ধাতু (Metal)
যেসব পদার্থ চকচকে, তাপ ও বিদ্যুৎ সুপরিবাহী, আঘাত করলে টুনটুন শব্দ হয়, ঘাতসহ, প্রসারণশীল ও নমনীয় তাদেরকে ধাতু বলে। ধাতুর ঘনত্ব বেশি থাকে। ধাতুর পরমানু সমূহ ইলেকট্রন ত্যাগ করতে পারে যাদেরকে ক্যাটায়ন বলে।
অর্থাৎ যারা ইলেকট্রন ত্যাগ করে তারা ক্যাটায়নে পরিনত হয়।
নিচে কতগুলো ধাতুর নাম ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করা হলো-
লিথিয়াম (Li) – সবচেয়ে হালকা ধাতু
প্লাটিনাম (Pt) – সবচেয়ে ভারী এবং মূল্যবান ধাতু
টাংস্টেন (W) – সবচেয়ে বেশি গলনাংক বিশিষ্ট ধাতু, বৈদ্যুতিক বালবের ফিলামেন্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়
সোডিয়াম (Na) – পানিতে ভাসে এবং ছুরি দিয়ে কাটা যায়, সোডিয়ামকে পোড়ালে উজ্জ্বল হলুদ বর্ণের শিখা পাওয়া যায়, এটি পানির থেকেও হালকা হয়
পটাশিয়াম (K) – সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ধাতু এবং ছুরি দিয়ে কাটা এক্সায়
জিংক বা দস্তা (Zn) – সবচেয়ে তাড়াতাড়ি ক্ষয়প্রাপ্ত ধাতু
কপার বা তামা (Cu) – মানুষ সর্বপ্রথম এই ধাতুর ব্যবহার শেখে, সবচেয়ে বেশি তাপ পরিবাহক ধাতু, বিদ্যুতের তার বা wire বানানোর জন্য বেশি ব্যবহৃত হয়
মার্কারি বা পারদ (Hg) – সর্বনিন্ম গলনাংকের ধাতু, সবচেয়ে ভারী তরল পদার্থ, প্রকৃতিতে ভারী মৌল হিসেবে পরিচিত, তরল ধাতু হিসেবে পরিচিত, তাপের পরিবর্তনে এই ধাতুর আয়তনে বেশি পরিবর্তন হয় বলে থার্মোমিটারে এই ধাতু বেশি ব্যবহার করা হয়
এলুমিনিয়াম (Al) – ভূপৃষ্টে সবচেয়ে বেশি পাওয়া ধাতু
লোহা বা আয়রন (Fe) – পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ধাতু হচ্ছে লোহা, একটা দেশ কতটা উন্নত সেটা বোঝা যায় সে দেশের লোহার ব্যবহার কতখানি হয় সেটা দেখে
সিজিয়াম (Cs) – পারদের মত স্বাভাবিক তাপমাত্রায় তরল অবস্থায় থাকে, এটি সবচেয়ে বেশি তড়িৎ ঋণাত্নক মৌল
এন্টিমনি (Sb) – এই ধাতুকে আঘাত করলে কোনো শব্দ হয় না
সিলভার বা রূপা (Ag) – এই ধাতুর বিদ্যুৎ পরিবহন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি
স্বর্ণ বা সোনা (Au) – সবচেয়ে বেশি ঘাত যুক্ত ধাতু, বিশুদ্ধ সোনা ২৪ ক্যারেটের হয়
অসমিয়াম (Os) – সবচেয়ে বেশি স্ফুটনাংক বিশিষ্ট ধাতু, সবচেয়ে বেশি ঘনত্ব বিশিষ্ট পদার্থ
ইউরেনিয়াম (U) – প্রকৃতিতে সবচেয়ে বেশি ভারী মৌল এটি, তেজস্ক্রিয় গবেষণা এবং নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয় এটি
লেড বা সীসা (Pb) – সিদুর তৈরিতে ব্যবহার করা হয়
তরল ধাতু
স্বাভাবিক তাপমাত্রা ও চাপে এসব ধাতু তরল অবস্থায় থাকে। চারটা ধাতুকে তরল ধাতু বলে-
ফ্রান্সিয়াম (Fr), গ্যালিয়াম (Ga), মার্কারী (Hg) এবং সিজিয়াম (Cs)
মুদ্রা ধাতু
এদের ধাতু দিয়ে মুদ্রা বা কয়েন তৈরি করা হয়। এরা হচ্ছে তামা (Cu), রূপা (Ag) এবং সোনা (Au)
উজ্জ্বল ধাতু
ক্যালসিয়াম (Ca), ম্যাগনেসিয়াম (Mg), সোডিয়াম (Na), সিলভার (Ag), এলুমিনিয়াম (Al)
নরম ধাতু
লেড (Pb), সোডিয়াম (Na), ক্যালসিয়াম (Ca), পটাশিয়াম (K)
নিকৃষ্ট ধাতু
কপার (Cu) এবং আয়রন (Fe)
ধাতুর সক্রিয়তার ক্রম
কোন ধাতুর চেয়ে কোন ধাতু বেশি সক্রিয় সেটা বোঝানোর জন্য ধাতুর সক্রিয়তার একটা সিরিজ বা সিকুয়েন্স থাকে। নিচে ধাতুর সক্রিয়তার সিরিজটা দেখো-
পটাশিয়াম (K)
ক্যালসিয়াম (Ca)
সোডিয়াম (Na)
ম্যাগনেশিয়াম (Mg)
এলুমিনিয়াম (Al)
জিংক (Zn)
আয়রন (Fe)
টিন (Sn)
লেড (Pb)
হাইড্রোজেন (H)
কপার (Cu)
মার্কারি (Hg)
সিলভার (Ag)
প্লাটিনাম (Pt)
স্বর্ণ (Au)
এই সিরিজের মানে হচ্ছে, যদি লেড এবং মার্কারির কথা ধরি তবে লেডের অবস্থান মার্কারির উপরে হওয়ায় লেড মার্কারির চেয়ে বেশি সক্রিয়। অন্যভাবে বলা যায় মার্কারি লেডের চেয়ে বেশি নিষ্ক্রিয়।
গ্যালভানাইজিং
লোহাকে গলিত জিংকের মধ্যে ঢুবিয়ে তার উপর জিংকের প্রলেপ দেওয়ার প্রক্রিয়াকে গ্যালভানাইজিং বলে। গ্যালভানাইজিং এর উদ্দেশ্য হচ্ছে লোহার জিনিসকে মরিচা পড়ার হাত থেকে রক্ষা করা।
ইলেকট্রোপ্লেটিং
ধাতুর তৈরি জিনিসপত্রের ক্ষয় রোধের জন্য তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে একটা ধাতুর উপর অন্য একটা ধাতুর পাতলা প্রলেপ দেওয়ার পদ্ধতিকে ইলেকট্রোপ্লেটিং বলে। অন্যভাবে বলা যায় একটা সক্রিয় ধাতুর উপর অন্য একটা কম সক্রিয় ধাতুর প্রলেপ দেওয়ার প্রক্রিয়াকে ইলেকট্রোপ্লেটিং বলে। কম সক্রিয় ধাতু হিসেবে নিকেল (Ni) এবং ক্রোমিয়ামকে (Cr) ব্যবহার করা হয়।
যেমন ঘড়ির লোহার চেইনের উপর ক্রোমিয়ামের প্রলেপ দেয়া হয় এবং চামচের উপর নিকেলের প্রলেপ দেয়া হয়। ফলে ঘড়িতে এবং চামচে কোনো মরিচা ধরে না।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- অপশ্রুতি ও সম্প্রসারণ
- আয়নিক বন্ধন কাকে বলে
- কার্বো অ্যানায়ন
- কার্বো ক্যাটায়ন
- কৃৎ প্রত্যয়
- ক্যাথোড রে টিউব
- খাটি বাংলা কৃৎ প্রত্যয়
- নিষ্ক্রিয় ও সক্রিয় শোষণ বলতে কী বোঝায়?
- পদার্থ ও পদার্থের অবস্থা
- পদার্থ ও পদার্থের অবস্থা
- পদার্থের শ্রেণীবিভাগ
- পরমাণুর মূল কণিকা
- প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ
- বিভিন্ন প্রকার ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া
- রসায়ন কাকে বলে