জাংক ফুড কি

জাংক ফুড কি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খাদ্য গ্রহনের মাধ্যমে আমরা শরীরকে সুস্থ সবল ও বলিষ্ঠ রাখি। আমরা যা খাই তা আমাদের শরীরে শক্তি ও পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে। খাদ্যগ্রহণ এবং দেহের ওপর এর প্রতিক্রিয়া ও প্রভাবের ওপর ভিত্তি করে খাদ্যকে  দু’ভাগে ভাগ করা হয়।

সুষম খাদ্য যা প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত ও পুষ্টিকর। আরেকটি হলো জাংক ফুড যা মূলত কৃত্রিমভাবে তৈরি।  

জাংক ফুড কি

অনেক খাদ্য সুস্বাদু ও লোভনীয় হলেও দেহের জন্য তেমন কোন উপকারে আসে না বরং অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে থাকে। তাই এমন ধরনের খাদ্যদ্রব্যকে জাঙ্ক ফুড বলে অভিহিত করা হয়। এতে অতি লবণ, শর্করা, চর্বি ও নিম্নপুষ্টি উপাদান থাকে।

উদাহরণ : চিপস, চকোলেট,  বিভিন্ন জাতীয় ফাস্টফুড, ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার, কোমল পানীয় ইত্যাদি।  

এসব খাবারে দেখতে খুবই আকর্ষণীয় হয় যার কারনে প্রায় সব বয়সের মানুষদের আকৃষ্ট করে। কিন্তু এতে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক পদার্থ  ও কৃত্রিম রং ব্যবহার করা হয় যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

জাংক ফুডের ক্ষতিকর দিক

ওজন বৃদ্ধি 

এসব খাবারে অনেক চিনি এবং তেল থাকে যা কোলেস্টেরল এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। শরীরে মেদ জমে। দৈনন্দিন ব্যস্ততার কারনে আমাদের শারীরিক কসরত হয় খুব কম। তার ফলে বাড়তি মেদ আমাদের শরীরে জমে এবং স্থুলতা বাড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদন অনুসারে, বিগত ৪০ বছরে স্থূলকায় মানুষের হার প্রায় দশগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি

জাংক ফুড কি? এটা মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বেড়ে যায় টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও অন্যান্য অনেক রোগ হবার প্রবনতা। এসব খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। প্রতিনিয়ত চিনির মাত্রা ওঠানামা করার কারণে অগ্নাশয়ের কার্যকারিতা হ্রাস পায় এবং ধীরে ধীরে ইনসুলিনের নিঃসরণের পরিমাণও কমতে থাকে।

এছাড়াও  বেদনাদায়ক স্নায়ুজনিত ক্ষতি, লিভারে সমস্যা , আলঝেইমারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। Institute for Health  Matrix and Evaluation- এর এক রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশে পূর্ণবয়স্ক  মানুষের মধ্যে শতকরা প্রায় ১৭ শতাংশ এবং শিশুদের ক্ষেত্রে সাড়ে ৪ শতাংশ স্থূলকায়।

জাংক ফুড কি

শিশুর বিকাশে বাধা

ব্যস্ততার কারণে অনেক অভিভাবক বাসায় শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করতে পারেন না। এতে শিশুরা ফাস্টফুডে বেশি আসক্ত হয়। এছাড়াও লোভনীয় ও সহজলভ্য হবার কারনেও এসব আসক্তি বাড়ে। জাঙ্ক ফুডে বা ফাস্ট ফুডে আয়রনের অভাব থাকে। ফলে এ রকম খাবার মস্তিষ্কের বিকাশে কোনও সাহায্য করে না বরং সেই প্রক্রিয়াকে থমকে দেয়। মস্তিষ্কের নতুন নিউরন তৈরিতে বাধা প্রদান করে। 

ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা বৃদ্ধি

জাংক ফুড কি বলতে ফাস্ট ফুড মুলত বাসি জাতীয় খাবার। এসব খেলে ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন ত্বকের সতেজতা কমে যাওয়া। চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে মুখ শুষ্ক এবং খসখসে হয়ে পড়ে । এছাড়া অন্যান্য ত্বকের সমস্যার মধ্যে ব্রণ, এলার্জি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।

শরীরকে সুস্থ রাখতে ও শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান বজায় রাখার জন্য আমাদের জাংক ফুড পরিহার করে সুষম খাবারের প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত।  মনে রাখতে হবে জাংক ফুড যতই লোভনীয় ও সুস্বাদু হোক না এতে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হয়না। তাই এসব খাবার বর্জন করা উচিত। 

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool

অথিতি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-

write@thecrushschool.com