Organic Chemistry বা জৈবযৌগে ফ্রি রেডিকেল জিনিসটা অনেক বড় একটা স্থান দখল করে আছে। ফ্রি রেডিকেল নিয়ে জানার আগে আমরা একটা উদাহরণ নিয়ে কথা বলি।
তোমরা সবাই হাইড্রোক্লোরিক এসিড বা HCl কে চেনো। এই এসিডে একটা হাইড্রোজেন একটা ক্লোরিনের সাথে একটা মাত্র বন্ধন বা Bond দিয়ে যুক্ত হয়। তাদের বন্ধনে দুটো করে ইলেকট্রন থাকে।
আমরা এবার তাদের এই বন্ধনকে ভেঙ্গে ফেলবো। অর্থা HCl থেকে H এবং Cl কে আলাদা করে ফেলবো। তখন সেই বন্ধন থেকে হাইড্রোজেন একটা ইলেকট্রন নিজের কাছে নিয়ে যাবে, ক্লোরিনও একটা ইলেকট্রন নিজের কাছে নিয়ে যাবে।
এর ফলে তাদের দুজনের কাছেই একটা করে ইলেকট্রন থাকবে। অর্থাৎ-
কোনো যৌগের রাসায়নিক বন্ধন ভাঙ্গার সময় যদি ঐ যৌগের মৌল দুটি যার যার ইলেকট্রন তার তার কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যায় তবে সেই মৌলগুলোকে ফ্রি রেডিক্যাল বলে।
অনেকেই মনে করতে পারো, যেহেতু ফ্রি রেডিক্যাল গুলো বন্ধন থেকে ইলেকট্রন নিয়ে যায় তাহলে ফ্রি রেডিক্যালের চার্জ হবে -ve. কিন্তু এই ধারনাটা ভুল। ফ্রি রেডিক্যালের কোনো চার্জ নেই। কারন HCl গঠনের সময় যে বন্ধন বা Bond তৈরি হয় সেই বন্ধনে হাইড্রোজেন এবং ক্লোরিন দুজনেই একটা করে ইলেকট্রন দিয়ে বন্ধনটা তৈরি করে। কিন্তু ফ্রি রেডিক্যাল তৈরি হবার সময় বন্ধন থেকে হাইড্রোজেন তার দেয়া ইলেকট্রনকে নিজের কাছে ফেরত আনে, ক্লোরিনও তার দেয়া ইলেকট্রন নিজের কাছে ফেরত আনে। ফলে কারো কাছেই ইলেকট্রনের সংখ্যা বাড়েও না কমেও না, আগের মতই থাকে। তাই ফ্রি রেডিক্যালের চার্জ হচ্ছে নিউট্রাল।
চার্জ শূন্য হবার শর্তেও ফ্রি রেডিক্যালের সক্রিয়তা (বা Reactivity) অনেক বেশি। এর কারন হচ্ছে H এবং Cl দুজনের ইলেকট্রন থাকে তাদের কক্ষপথে। যখন HCl তৈরি হয় তখন H এবং Cl এর কক্ষপথ বা orbit একে অপরের উপর overlap করে তাদের ইলেকট্রন শেয়ার করে। অর্থাৎ H এবং Cl সমযোজী বন্ধন (বা co-valent bond) দ্বারা যুক্ত হয়। Overlapping Area তে H এবং Cl দুজনের ইলেকট্রনই থাকে।
যখন HCl কে ভাঙ্গা হয় তখন তাদের Break Down টা ঘটে ঠিক মাঝ বরাবর। ফলে H এবং Cl দুজনেই তাদের শেয়ার করা ইলেকট্রন নিজেদের কাছে ফিরিয়ে নেওয়ার সময় তাদের আকার আগের মত গোল বা circular থাকে না। কিছুটা Disordered বা নষ্ট হয়ে যায়। অর্থাৎ ফ্রি রেডিক্যালের shape কিছুটা disordered.
HCl এর break down হবার পর H এবং Cl এর নষ্ট হয়ে যাওয়া অংশতে ইলেকট্রনের ঘনত্ব (বা density) অনেক বেশি থাকে। এই ইলেকট্রন গুলো দ্রুত বিক্রিয়া করতে চায় যদিও তারা বহিরাগত কোনো ইলেকট্রন না। তাই ফ্রি রেডিক্যালের সক্রিয়তা বা Reactivity এত বেশি।
ফ্রি রেডিক্যালের স্থায়িত্ব এবং সক্রিয়তা
ফ্রি রেডিক্যাল তৈরি হবার পর সেগুলোর আকৃতি বা shape পরিবর্তন হয়। পরিবর্তিত বা নষ্ট হয়ে যাওয়া অংশে তাদের ইলেকট্রনের ঘনত্ব বেশি থাকে। কিন্তু ফ্রি রেডিক্যাল তৈরি হবার আগে তাদের আকৃতি একদম গোলাকার থাকে এবং সব জায়গায় ইলেকট্রন ঘনত্ব একই থাকে। নিচের ছবিতে দেখো হাইড্রোজেন পরমানুর সাধারণ অবস্থা এবং ফ্রি রেডিক্যাল অবস্থা-
ফ্রি রেডিক্যালের নষ্ট হয়ে যাওয়া অংশ বা disordered অংশতেই শুধুমাত্র ইলেকট্রনের ঘনত্ব বেশি থাকে। কিন্তু তার ভেতরে ইলেকট্রনের ঘনত্ব একদমই কম। ইলেকট্রনের ঘনত্ব কম থাকা মানে হচ্ছে +ve চার্জের পরিমান বেশি। তাহলে একটা ফ্রি রেডিক্যালের বৈশিষ্ট্যকে আমরা কার্বো ক্যাটায়নের সাথে তুলনা করতে পারি। কারন কার্বো ক্যাটায়নেও +ve চার্জের পরিমান বেশি।
তাই ফ্রি রেডিক্যালের Stability এবং Reactivity দুটোই কার্বো ক্যাটায়নের মত। মিথাইল ফ্রি রেডিক্যালের স্থায়িত্ব বা Stability সবচেয়ে কম , তারপর ১ ডিগ্রি ফ্রি রেডিক্যালের স্থায়িত্ব একটু বেশি, ২ ডিগ্রি আরেকটু বেশি এবং ৩ ডিগ্রি ফ্রি রেডিক্যালের স্থায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ ফ্রি রেডিক্যালের স্থায়িত্বের সিরিজ হচ্ছে-
3 degree > 2 degree > 1 degree > CH3
বিপরীত ভাবে ৩ ডিগ্রি ফ্রি রেডিক্যালের সক্রিয়তা বা Reactivity সবচেয়ে কম। ২ এর সক্রিয়তা কিছুটা বেশি, ১ ডিগ্রি এর সক্রিয়তা আরো বেশি এবং মিথাইল ফ্রি রেডিক্যালের সক্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ ফ্রি রেডিক্যালের সক্রিয়তার সিরিজ হচ্ছে-
CH3 > 1 degree > 2 degree > 3 degree
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- আয়নিক বন্ধন কাকে বলে
- ইলেকট্রন বিন্যাস কাকে বলে
- ইলেকট্রনাকর্ষী বিকারক
- এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টর
- কার্বো অ্যানায়ন
- কার্বো ক্যাটায়ন
- কেন্দ্রাকর্ষী বিকারক
- জৈব যৌগের গাঠনিক সমাণুতা
- জৈব যৌগের প্রাচুর্যতা
- জৈব রসায়নের ইতিহাস
- থমসন পরমাণু মডেল
- পদার্থের বিভিন্ন অবস্থার কারণ (Causes of Different States of Matter)
- পি টাইপ সেমিকন্ডাক্টর
- বোর পরমাণু মডেল
- রাদারফোর্ড পরমাণু মডেল