নিউক্লিয়াসকে একটা কোষের প্রাণ বলা যায়। এই নিউক্লিয়াসের গঠনের উপর ভিত্তি করে আমাদের কোষ দুই ধরনের।
- Eukariyotic Cell বা প্রকৃতকোষ, যেখানে Eu শব্দটার মানে হচ্ছে প্রকৃত বা সত্য,
- Prokaryotic Cell বা আদিকোষ, যেখানে Pro শব্দটার অর্থ হচ্ছে আদি বা প্রাচীন।
একটা নিউক্লিয়াসের কয়েকটা মেইন জিনিস থাকে যেগুলো হচ্ছে-
Nuclear Envelope (নিউক্লিয়ার মেমব্রেন), Nuclear Pore (নিউক্লিয়ার রন্ধ্র), Nucleoplasm (নিউক্লিওপ্লাজম), Nucleolus (নিউক্লিওলাস), Chromatin Fiber (ক্রোমাটিন সুতা) এগুলো।
যেসব নিউক্লিয়াসে উপরের সবগুলো উপাদান থাকবে সেসব নিউক্লিয়াস হচ্ছে পূর্নাঙ্গ, আসল বা প্রকৃত নিউক্লিয়াস (Eukaryotic Nucleus). প্রকৃতকোষে এই ধরনের নিউক্লিয়াস দেখা যায়।
বিপরীতভাবে যেসব নিউক্লিয়াসে এগুলোর কোনো একটা উপাদান যদি না থাকে তবে সেই নিউক্লিয়াসটা আদি নিউক্লিয়াস (Prokaryotic Nucleus).
আদিকোষে নিউক্লিয়াসের সবগুলো অংশ থাকে না। যেমন নিউক্লিওলাস এবং নিউক্লিয়ার মেমব্রেন নেই আদিকোষে। নিউক্লিয়ার মেমব্রেন থাকে না বলে নিউক্লিয়ার রন্ধ্রও (বা Nuclear Pore) থাকে না। আবার নিউক্লিওপ্লাজমকে ঘিরে রাখে নিউক্লিয়ার মেমব্রেন। কিন্তু মেমব্রেন যেহেতু নেই, তাই নিউক্লিওপ্লাজমের অস্তিত্বও থাকে না এই নিউক্লিয়াসে। নিউক্লিয়াস হিসেবে শুধুমাত্র DNA এবং ক্রোমাটিনের সুতা থাকে আদিকোষে, যেগুলো সাইটোপ্লাজমের মধ্যে একটা জায়গা নিয়ে থাকে।
এরকম অস্তিত্বহীন নিউক্লিয়াসকে নিউক্লিওয়েড (Nucleoid) বলে। অর্থাৎ আদিকোষে নিউক্লিওয়েড থাকে।
প্রোক্যারিয়ট এবং ইউক্যারিয়ট এর মধ্যে পার্থক্য-
১. কোষীয় বৈশিষ্ট্য : প্রোক্যারিয়ট (প্রাককেন্দ্রিক) সাধারণত এককোষী এবং সরল, ইউক্যারিয়ট (সুকেন্দ্রিক) এককোষী থেকে জটিল প্রকৃতির হয়।
২. নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিয়ার মেমব্রেন : প্রোক্যারিয়টে নেই কিন্তু ইউক্যারিয়টে আছে।
৩. রাইবোসোম : প্রোক্যারিয়টে এরা ক্ষুদ্র, মুক্ত, এক ধরনের রাইবোসোম- 70S দেখা যায়, ইউক্যারিয়টে এরা বড়, মুক্ত এবং আবরণীতে যুক্ত, দুই টাইপের রাইবোসোম- 70S ও 80S দেখা যায়।
৪. সাইটোস্কেলেটন, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, মাইটোকন্ড্রিয়ন, ক্লোরোপ্লাস্ট : প্রোক্যারিয়টে এগুলো থাকে না, ইউক্যারিয়টে থাকে।
৫. কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া : প্রোক্যারিয়টে অ্যামাইটোসিস, ইউক্যারিয়টে মাইটোসিস ও মিয়োসিস পদ্ধতিতে কোষ বিভাজন ঘটে।
৬. DNA : প্রোক্যারিয়টে DNA সাধারণত বৃত্তাকার ও প্রান্তহীন, একটি ক্রোমোসোমে অবস্থিত। এতে প্রোটিনযুক্ত নেই। ইউক্যারিয়টে DNA সাধারণত রেখাকার (Linear) ও প্রান্তবিশিষ্ট, একাধিক ক্রোমোসোমে অবস্থিত। এতে প্রোটিনযুক্ত আছে।
৭. অপেরন (Operon) : একটি গাঠনিক জিনের সাথে চালক জিন (Operator) ও উদ্দীপক জিন (Promoter) সম্মিলিতভাবে কাজ করে। এ তিন প্রকার জিনকে একসাথে অপেরন বলে। প্রোক্যারিয়টে এটি আছে কিন্তু ইউক্যারিয়টে এটি নেই।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম (Endroplasmic Reticulum – ER)
- কোষ কী? (What is Cell?)
- কোষের অভ্যন্তরীণ রোধ (Internal Resistance of a Cell)
- জীব কোষের উপাদান : কোষ প্রাচীর
- জীব কোষের উপাদান : গলজি বডি
- জীব কোষের উপাদান : নিউক্লিয়াস (Nucleus)
- জীব কোষের উপাদান : রাইবোসোম
- জীবজগতের আধুনিক শ্রেণীবিন্যাস (The Modern Taxonomy of the Living World)
- ডিএনএ থেকে ক্রোমোজোম (From DNA to Chromosome)
- পরমাণুর গঠন (Structure of Atom)
- বিভিন্ন প্রকার ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া (Different types of Actions and Reactions)
- মাইটোসিস কোষ বিভাজন (Mitosis Cell Division)
- মৌলিক বল ও তাদের প্রকারভেদ (Basic Forces & their Types)
- রাদারফোর্ড পরমাণু মডেল (Rutherford Atomic Model)
- শর্করা – Carbohydrate