তড়িৎ ক্ষেত্রের দুটি বিন্দুর মধ্যে তড়িৎ বিভবের ব্যবধানকে বিভব পার্থক্য বা বিভব বৈষম্য বলে।
অন্যভাবে বলা যায়,
তড়িৎ ক্ষেত্রের এক বিন্দু থেকে অপর বিন্দুতে একটি একক ধনাত্নক চার্জকে সরাতে যে পরিমাণ কাজ করতে হয় তাকে ঐ দুই বিন্দুর মধ্যকার বিভব পার্থক্য বলে।
তড়িৎ ক্ষেত্রের একটি বিন্দু হতে অপর একটি বিন্দুতে একক ধনাত্নক চার্জকে আনতে যে পরিমাণ কাজ করা হয় তা হচ্ছে ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্যের পরিমাপ। কাজেই দুটি বিন্দুর বিভব যথাক্রমে VA ও VB হলে ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য ও সম্পাদিত কাজের মধ্যে সম্পর্ক হলো
VB – VA = WAB / q0
or, ΔV = WAB / q0
বিভব পার্থক্যকে ΔV কিংবা অনেক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র V দিয়েও প্রকাশ করা হয়। এর একক হচ্ছে ভোল্ট। এক বস্তু হতে অন্য বস্তুতে চার্জ প্রবাহিত হলে বুঝতে হবে যে, বস্তু দুটির মধ্যে বিভব পার্থক্য বা অসম বিভব রয়েছে। আর চার্জ যদি প্রবাহিত না হয় তবে বুঝতে হবে বস্তু দুটির বিভব সম-বিভব বা বস্তু দুটিতে একই পরিমাণ বিভব আছে।
ইলেকট্রন ভোল্ট (Electron volt)
পারমাণবিক এবং নিউক্লীয় পদার্থবিদ্যায় কাজ বা শক্তির একক হিসেবে জুল ও ইলেকট্রন ভোল্ট বেশি ব্যবহৃত হয়। তড়িৎ ক্ষেত্রের দুটি বিন্দুর বিভব পার্থক্য যদি 1 V হয় এবং একটি ইলেকট্রন এক বিন্দু থেকে অপর বিন্দুতে গতিশীল হতে যে গতিশক্তি অর্জন করে তাকে 1 ইলেকট্রন ভোল্ট বা সংক্ষপে 1 eV বলে। তাই বলা যায়-
একটি বিন্দু থেকে 1V বিভব পার্থক্যের অপর একটি বিন্দুতে একটি মুক্ত ইলেকট্রনকে নিতে যে কাজ করতে হয় তাকে 1 ইলেকট্রন ভোল্ট (1eV) বলে।
1 eV = একটি ইলেকট্রনের চার্জ × 1 ভোল্ট
= 1.6 x 10-19 C x 1 V
= 1.6 x 10-19 C × (1J / 1C)
= 1.6 × 10-19 J
eV এককটি খুবই ক্ষুদ্র একক। তাই পদার্থবিদরা এটিকে ব্যবহার না করে MeV (Mega electron Volt), BeV (Beta electron Volt) বা GeV (Gega electron Volt) একক ব্যবহার করেন। যেখানে-
1 MeV = 106 eV
1 BeV = 109 eV
1 GeV = 1012 eV
পৃথিবীর বিভব
কোনো বস্তুর বিভব পরিমাপের সময় পৃথিবীর বিভব শূন্য ধরে এর সাপেক্ষে ঐ বস্তুর বিভব তুলনা করা হয়। পৃথিবী একটি বিরাট তড়িৎ পরিবাহী বস্তু। কোনো ঋণচার্জে চার্জিত বস্তুকে পরিবাহী দ্বারা পৃথিবীর সাথে যুক্ত করলে বস্তু থেকে ইলেকট্রন পৃথিবী বা মাটিতে প্রবাহিত হয়ে বস্তুটি চার্জহীন হয়ে যায়। আবার ধনচার্জে চার্জিত বস্তুকে পৃথিবীর সাথে সংযুক্ত করলে পৃথিবী হতে ইলেকট্রন বস্তুতে প্রবাহিত হয়ে বস্তুটিকে চার্জহীন করে ফেলে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বস্তু থেকে পৃথিবী চার্জ নেয় কিংবা বিভিন্ন বস্তুতে চার্জ দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পৃথিবী একটি বিরাট পরিবাহী বলে এর চার্জের কোনো পরিবর্তন হয় না। ফলে বিভবেরও কোনো পরিবর্তন হয় না। তাই পৃথিবীর বিভবকে চার্জহীন বস্তুর মত শূন্য বিভব ধরা হয়।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- ইলেকট্রনের তাড়ন বেগ
- কোষের অভ্যন্তরীণ রোধ
- কৌণিক বেগ ও রৈখিক বেগের মধ্যে পার্থক্য
- তড়িচ্চালক বল (Electromotive Force)
- তড়িৎ আবেশ
- তড়িৎ ক্ষেত্রের প্রাবল্য
- তড়িৎ প্রাবল্য ও তড়িৎ বিভবের মধ্যে সম্পর্ক
- তড়িৎ বিভব
- ধারক ও ধারকত্ব
- বিদ্যুৎ প্রবাহ
- বিভব শক্তি (Potential Energy)
- ব্যাপন ও নিঃসরণ এর পার্থক্য
- ভর ও ওজনের পার্থক্য
- সমবিভব তল
- সমান্তরাল পাত ধারক