বাংলাদেশের খনিজ সম্পদ নিয়ে জানার আগে জানতে হবে যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে খনিজ সম্পদের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। বাংলাদেশ খনিজ সম্পদ তেমন সমৃদ্ধ নয়। তবে বাংলাদেশে কয়েকটি প্রয়োজনীয় খনিজ সম্পদ আবিষ্কৃত হয়েছে। বাংলাদেশে প্রাপ্ত খনিজ সম্পদকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (১) শক্তি সম্পদ, (২) ধাতব খনিজ ও (৩) অধাতব খনিজ।
বাংলাদেশের খনিজ সম্পদ : শক্তি সম্পদ
(১) কয়লা : জয়পুরহাট জেলার জামালগঞ্জ, রংপুর জেলার পীরগঞ্জ, নওগাঁর পত্নীতলা, দিনাজপুর জেলার বড়পুকুরিয়া, সুনামগঞ্জ জেলার লালঘাট, টাকেরঘাট প্রভৃতি স্থানে উন্নতমানের বিটুমিনাস ও লিগনাইট কয়লা পাওয়া গেছে। ফরিদপুরে চান্দা বিল ও বাঘিয়া বিল, খুলনা অঞ্চলের কোলা বিল, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ প্রভৃতি স্থানে পীট কয়লা পাওয়া গেছে। ১৯৯৪ সাল থেকে বগুড়ার নন্দীগ্রাম থেকে চীন ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এবং দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের খনিজ সম্পদ হিসেবে শক্তি উৎপাদনে, স্পিরিট ও আলকাতরা তৈরির কাজে কয়লা ব্যবহৃত হয়।
(২) খনিজ তেল : সিলেট জেলার হরিপুরের প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র, রশীদপুর ও তিতাস গ্যাসক্ষেত্রে সামান্য পরিমাণ খনিজ তেল পাওয়া গেছে। এছাড়া মৌলভীবাজার জেলার বরমচালে একটি তেলক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। শক্তি উৎপাদনে ও বিভিন্ন যানবাহনের জ্বালানি হিসেবে তেল ব্যবহৃত হয়।
(৩) প্রাকৃতিক গ্যাস : লিংক
ধাতব খনিজ
তামা : রংপুর জেলার রানীপুকুর, পীরগঞ্জ এবং দিনাজপুরের মধ্যপাড়ায় তামার সন্ধান পাওয়া গেছে।
অধাতব খনিজ
(১) চুনাপাথর : টাকেরঘাট, লালঘাট, জাফলং, ভাঙারঘাট, জকিগঞ্জ, জয়পুরহাট, জামালগঞ্জ, সেন্টমার্টিন্স দ্বীপ ও সীতাকুণ্ডে চুনাপাথর পাওয়া যায়। সিমেন্ট, ইস্পাত, গ্লাস, কাগজ, রিচিং পাউডার ও গৃহনির্মাণ কাজে চুনাপাথর ব্যবহৃত হয়।
(২) চীনামাটি বা শ্বেতমৃত্তিকা : ময়মনসিংহের বিজয়পুর এবং নওগাঁ জেলার পত্নীতলায় চীনামাটি পাওয়া যায়। বিজয়পুরে আনুমানিক ৪ লক্ষ ৬৫ হাজার টন চীনামাটি সঞ্চিত আছে। বাসনপত্র, বৈদ্যুতিক ইনস্যুলেটর ও স্যানিটারি জিনিসপত্র নির্মাণ শিল্পে এটি ব্যবহৃত হয়।
(৩) সিলিকা বালি : হবিগঞ্জের নয়াপাড়া, ছাতিয়ান, শাহজীবাজার, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, চট্টগ্রামের দোহাজারী, জামালপুরের গারো পাহাড়ে ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সিলিকা বালি পাওয়া গেছে। এ সকল অঞ্চলে সঞ্চিত সিলিকা বালির পরিমাণ প্রায় ২ লক্ষ টন। প্রধানত কাচ নির্মাণে, রাসায়নিক দ্রব্য ও রং প্রস্তুতেও সিলিকা বালি ব্যবহৃত হয়।
এছাড়া বাংলাদেশের খনিজ সম্পদ হিসেবে কুতুবদিয়া ও টেকনাফে প্রচুর খনিজ বালি এবং সিলেট, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রামে নুড়িপাথর পাওয়া যায়। চট্টগ্রামের কুতুবদিয়ায় বাংলাদেশের একমাত্র গন্ধকের খনির সন্ধান পাওয়া গেছে।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-