পদার্থবিজ্ঞান হলো প্রাচীন গ্রিসের মত পুরনো এবং আগামী দিনের সংবাদপত্রের মত নতুন। বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার মধ্যে এটি সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী। মানব সভ্যতার বিবর্তনে বিজ্ঞানের যে অবদান তার বিপুল অংশ এ পদার্থবিজ্ঞানের অবদান। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন আরাম-আয়েশ থেকে শুরু করে জাতীয় জীবনের বিভিন্ন উন্নতিতে পদার্থবিজ্ঞানের দান অপরিসীম।
আমরা পদার্থবিজ্ঞানে যেসব আবিষ্কার ও নীতি পড়ব সেখানে রয়েছে প্রাচীন পণ্ডিত যেমন, আর্কিমিডিস, ডেমোক্রিটাস ও থেলিসের অবদান।
সপ্তদশ, অষ্টাদশ, ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে পদার্থবিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে। এসব সম্ভব হয়েছে গ্যালিলিওর পড়ন্ত বস্তু নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বয়েলের গ্যাস নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা, নিউটনের মহাকর্ষ ও আলোক নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং ভোল্টার তড়িৎ সম্পকির্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার ফলে। এ অগ্রগতি এতই বেশি ছিল যে, কোনো এক বিখ্যাত বিজ্ঞানী মন্তব্য করেছিলেন যে, সব গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হয়ে গেছে। ভবিষ্যতের বিজ্ঞানীদের জন্য শুধু বাকি রইল এগুলোকে আরও উন্নত করা। এরপর অতিদ্রুত আবিষ্কার হয় এক্স-রে, তেজস্ক্রিয়তা, পরমাণু গঠন, বেভার তরঙ্গ এবং আপেক্ষিকতা তত্ত্ব।
বর্তমানে এসব আবিষ্কারের সুফল আমরা ভোগ করছি। পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি দ্রুত গতিতে ও উচুঁতে আমরা ভ্রমণ করতে পারছি। রঙিন টেলিভিশন আমাদের আনন্দের উৎস হয়েছে। নিউক্লিয় বিক্রিয়া থেকে পাচ্ছি প্রচুর তড়িৎশক্তি। ইলেকট্রনিক কম্পিউটারে জটিল সব সমস্যার সমাধান করতে পারছি সানন্দে। মহাশূন্যে পাঠান হচ্ছে নতুন নতুন উপগ্রহ এবং উপগ্রহ মহাশূন্য সম্পর্কে সরবরাহ করছে নতুন নতুন তথ্য। দূর পাল্লার মিসাইল দূর থেকে লক্ষবস্তুর আঘাত হানছে। যে সময়টুকুতে তুমি বিজ্ঞানের অবদান সম্পর্কে পড়ছ সে সময়ে নিঃসন্দেহে একটি উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার ঘটে গেছে।
পদার্থবিজ্ঞানের প্রভূত অগ্রগতি মানব জীবনকে করছে অনেক সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী। আমাদের জীবনে চুম্বক, তড়িৎ, আলোক, শব্দ ও নিউক্লিয় পদার্থবিজ্ঞানের রয়েছে অপরিসীম অবদান। চুম্বক ও তড়িৎ বিজ্ঞানের কল্যাণে আমরা পেয়েছি আরাম আয়েশ ও চিত্তবিনোদনের বিভিন্ন মাধ্যম। বৈদ্যুতিক বাতি আমাদের ঘর আলোকিত করছে, বৈদ্যুতিক পাখা শীতল বাতাস ছড়িয়ে দিচ্ছে, টেলিগ্রাফ ও টেলিফোনের সাহায্যে আমরা দুরদুরান্তে খবর পাঠাতে পারছি। রেডিও, টেলিভিশন, সিনেমা আমাদের চিত্তবিনোদনে সহায়তা করছে। দ্রুতগামী উড়োজাহাজ আমাদের নিয়ে যাচ্ছে দূরদূরাপ্তে। এছাড়াও বৈদ্যুতিক ইস্ত্রী, রেফ্রিজারেটর, মোটরগাড়ি, ট্রেন, বাস, বৈদ্যুতিক চুল্লি আমাদের জীবনে অনেক সুখ ও সাচ্ছন্দ্য বাড়িয়ে দিয়েছে।
পদার্থবিজ্ঞানের মূল অবদান অবশ্য প্রকৃতির মৌলিক নিয়মগুলোর আবিষ্কার। ক্ষুদ্রতম যেসব কণিকা দিয়ে বস্তু জগৎ তৈরি এবং মৌলিক যে বলগুলো প্রকৃতিতে কাজ করছে তা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে পদার্থবিজ্ঞানের উদ্ভাবিত তত্ত্ব ও পরীক্ষণ দ্বারা, পদার্থবিজ্ঞানের কল্যাণে পরমাণুর অভ্যন্তর থেকে মহাবিশ্বের দূরতম গ্যালাক্সি সম্পর্কে ক্রমাগত শুদ্ধতর উপলব্ধি আমরা অর্জন করছি। অবশ্য বড় বড় বিজ্ঞানীদের মতে, বিজ্ঞান ও আবিষ্কারের কোনো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই। বস্তৃত কোনো সৃজনশীল কাজেরই সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি আগে থেকে সংজ্ঞায়িত করা যায় না। এ জন্যই বলা হয়ে থাকে যত বিজ্ঞানী জন্মগ্রহণ করেছেন তত পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছে বিজ্ঞান চর্চার।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
www.facebook.com/groups/mycrushschool
Related posts:
- তড়িৎ আবেশ
- তড়িৎ ক্ষেত্রের প্রাবল্য
- তড়িৎ প্রাবল্য ও তড়িৎ বিভবের মধ্যে সম্পর্ক
- তড়িৎ বলরেখা
- তড়িৎ বিভব
- প্রাণিবিজ্ঞান পরিচিতি
- বিদ্যুৎ প্রবাহ
- ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র
- ভৌত বিজ্ঞান কি
- মৌলিক বল কাকে বলে
- মৌলিক রাশি কাকে বলে
- রকেটের গতি (Motion of Rocket)
- সমাজ ও সভ্যতার বিভিন্ন ধাপ
- সমান্তরাল পাত ধারক
- স্কেলার ও ভেক্টর রাশি