গতি পাঁচ প্রকারের হতে পারে-
a) চলন গতি (Translatory motion)
b) ঘূর্ণন গতি (Rotatory motion)
c) চলন-ঘূর্ণন গতি বা জটিল গতি (Transla-rotatory motion)
d) পর্যাবৃত্ত গতি (Periodic motion) এবং
e) দোলন গতি (Vibratory motion)।
চলন গতি
যদি কোনো বস্তু এমনভাবে চলতে থাকে যে তার প্রতিটি কণা একই দিকে সমান দূরত্ব অতিক্রম করে তবে তার এই গতিকে চলন গতি বলে। যেমন- একটি পাথরকে কিছু উঁচু হতে মুক্তভাবে অভিকর্ষের টানে পড়তে দিলে তা খাড়া সরলরেখায় নিচের দিকে পড়তে থাকে। সুতরাং পাথরটির গতি চলন গতি।
চলন গতি দুই প্রকার-
- সরল চলন গতি বা ঋজু গতি (Rectilinear motion) এবং
- বক্র চলন গতি (Curvilinear motion)
সরল চলন গতি : যখন কোনো বস্তু সরল পথে এমনভাবে চলতে থাকে যে তার প্রতিটি কণা একই দিকে সমপরিমাণ দূরত্ব অতিক্রম করে, তখন এই গতিকে সরল চলন গতি বলে। সরল চলন গতিবিশিষ্ট কোনো একটি বস্তুর দুটি বিন্দু যোগ করে যে রেখা পাওয়া যায়, বস্তুটির বিভিন্ন অবস্থানের জন্য তারা পরস্পর সমান্তরাল থাকবে। ধরা যাক, একটি দৃঢ় বস্তু চলন গতিতে X অবস্থান হতে Y অবস্থানে পৌঁছল। X অবস্থানে ঐ বস্তুর উপর দুটি বিন্দু A ও B। Y অবস্থানে ঐ বিন্দু দুটির অবস্থান A’ ও B´ জায়গায়। সরল চলন গতির সংজ্ঞানুসারে AA’ = BB’। আবার বস্তু দৃঢ় বলে AA’ এবং BB’ পরস্পর সমান্তরাল (অর্থাৎ AA’ || BB’)। সুতরাং, চলন গতিসম্পন্ন কোনো বস্তুর যে কোনো দুটি বিন্দু-যোগ করে যে সরলরেখা পাওয়া যাবে, বস্তুটির বিভিন্ন অবস্থানে তারা পরস্পরের সমান্তরালে অবস্থান করবে।
উপরের ছবিতে দেখো, একটা বস্তুর গতি সরল চলন গতি হলে AA’ ও BB’ সমান ও সমান্তরাল হবে। মুক্তভাবে পড়ন্ত অথবা সরল পথ বরাবর বস্তুর গতি সরল চলন গতি।
বক্র চলন গতি : চলন গতিসম্পন্ন বস্তু যদি বক্রপথে চলে, তবে বস্তুর ঐ গতিকে বক্র চলন গতি বলে। আঁকাবাকা বা বক্রপথে চলন্ত গাড়ির গতি বক্ৰ চলন গতি।
ঘূর্ণন গতি
যখন কোনো বস্তু একটি নির্দিষ্ট বিন্দু বা অক্ষের চারদিকে চক্রাকারে পরিভ্রমণ করে তখন তার গতিকে ঘূর্ণন গতি বলে। যেমন- বৈদ্যুতিক পাখার গতি, ঘড়ির কাঁটার গতি ইত্যাদি।
চলন-ঘূর্ণন গতি বা জটিল গতি
যখন কোনো বস্তুর চলন ও ঘূর্ণন গতি দুটিই থাকে, তখন তার গতিকে চলন-ঘূর্ণন গতি বলে। এই গতিকে জটিল বা মিশ্র গতিও বলে। যেমন- গরুর গাড়ির চাকার গতি, সাইকেলের চাকার গতি ইত্যাদি চলার সময় তার চাকা চলন ও ঘূর্ণন, এই দুটো গতিই প্রদর্শন করে।
পর্যাবৃত্ত গতি
যখন কোনো বস্তু একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর একই পথ পরিভ্রমণ করে বার বার একই দিকে চলতে থাকে, তখন তার গতিকে পর্যাবৃত্ত গতি বলে এবং ঐ নির্দিষ্ট সময়কে উক্ত গতির পর্যায়কাল বলে। যেমন- পৃথিবী 365 দিনে সূর্যের চারদিকে একবার প্রদক্ষিণ করে। সুতরাং সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর গতি পর্যাবৃত্ত গতি এবং এই গতির পর্যায়কাল 365 দিন। ঘড়ির কাঁটার গতি, গাড়ির সিলিন্ডারে পিস্টনের গতি ইত্যাদিও পর্যাবৃত্ত গতির উদাহরণ।
দোলন গতি
যখন কোনো বস্তু একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর বিপরীতমুখী হয় বা এদিক-ওদিক দোল দেয়, তখন তার গতিকে দোলন গতি বলে। যেমন- দেয়াল ঘড়ির দোলকটি নির্দিষ্ট সময় পর পর তার স্থিতিশীল অবস্থার ডানে ও বামে দোল দেয়। অতএব দেয়াল ঘড়ির গতি দোলন গতি। আবার আমরা যখন দোলনায় দুলতে থাকি তখন দোলনার গতিও দোলন গতি হয়।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- কৌণিক বেগ ও রৈখিক বেগের মধ্যে পার্থক্য
- গতির সমীকরণ
- গতিশক্তি (Kinetic Energy)
- জড়তা কাকে বলে
- জৈব যৌগের প্রকারভেদ
- ত্বরণ কাকে বলে
- দূরত্ব ও সরণ
- নিউটনের সূত্র
- নিক্ষিপ্ত বস্তু / প্রাস / প্রক্ষেপক (Projectile Particle)
- প্রসঙ্গ বিন্দু ও প্রসঙ্গ কাঠামো
- বলবিদ্যা
- বায়ুপ্রবাহের প্রকারভেদ : সাময়িক বায়ু
- বৃত্তাকার গতি কাকে বলে
- ভাইরাসের প্রকারভেদ
- মৌলিক বল কাকে বলে