মানবচক্ষু

মানবচক্ষু হচ্ছে যে বিশেষ অঙ্গের দ্বারা প্রাণীরা পরিবেশ থেকে আলোকজাত উদ্দীপনা গ্রহণ করে এবং বহির্জগতের দৃশ্য দেখতে পায়, তাকে চোখ বলে। 

মানবশরীরে পঞ্চইন্দ্রিয় এর মধ্যে চক্ষু বা চোখ হল আমাদের দর্শনেন্দ্রিয়। আমাদের চোখ দুটি মস্তিষ্কের সম্মুখভাগে অক্ষিকোটরে অবস্থিত। প্রতিটি চোখ একটি অক্ষিগোলক, দুটি অক্ষিপল্লব এবং একটি অশ্রুগ্রন্থি নিয়ে গঠিত।

মানবচক্ষুর কার্যপ্রনালী অনেকটা ছবি তোলার ক্যামেরার মত।

মানবচক্ষু এর বিভিন্ন অংশ, অবস্থান ও কাজ

১.অক্ষিগোলক

চোখের কোটরে অবস্থিত এর গোলাকার অংশকে অক্ষিগোলক বলে। একে চোখের ভেতর একটা নির্দিষ্ট সীমায় ঘুরানো যায়। 

২.স্ক্লেরা বা শ্বেতমন্ডল

অক্ষিগোলকের পিছনের দিকে অবস্থিত সবচেয়ে বাইরের তন্তুময় আবরণী। অক্ষিগোলকের পশ্চাদভাগের অন্যান্য স্তরকে রক্ষা করে। চোখের আকৃতি ঠিক রাখে।

৩.কোরয়েড

অক্ষিগোলকের পশ্চাদভাগে অবস্থিত মধ্য আবরক। এটি কালো রংঙের ঝিল্লী দ্বারা গঠিত। রেটিনাকে রক্ষা করে এবং কালো রং এর কারনে চোখে বিচ্ছুরিত আলোকের প্রতিফলন হয়না।

৪.রেটিনা

অক্ষিগোলকের পশ্চাদভাগে অবস্থিত অন্তঃআবরক। বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠনে সাহায্য করে। রেটিনায় আলো পড়লে স্নায়ু উত্তেজিত হয়।

৫.কর্ণিয়া

অক্ষিগোলকের বহিরাবরকের সম্মুখভাগে অবস্থিত। এটি শ্বেতমন্ডলের অন্যান্য অংশ অপেক্ষা অধিকতর উত্তল। প্রতিসারক মাধ্যম হিসাবে কাজ করে।

মানবচক্ষু

৬.আইরিশ

অক্ষিগোলকের সামনে লেনস এর ওপরে অবস্থিত। করনিয়ার পিছনে অস্বচ্ছ পর্দা। এটি স্থান বা লোকবিশেষে বিভিন্ন রং যেমন নীল,কালো বা গাঢ় বাদামী হয়। তারারন্ধ্রকে ছোট ও বড় হতে সাহায্য করে।

৭.পিউপিল বা তারারন্ধ্র

আইরিশের পশ্চাদভাগে অবস্থিত। এর মাধ্যমে চোখে আলোক রশ্মি প্রবেশ করে।

৮.লেন্স বা মনি

আইরিশের পশ্চাদভাগে অবস্থিত দ্বি-উত্তলাকার অংশ। আলোর প্রতিসরণ ঘটায় এবং আলোক রশ্মিকে রেটিনার ওপর কেন্দ্রীভূত করে। মাংসেপেশির সংকোচন প্রসারণের ফলে তারারন্ধ্রের আকার পরিবর্তন হয়।

৯.কনজাংটিভা বা নেত্রবর্ত্মকলা

করনিয়ার বাইরের আচ্ছাদন। 

১০.অ্যাকুয়াস হিউমার

করনিয়া এবং লেন্সের মধ্যবর্তী প্রকোষ্ঠে অবস্থিত স্বচ্ছ জলীয় পদার্থ। বিবর্ধক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

১১.ভিট্রিয়াস হিউমর

লেন্সের এবং রেটিনার মধ্যবর্তী প্রকোষ্ঠে অবস্থিত জেলী জাতীয় পদার্থ। প্রতিসারক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

১২.ব্লাইন্ড স্পট বা অন্ধবিন্দু

তারারন্ধ্রের বিপরীত দিকে রেটিনার ওপর অবস্থিত। এখানে প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না।

১৩.ইয়োলো স্পট

তারারন্ধ্রের বিপরীত দিকে রেটিনার ওপর অবস্থিত। এখানে সবচেয়ে ভাল প্রতিবিম্ব গঠিত হয়।

ক্রাশ স্কুলের Youtube চ্যানেলের জয়েন করুন-

www.youtube.com/crushschool

অথিতি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-

write@thecrushschool.com