কোনো conductor বা সার্কিটে electron কিংবা current চলার পথে যে বাধা পায় তাকে Resistance (রোধ) বলে। অন্যভাবে বলা যায়-
পরিবাহীর যে ধর্মের জন্য এর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ চলাচল করলে পরিবাহী বাধা প্রদান করে তাকে রোধ বলে। একে মূলত বা R দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
পৃথিবীতে 100% রোধ যুক্ত কোনো কিছু পাওয়া যায় না। একটা বস্তুতে দুটো কারনে রোধ পাওয়া যায়-
- পারমাণবিক আধান (Atomic charge)
- আণবিক কম্পন (Molecular vibration)
কোনো পরিবাহী বা conductor যদি কপারের তৈরি হয় তবে সেই কপারের মেটারিয়ালের ভেতরে Cu2+ ion হিসেবে থাকে। অর্থাৎ Cu এর তৈরি পরিবাহীর সমস্থ জায়গায় Cu2+ ion থাকে।
যখন একটা কপার তার দিয়ে ইলেকট্রন ঢোকে তখন ইলেকট্রন -ve charge হবার ফলে সেটি Cu2+ আয়ন বা +ve আয়ন দ্বারা আকর্ষিত হয়। ফলে ইলেকট্রন smoothly চলতে পারে না। কপার তারের দুই প্রান্তে যদি emf দেয়া হয় তবে কপার তার দিয়ে আরো বেশি পরিমান ইলেকট্রন প্রবাহিত হবে এবং প্রতিটা ইলেকট্রন Cu2+ এর সাথে মিলিত হয়ে বাধাপ্রাপ্ত হবে। অর্থাৎ Cu2+ আয়ন এবং ইলেকট্রনের আকর্ষণের ফলে কপার তারের মধ্যে Resistance তৈরি হয়। এই ধরনের resistance এর কারণ হচ্ছে Cu atom এর Atomic charge বা Cu2+ ion.
আবার কক্ষতাপমাত্রার মান T হলে পরিবাহীর প্রতিটা atom এর মধ্যে একটা গতিশক্তি তৈরি হয় যার মান-
Ek = (3/2) KT
এখানে K এর হচ্ছে 1.38 x 10-23. তাই T পরিমান তাপমাত্রার জন্য প্রতিটা বস্তুর atom এর মধ্যে কম্পন (vibration) শুরু হয়। তাই কপারের তৈরি কোনো পরিবাহী দিয়ে যখন কারেন্ট প্রবাহিত হয় তখন কক্ষতাপমাত্রায় কপারের প্রতিটা molecule গুলো কাঁপে। ফলে ইলেকট্রন তখন smoothly flow হতে পারেনা এবং কপারের তারে Resistance তৈরি হয়।
তাহলে একটা পরিবাহীর মধ্যে Atomic charge এর জন্য তৈরি হওয়া resistance Ra এবং Molecular vibration এর জন্য তৈরি হওয়া Resistance Rm এদের দুটো মিলেই হচ্ছে একটা পরিবাহীর টোটাল resistance R. অর্থাৎ-
R = Ra + Rm
Resistor বা রোধককে সার্কিটে দেখানো হয় একটা প্রতীক ব্যবহার করে যেটি দেখতে ঠিক এমন-
এবার আমরা কিছু আসল Resistor এর ছবি দেখবো যাদেরকে বাস্তবে সার্কিটে কানেক্ট করা হয়-
ও’মের সূত্র হতে পাই,
R = V / I
উক্ত সমীকরণ হতে রোধের আরও একটি সংজ্ঞা দেয়া যেতে পারে-
সুষম তাপমাত্রায় কোনো একটি পরিবাহীর দুই প্রান্তে বিভব পার্থক্য এবং এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিদ্যুৎ প্রবাহমাত্রার অনুপাতকে ঐ পরিবাহীর রোধ বলে।
যেসব বিষয়ের উপর রোধ নির্ভর করে
কোনো একটি পরিবাহীর রোধ নিম্নলিখিত শর্তগুলোর উপর নির্ভর করে-
রোধের পরিবাহীর দৈর্ঘ্য : কোনো নির্দিষ্ট প্রস্থচ্ছেদ ও তাপমাত্রার একটি নির্দিষ্ট পরিবাহীর রোধ এর দৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে। দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেলে রোধ বৃদ্ধি পায়।
পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদ : নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য ও তাপমাত্রার কোনো পরিবাহীর রোধ এর প্রস্থচ্ছেদের উপর নির্ভর করে। প্রস্থচ্ছেদ বৃদ্ধি পেলে রোধ হ্রাস পায় এবং প্রস্থচ্ছেদ হ্রাস পেলে রোধ বৃদ্ধি পায়।
পরিবাহীর উপাদান : একই ভৌত অবস্থায় বিভিন্ন পদার্থের রোধ বিভিন্ন হয়।
পরিবাহীর তাপমাত্রা : পরিবাহীর রোধ তার তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে সাধারণত পরিবাহীর রোধ বৃদ্ধি পায় এবং তাপমাত্রা হ্রাস পেলে পরিবাহীর রোধ হ্রাস পায়। তবে অর্ধপরিবাহীর ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে এর রোধ হ্রাস পায়।
আলোকের প্রভাব : বস্তুর রোধের উপর আলোর প্রভাব আছে। সেলিনিয়াম এবং ক্ষারজাতীয় পদার্থের উপর আলোক আপতিত হলে তাদের রোধ হ্রাস পায়। বস্তুর এই ধর্মকে কাজে লাগিয়ে আলোক শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে পরিণত করা যায়।
চুম্বকত্বের প্রভাব : পরিবাহীর রোধের উপর চুম্বকত্বের প্রভাব দেখা যায়। চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রাবল্য বৃদ্ধি পেলে বিসমাথ ধাতুর রোধ বৃদ্ধি পায়।
চাপের প্রভাব : পরিবাহীর রোধের উপর চাপের প্রভাব আছে। পরীক্ষার সাহায্যে দেখা গেছে যে, কার্বন গুঁড়ার উপর চাপ বৃদ্ধির ফলে এর রোধ হ্রাস পায়। কার্বন গুড়ার এ ধর্মের সাহায্যে কার্বন মাইক্রোফোন যন্ত্র তৈরি করা হয়েছে।
পরিবাহীর বিশুদ্ধতা : পরিবাহীর রোধ বিশুদ্ধতার উপর নির্ভর করে। কতকগুলো সংকর ধাতুর রোধ তাদের উপাদানের রোধ অপেক্ষা বেশি অর্থাৎ বিশুদ্ধ পরিবাহীর রোধ কম।
মনে রাখতে হবে সব ধরনের conductor এর তুলনায় সিলভারের তৈরি conductor এর পরিবাহীতা বেশি। অর্থাৎ সিলভারের Resistance কম থাকে অন্যদের তুলনায়। আবার তাপমাত্রা বাড়ালে পরিবাহীর molecular vibration বাড়ে বলে resistance তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল।
রোধের এস. আই. (SI) একক ও’ম (ohm)। এটা Ω (omega) চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া মেগা-ও’ম (mega ohm) বা মাইক্রো-ও’ম (micro ohm)-কে রোধের একক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
1 M Ohm = 106Ω
1 micro Ohm = 10-6Ω
1 Ohm = 1 Volt / 1 Ampere
1 Ohm এর সংজ্ঞা : কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য 1V হলে এবং এর ভিতর দিয়ে 1A বিদ্যুৎ প্রবাহিত হলে ঐ পরিবাহীর রোধকে 1 Ohm বলে।
তাহলে 1 ohm = 1V / 1A
অন্যভাবে বলা যায়-
যদি 1A কারেন্ট 1sec ধরে কোনো conductor দিয়ে প্রবাহিত হবার ফলে 1 joule তাপ উৎপন্ন হয় তবে সেই conductor এর resistance কে 1 ohm বলে।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- আধান পরিবহণের মাধ্যম
- আপেক্ষিক রোধ কাকে বলে
- এনট্রপি কি
- ওহমের সূত্র (Ohm’s Law)
- কী প্রক্রিয়ায় গ্যাসের চাপের সৃষ্টি হয়
- কোষের অভ্যন্তরীণ রোধ
- তড়িৎ ধারকত্ব
- থার্মোমিটার কি
- পরিবাহিতা, আপেক্ষিক পরিবাহিতা ও অতিপরিবাহিতা
- বিভিন্ন প্রকার ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া
- রোধের তাপমাত্রা বা উষ্ণতা গুণাঙ্ক
- রোধের সমবায় ubs
- রোধের সূত্র ও আপেক্ষিক রোধ
- স্প্রিং নিক্তি
- হুইটস্টোন ব্রীজ