অভ্যন্তরীণ রোধ হচ্ছে প্রতিটা তড়িৎ কোষের মধ্যবর্তী বৈশিষ্ট্য যা তড়িৎ প্রবাহের বাধা হিসেবে কাজ করে। প্রত্যেক বিদ্যুৎ শক্তির উৎস যেমন কোষ বা জেনারেটরের অভ্যন্তরীণ রোধ রয়েছে। কোষের অভ্যন্তরে বিদ্যুৎ প্রবাহ যে পরিমাণ বাধা পায় তাই কোষের অভ্যন্তরীণ রোধ।
অভ্যন্তরীণ রোধ কিসের উপর নির্ভর করে?
উৎস যে সমস্ত পদার্থ দিয়ে তৈরি তা থেকে অভ্যন্তরীণ রোধ সৃষ্টি হয়। যেমন কোষের ক্ষেত্রে এর মধ্যে ব্যবহৃত সক্রিয় রাসায়নিক বস্তুর প্রকৃতি, কোষের পাতদ্বয়ের মাঝে দূরত্ব এবং পাতদ্বয়ের আকার, কোষের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা ইত্যাদির উপর অভ্যন্তরীণ রোধ -এর মান নির্ভর করে। আবার জেনারেটরের ভেতরে ব্যবহৃত তার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ইত্যাদির রোধ এর অভ্যন্তরীণ রোধ। বহিঃবর্তনীর রোধের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ রোধ শ্রেণী-সমবায়ে সংযুক্ত হয়।
সুতরাং বর্তনীর মোট রোধ হবে-
R’ = R + r, এখানে R হল বহিঃবর্তনীর রোধ।
সাধারণত r-এর মান খুবই কম মানের হয়। বর্তনীর প্রবাহমাত্রা I হলে, আমরা পাই-
I = E / (R + r), এখানে E কোষের তড়িচ্চালক বল।
or, E = IR + Ir
= V + Ir
V এবং Ir যথাক্রমে বহিঃবর্তনীর রোধের দুই প্রান্তে বিভব পার্থক্য এবং কোষের অভ্যন্তরে r-এর জন্য বিভব পতন বা বিভবের ক্ষয় V-কে বলা হয় প্রান্তীয় বিভব পার্থক্য বা ভোল্টেজ (Terminal potential difference or voltage)।
অর্থাৎ বর্তনীতে প্রবাহ চলাকালীন কোষের প্রান্তদ্বয়ের মধ্যে বিভব পার্থক্যই V.
উপরের সমীকরণ হতে এটা স্পষ্ট যে, V < E
অভ্যন্তরীণ রোধ নিয়ে কিছু তথ্য
প্রান্তীয় ভোল্টেজ তড়িচ্চালক শক্তির চেয়ে কম হওয়ার কারণ হলো, কিছু পরিমাণ তড়িচ্চালক বল প্রয়োজন হয় কোষের অভ্যন্তরীণ রোধের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ চালনা করার জন্য। এর ফলে কোষের ভিতর বিভব পতন বা বিভবের ক্ষয় ঘটে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে কোষের দুই প্রান্তের মধ্যে Ir পরিমাণ বিভব পার্থক্য কমে যায়, অর্থাৎ Ir পরিমাণ ভোল্ট বহিঃবর্তনীতে কোনো কাজে আসে না, বরং নষ্ট হয়। এ জন্য Ir কে নষ্ট ভোল্ট (Lost volt) বলা হয়।
E = V + Ir সমীকরণ অনুসারে R ক্ষুদ্র মানের হলে প্রান্তীয় বিভব তড়িচ্চালক শক্তির তুলনায় অনেক ছোট হয়। আবার R যখন খুব বড় মানের হয় তখন প্রান্তীয় বিভব তড়িচ্চালক শক্তির প্রায় সমান হয়।
তাই এই সমীকরণে I = 0 হলে, E = V হবে।
অর্থাৎ, যখন বহিঃবর্তনীতে কোনো প্রবাহ থাকে না, কিংবা বর্তনী খোলা অবস্থায় কোষের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য ঐ কোষের তড়িচ্চালক শক্তির সমান হয়।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- ইলেকট্রনের তাড়ন বেগ
- এনট্রপি কি
- ওহমের সূত্র (Ohm’s Law)
- গতিশক্তি (Kinetic Energy)
- তড়িচ্চালক বল (Electromotive Force)
- তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র
- তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র
- তাপমাত্রা কাকে বলে
- পরিবাহিতা, আপেক্ষিক পরিবাহিতা ও অতিপরিবাহিতা
- পি টাইপ সেমিকন্ডাক্টর
- বিভব শক্তি (Potential Energy)
- ভর ও ওজনের পার্থক্য
- শক্তি ও শক্তির বিভিন্ন রূপ