
- সুপারনোভা কি? (What is Supernova?)