মৌলিক রাশি কাকে বলে এর উত্তরে জানতে হবে এ ভৌত জগতে যা কিছু পরিমাপ করা যায় তাকে আমরা রাশি বলি। যেমন, একটি টেবিলের দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা যায়, দৈর্ঘ্য একটি রাশি। তোমার দেহের ভর পরিমাপ করা যায়, ভর একটি রাশি। তুমি কতক্ষণ ধরে বইটি পড়ছো সেই সময় মাপা যায়, সময় একটি রাশি। তুমি যদি একটি বস্তু তুলতে বল প্রয়োগ কর, সে বল পরিমাপ করা যায়, সুতরাং বল একটি রাশি। এ ভৌত জগতে এরূপ বহু রাশি আছে।
মৌলিক রাশি কাকে বলে
এখন দেখা যায়, এ সকল রাশির মধ্যে অল্প কয়েকটি রাশি আছে যে গুলো পরিমাপ করতে অন্য কোনো রাশির সাহায্যের প্রয়োজন হয় না। এ রাশিগুলো মৌলিক রাশি। যেমন, টেবিলের দৈর্ঘ্য মাপতে গেলে কেবল দৈর্ঘ্য মাপলেই চলে। এ দৈর্ঘ্য মাপার জন্য অন্য কোনো রাশি মাপতে হয় না বা অন্য রাশি মাপার দরকার হয় না। সুতরাং দৈর্ঘ্য একটি মৌলিক রাশি। অপর দিকে অনেক রাশি আছে যেগুলো মাপতে হলে অন্য রাশির সাহায্য দরকার হয়।
যেমন, লোহার ঘনত্ব পরিমাপ করতে হলে এক খন্ড লোহার ভর এবং আয়তন পরিমাপ করতে হবে এবং ভরকে আয়তন দিয়ে ভাগ করে ঘনত্ব বের করতে হবে। আবার আয়তন মাপতে হলে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা মাপতে হবে অর্থাৎ, তিনবার বা তিনদিকে দৈর্ঘ্য মাপতে হবে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে কিছু কিছু রাশি আছে, যেগুলো মূল রাশি; এগুলো অন্য রাশির ওপর নির্ভর করে না। এ রাশিগুলোকে মৌলিক রাশি বলা হয়।
যে সকল রাশি স্বাধীন বা নিরপেক্ষ যেগুলো অন্য রাশির ওপর নির্ভর করে না বরং অন্যান্য রাশি এদের ওপর নির্ভর করে তাদেরকে মৌলিক রাশি বলে।
জ্ঞান বিজ্ঞানের সকল শাখা প্রশাখায় মাপ-জোখের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা এরূপ সাতটি রাশিকে মৌলিক রাশি রূপে চিহ্নিত করেছেন। এগুলো হল-
(১) দৈর্ঘ্য (২) ভর (৩) সময় (৪) তাপমাত্রা (৫) তড়িৎ প্রবাহ (৬) দীপন ক্ষমতা (৭) পদার্থের পরিমাণ।
লব্ধ রাশি
যে সকল রাশি মৌলিক রাশির ওপর নির্ভর করে বা মৌলিক রাশি থেকে লাভ করা যায় তাদেরকে লব্ধ রাশি বলে। কাজ, ত্বরণ, বল, কাজ, তাপ, বিভব ইত্যাদি রাশিগুলো মৌলিক রাশিসমূহ থেকে লাভ করা যায় বলে এগুলো লব্ধ রাশি। যেমন-
বল = ভর × ত্বরণ
= ভর x (বেগ / সময়)
= ভর x (দুরত্ব / সময়2)
সুতরাং বল একটি লব্ধ রাশি। অর্থাৎ আর অন্য সকল রাশি মৌলিক রাশিগুলো থেকে লাভ করা যায় বা এক বা একাধিক মৌলিক রাশির গুণফল বা ভাগফল থেকে প্রতিপাদন করা যায়। এদেরকে বলা হয় লদ্ধ রাশি বা যৌগিক রাশি।