মানচিত্র ও স্কেল

মানচিত্র ও স্কেল ছাড়া ভূগোল কল্পনা করা যায় না। ভূগোল এই বিশাল বিচিত্র পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের প্রাকৃতিক অবস্থা, জলবায়ু, কৃষি, জনসংখ্যা, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অবস্থা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের অবস্থান, জলবায়ু, প্রাকৃতিক অবস্থা ইত্যাদি তথ্যের সঙ্গে যদি মানচিত্র ব্যবহার করা না হয়, তাহলে পৃথিবী সম্পর্কে ঠিক ধারণা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। মানচিত্র ভূগোল বিষয়ের একটি অপরিহার্য অঙ্গ।

মানচিত্র ও স্কেল কি?

পৃথিবী অথবা পৃথিবীর যেকোনো অংশের প্রতিকৃতি, অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখা এবং সাংকেতিক চিহ্নসহ সুনির্দিষ্ট স্কেল অনুসারে অঙ্কন করলে তাকে মানচিত্র বলে। মানচিত্র নিয়ে জানতে হলে একইসাথে মানচিত্র ও স্কেল দুটো নিয়েই জানতে হয়। কোনো কোনো ভূগোলবিদ মানচিত্রকে নিম্নরূপে সংজ্ঞায়িত করেছেন, ‘প্রচলিত সাংকেতিক চিহ্ন, ক্ষুদ্র স্কেল ও অভিক্ষেপের সাহায্যে সমতল কাগজের ওপর অঙ্কিত সমগ্র পৃথিবী বা এর অংশবিশেষের প্রতিরূপকে মানচিত্র বলে।

মানচিত্র এর শ্রেণীবিভাগ

মানচিত্রকে (১) আকার ও স্কেল অনুসারে এবং (২) ব্যবহারিক বিশেষত্ব ও বিষয়বস্তু অনুসারে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

আকার ও স্কেল অনুসারে মানচিত্র বিভিন্ন রকম হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মৌজা মানচিত্র, ভূসংস্থানিক মানচিত্র, দেওয়াল মানচিত্র ইত্যাদি। ব্যবহারিক বিশেষত্ব ও বিষয়বস্তু অনুসারে মানচিত্রকে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়। উল্লেখযোগ্য শ্রেণীবিভাগ হচ্ছে- প্রাকৃতিক মানচিত্র, জলবায়ু মানচিত্র, রাজনৈতিক মানচিত্র, অর্থনৈতিক মানচিত্র, জনসংখ্যা মানচিত্র, যাতায়াত মানচিত্র প্রভৃতি।

মানচিত্র ও স্কেল অঙ্কনের কৌশল

মানচিত্রের ওপর ট্রেসিং পেপার রেখে একটি মানচিত্র থেকে আরেকটি মানচিত্র অনুলেখ বা ট্রেসিং করে অঙ্কন করা যায়। এটি হচ্ছে ট্রেসিং পদ্ধতিতে মানচিত্র অঙ্কন।

ট্রেসিং টেবিল ব্যবহার করেও মানচিত্র ও স্কেল অনুলেখ করে অঙ্কন করা যায়। তবে সবসময় মানচিত্র ট্রেসিং করে আঁকলে হয় না। ট্রেসিং ব্যতীত গ্রিড বা ছক পদ্ধতিতেও মানচিত্র আঁকা যায়। যে দেশের মানচিত্র আঁকতে হবে আগে থেকে সে দেশের সীমারেখা ও অন্যান্য বিবরণের সঙ্গে সুপরিচিত হতে হয়। পাক-ভারত-বাংলাদেশ এই উপমহাদেশের একটি মানচিত্র অঙ্কন করতে হলে এই মানচিত্রের ওপর একটি ট্রেসিং পেপার রেখে এর ওপর দেশগুলোর সীমান্তে নিতে হবে।

সীমারেখা বরাবর একটি ক্ষেত্র এঁকে নিয়ে অঙ্কিত এ ক্ষেত্রের ওপর উলম্ব এবং অনুভূমিক রেখা টেনে বর্গক্ষেত্রের ছক আঁকতে হবে।

মানচিত্র ও স্কেল

ছকের রেখাগুলোর ওপরে এবং পাশের সংখ্যা দ্বারা চিত্র চিহ্নিত করতে হবে। তারপর ঘরের প্রতিটি ছকের নদী, সীমারেখা, শহর ইত্যাদির অবস্থান ঠিকভাবে দেখাতে হবে। সীমারেখা কোন ঘরের কোন স্থান দিয়ে গেছে, সেসব খুব যত্ন করে লক্ষ করতে হবে।

এই পদ্ধতিতে মুক্তহস্তে পুনঃপুন আঁকার অভ্যাস করলে ট্রেসিং না করে বা কোনো মানচিত্র না দেখেও স্মৃতি থেকে এই মানচিত্র আঁকা যাবে। এভাবে দেশের যেকোনো স্থানের মানচিত্র অঙ্কন করা যায়। প্রয়োজনমতো ছক ছোট বা বড় করে মানচিত্র ছোট বা বড় করা যায়। নিচে গ্রিড পদ্ধতিতে বাংলাদেশের একটি মানচিত্র আঁকা আছে।

মানচিত্র অঙ্কনের যন্ত্রপাতি

সাধারণত মানচিত্র আঁকার জন্য যে সমস্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় তার একটি তালিকা নিচে দেওয়া হল-

  • ট্রেসিং পেপার
  • স্কেল
  • সেট স্কোয়ার
  • ট্রেসিং টেবিল
  • পেনসিল ও রবার
  • কাগজ/আর্ট পেপার

ট্রেসিং পেপার খুব পাতলা স্বচ্ছ কাগজ। এটি মানচিত্রের ওপর স্থাপন করলে এর ভেতর দিয়ে মানচিত্র দেখা যায়। ট্রেসিং টেবিলে বালবের সাহায্যে মানচিত্র অনুলেখ করা হয়। ট্রেসিং টেবিল বাক্স আকারের একটি টেবিল যার ওপরের অংশটি কাচের হয় টেবিলের ভেতরে বৈদ্যুতিক বালব থাকে। যার ওপর মানচিত্রটি স্থাপন করলে বৈদ্যুতিক আলোকে মানচিত্রটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে এ মানচিত্রের ওপর ট্রেসিং পেপার স্থাপন করে মানচিত্রটি অনুলেখ করা হয়। ছক কাটার জন্য ও পরিমাপের জন্য স্কেল ও সেট স্কোয়ার ব্যবহার করা হয়।

পুরো বিশ্বের মানচিত্র দেখতে এখানে ক্লিক করুন!

পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-

www.youtube.com/c/CrushSchool

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool