জীবদেহে কিংবা উদ্ভিদদেহে প্রতিটা কোষ একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে চায়। যদি একটা কোষের সাথে আরেকটা কোষের যোগাযোগ না থাকে তবে অনেক ধরনের সমস্যা হয়। যেমন আমাদের শরীরে যদি একটা কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে সেটার খবর অন্য কোষগুলোকে জানিয়ে দিতে হয়, তা না হলে সমস্যা। একটা কোষ থেকে আরেকটা কোষে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান এবং পানি যাতায়াত করে। এগুলো যাতায়াতের মাধ্যমে কোষগুলোর মধ্যে একটা যোগাযোগ সম্পর্ক গড়ে উঠে। কোষ থেকে কোষের মধ্যে এই যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বলা হয় Cellular Communication, যাকে নিয়ন্ত্রণ করে এক ধরনের কোষীয় কঙ্কাল যার নামপ্লাসমোডেসমাটা।
জীবদেহের কোষগুলোর চারপাশে কোনো কোষ প্রাচীর থাকে না। ফলে একটা কোষ খুব সহজেই আরেকটা কোষের কাছাকাছি আসতে পারে। রক্তনালী বা blood vessel দিয়ে কোষগুলো একে অপরের সাথে কানেক্ট করা থাকে। কিন্তু Plant cell বা উদ্ভিদ কোষের চারপাশে কোষ প্রাচীর থাকে বলে কোষগুলো একটু দূরে দূরে থাকে। উদ্ভিদের রক্ত থাকে না, তাই রক্তনালী থাকার প্রশ্নই আসে না। সেজন্য উদ্ভিদের কোষগুলো রক্তনালী দিয়ে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে না। রক্তনালীর বদলে উদ্ভিদকোষদের মাঝে নল বা চ্যানেল থাকে। এই নল বা চ্যানেল দিয়ে প্রতিটা উদ্ভিদকোষ একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এই নল বা চ্যানেলকে (প্লাজমোডেসমাটা) Plasmodesmata বলে।
উদ্ভিদের দুটো কোষের মাঝে তৈরি হয় Plasmodesmata চ্যানেল। কোষের সাইটোপ্লাজমের দিয়ে তৈরি হয় এটি। তাই একে সাইটোপ্লাজমীয় চ্যানেল (বা cytoplasmic linkage) বলা হয়। Plasmodesmata দিয়ে দুটো কোষের মাঝে mRNA, Protein কিংবা বড় বড় রাসায়নিক অনুও যেমন গ্লুকোজ চলাচল করে। Plasmodesmata-র আরেক নাম হচ্ছে cytoplasmic bridge.
এবার একটা ভয়ংকর কথা বলি। দুটো উদ্ভিদ কোষ একে অপরের সাথে 10^3 থেকে 10^5 সংখ্যক Plasmodesmata দ্বারা যুক্ত থাকে। তাহলে বুঝতে পারছো একটা কোষ থেকে অনেকগুলো Plasmodesmata বের হয়! এটি অনেক চিকন একটা পথ। প্রতিটা কোষ অনেকগুলো Plasmodesmata-র সাহায্যে একে অপরের সাথে যুক্ত হয়ে একটা সমাজ গড়ে তোলে। যখন কোনো কোষে কোনো জীবানু আক্রমণ করে তখন সেই জীবানুকে ধ্বংস করার জন্য Plasmodesmata দিয়ে অন্যান্য কোষ থেকে এনজাইম আসে।
প্লাসমোডেসমাটা চ্যানেলটি দিয়ে দুটো কোষের সাইটোপ্লাজম যুক্ত করা থাকে, কিন্তু কোষপ্রাচীর বা কোষঝিল্লি কোনোটাই যুক্ত করা থাকে না।
প্লাসমোডেসমাটা এর একটা খারাপ দিক হচ্ছে একটা কোষ থেকে অন্য কোষে জীবানু সহজেই ঢুকে যেতে পারে Plasmodesmata চ্যানেল দিয়ে।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
www.facebook.com/groups/mycrushschool
Related posts:
- এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম
- কোষ কী
- কোষ প্রাচীর কাকে বলে
- কোষের অভ্যন্তরীণ রোধ
- ক্রোমোজোম কাকে বলে
- গলজি বস্তু
- জীব কোষের উপাদান : নিউক্লিয়াস
- ডিএনএ ট্রান্সলেশন
- প্রোটিন কি
- ফার্মাকোডাইনামিক্স ও ফার্মাকোকাইনেটিক্স
- বিভিন্ন প্রকার ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া
- মিউটেশন কি
- রাইবোজোম কি
- রেস্ট্রিকশন এনজাইম কাকে বলে
- শ্বসনতন্ত্রের গ্যাসীয় পরিবহণ