কোনো সার্কিটের মধ্যে voltage, current এবং resistance এই তিনটা parameter হচ্ছে সবচেয়ে গুরুপ্তপূর্ণ parameter. ও’হমের সূত্র এই তিনটি parameter এর মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করে।
যখন একটি ব্যাটারীর প্রান্তদ্বয় কোনো একটি পরিবাহীর সঙ্গে সংযোগ দেয়া হয়, তখন ঐ পরিবাহীর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ চলে। যেমন একটি পানির পাম্প পাইপের ভেতর দিয়ে পানির প্রবাহ সৃষ্টি করে, তেমনি ব্যাটারী বা যে কোনো তড়িৎ উৎস পরিবাহীর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ সৃষ্টি করে। পাম্পের চাপ (pump pressure) যত বেশি হবে পাইপের ভেতর দিয়ে পানির প্রবাহও তত বেশি হবে। অনুরূপভাবে ব্যাটারীর তড়িচ্চালক শক্তি যত বেশি হবে বিদ্যুৎ প্রবাহও তত বেশি হবে। অর্থাৎ বিদ্যুৎ প্রবাহমাত্রা (I) ব্যাটারীর দু’প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক। এ বিভব পার্থক্যকে বলা হয় ভোন্টেজ, V। সুতরাং,
I ∝ V
পাইপের ভেতর দিয়ে পানির প্রবাহমাত্রা শুধুমাত্র পাম্পের চাপ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না। পাইপের দৈর্ঘ্য, ব্যাস ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। দীর্ঘ এবং সরু পাইপ পানি প্রবাহে বেশি বাধা দেয়, ফলে পাম্পের চাপ খুব থাকলেও এ ধরনের পাইপের ভেতর দিয়ে প্রবাহমাত্রা কম হবে। বৈদ্যুতিক বর্তনীতেও একই ঘটনা ঘটে। বিদ্যুৎ প্রবাহের ক্ষেত্রে এ বাধাকে বলা হয় রোধ (Resistance)। একে R দ্বারা সূচিত করা হয়। যদি বর্তনীর দু’প্রান্তে বা যে কোনো বিন্দুতে বিভব পার্থক্য V হয় এবং বর্তনীর ভেতর দিয়ে I পরিমান বিদ্যুৎ প্রবাহমাত্রা চলে, তবে-
R = V / I
বেশি বিভব পার্থক্য বা ভোল্টেজ V-এর জন্যে বর্তনীতে যদি কম বিদ্যুৎ প্রবাহমাত্রা I পাওয়া যায় তবে এর অর্থ দাঁড়ায় যে বর্তনীর রোধ বেশি। সুতরাং ভোল্টেজ একই থাকলেও রোধের তারতম্যের জন্য প্রবাহমাত্রা ভিন্নতর হবে।
বিখ্যাত জার্মান পদার্থবিদ জর্জ সায়মন ওম (G.S. Ohm) বিভিন্ন ধাতব পদার্থ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে 1826 খ্রিস্টাব্দে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে একখন্ড পরিবাহীর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহমাত্রা I এবং পরিবাহীর দু’প্রান্তে প্রযুক্ত ভোল্টেজ বা বিভব পার্থক্য V-এর অনুপাত একটি ধ্রুব রাশি। অর্থাৎ R = V / I, এটিই ও’মের সূত্র। ও’মের সূত্র নিউটনের গতি সম্বন্ধীয় সূত্রাবলির ন্যায় মৌলিক (fundamental) নয়। তড়িৎ বর্তনীতে পরিবাহী পদার্থ কি রকম আচরণ করে এটি তারই একটি উক্তি বা বিবৃতি মাত্র।
সূত্রের বিবৃতি
যদি কোনো পরিবাহীর physical condition (যেমন length, area, temperature, material) এর পরিবর্তন না হয় তবে সেই পরিবাহীর দুই প্রান্তের voltage difference হচ্ছে পরিবাহী দিয়ে প্রবাহিত হওয়া কারেন্টের সমানুপাতিক। অন্যভাবে বলা যায়-
নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে যে বিদ্যুৎ প্রবাহ চলে তা ঐ পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক।
ধরা যাক একটা conductor এর A এবং B এই দুটো প্রান্ত দিয়ে V পরিমান ভোল্টেজ সাপ্লাই দেয়া হলো, যেখানে A টার্মিনাল higher potential এবং B টার্মিনাল lower potential যুক্ত। A এবং B প্রান্তের বিভব যথাক্রমে VA এবং VB. A টার্মিনাল থেকে B টার্মিনালের দিকে I পরিমান কারেন্ট প্রবাহিত হচ্ছে।
ওমের সূত্র অনুযায়ী,
I ∝ (VA – VB) ∝ V
or, I ∝ GV
এখানে G সমানুপাতিক ধ্রুবক। যে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ চলে G-কে ঐ পরিবাহীর পরিবাহিতা (conductance) বলা হয়। সকল বস্তুর জন্য G একই না। পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য একই থাকলে G-এর মানের ভিন্নতার জন্য প্রবাহমাত্রা ভিন্নতর হবে। দুটি পরিবাহীর মধ্যে এর মান যার বেশি, একই বিভব পার্থক্যের জন্য ঐ পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা বেশি হবে।
G-এর বিপরীত রাশিকে বলা হয় রোধ (resistance)। অর্থাৎ,
G = 1 / R
তাহলে,
I = GV = (1/R) V = V / R
অথবা, V = IR
এখানে R হচ্ছে একটা সমানুপাতিক ধ্রুবক। একে Resistance বলে। এর একক হচ্ছে Ohm (Ω). কোনো সার্কিটে কারেন্টকে বাঁধা দেওয়ার ধর্মকে বলা হয় রোধ বা Resistance. খেয়াল করো এখানে I এর মান V এর উপর নির্ভরশীল। ভোল্টেজ বাড়ালে-কমালে পরিবাহী দিয়ে প্রবাহিত কারেন্টের মান বাড়ে কমে। তাই কারেন্ট (I) এখানে পরাধীন (dependent) রাশি কিন্তু ভোল্টেজ স্বাধীন (Independent) রাশি।
V = IR সমীকরণ হতে বলা যায় যে, কোনো বর্তনীতে বিদ্যুৎ প্রবাহমাত্রা দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে-
- বর্তনীর মোট রোধ এবং
- বর্তনীর দু’প্রান্তে মোট বিভব পার্থক্য বা তড়িচ্চালক বল।
ও’হমের সূত্রের গ্রাফ
এবার আমরা ও’হমের সূত্রের গ্রাফ দেখবো। যদি কারেন্টকে y axis এবং ভোল্টেজকে x axis হিসেবে ধরা হয় তবে কারেন্ট ও ভোল্টেজের মধ্যে একটা সরলরৈখিক বা linear সম্পর্ক দেখা যায়।
তাহলে ও’হমের সূত্রানুসারে কারেন্টের মান-
I = (1/R) V
কারেন্টের এই equation কে সরলরেখার সমীকরণ বা y = mx এর সাথে মেলানো যায় যেখানে y কে I হিসেবে, m কে 1/R হিসেবে এবং x কে V হিসেবে ধরা যায়।
ও’হমের সূত্র থেকে voltage, current এবং resistance এর মানকে মনে রাখার জন্য একটা ত্রিভুজকে কাজে লাগানো যায় যেটা তিন ভাগে বিভক্ত। উপরের ভাগে voltage এবং নিচের দুটো ভাগে current এবং resistance থাকবে।
তাহলে, এই ত্রিভুজ অনুসারে-
V = IR
I = V/R
R = V/I
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- ইলেকট্রনের তাড়ন বেগ
- কোষের অভ্যন্তরীণ রোধ
- তড়িচ্চালক বল (Electromotive Force)
- তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র
- তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্র
- তাপগতিবিদ্যার শূন্যতম সূত্র
- থার্মোমিটার কি
- নব্য প্রস্তর যুগ
- নিউটনের তৃতীয় সূত্র
- পদার্থবিজ্ঞানে ক্ষমতা
- পরিবাহিতা, আপেক্ষিক পরিবাহিতা ও অতিপরিবাহিতা
- প্রাচীন প্রস্তর যুগ
- বিভব শক্তি (Potential Energy)
- শক্তি ও শক্তির বিভিন্ন রূপ
- সরলদোলকের সূত্র সমূহ