যখন আমরা ল্যাবরেটরিতে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করি তখন পরিবেশের উপর এই ধরনের রাসায়নিক পদার্থগুলো বিভিন্ন ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা এখানে ল্যাবরেটরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক যৌগের জন্য পরিবেশে কি কি ধরনের প্রভাব পড়ে সেগুলো নিয়ে জানার চেষ্টা করব।
ধাতুর প্রভাব
আমরা যদি ধাতুকে ল্যাবরেটরিতে ব্যবহার করি তবে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ এর ফলে যে ইলেকট্রনের ট্রান্সপোর্ট ঘটে সেটাতে ধাতু বাঁধা দিতে পারে। ফলে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় কোনো অক্সিজেন উৎপন্ন হতে পারবে না।
আবার উদ্ভিদের পাতার সবুজ রং এর জন্য আয়রন অনেকাংশে দায়ী থাকে। যদি পরিবেশে জিংকের পরিমান বেড়ে যায় তবে পাতায় থাকা আয়রনের পরিমাণ কমে যাবে, ফলে পাতাটি হলুদ হয়ে যাবে।
যদি আমরা ল্যাবরেটরিতে ক্যাডমিয়াম (Cd) ধাতু ব্যবহার করি তবে জমিতে ফলানো শাক-সবজি গুলো নষ্ট হয়ে যাবে।
পটাশিয়াম ফেরোসায়ানাইডের প্রভাব
ল্যাবরেটরিতে পটাশিয়াম ফেরোসায়ানাইড ব্যবহারের ফলে গলায় ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। একইসাথে আমাদের ত্বকে, চোখে ক্ষত তৈরি হতে পারে।
কপার সালফেটের প্রভাব
যদি আমরা ল্যাবরেটরীতে অনার্দ্র কপার সালফেট (CuSO4) ব্যবহার করি তবে আমাদের সেটার কারণে বমি এবং জ্বর আসতে পারে। অর্থাৎ এই সকল রাসায়নিক যৌগ ব্যবহারের ফলে আমাদের পরিবেশে একটা খারাপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
সালফিউরিক এসিডের প্রভাব
আমরা ল্যাবরেটরিতে প্রায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সালফিউরিক এসিড ব্যবহার করি। এছাড়া এই এসিডটি অনেক বেশি শক্তিশালী, তাই এই এসিডকে The mother of Acid বলা হয়। সালফিউরিক এসিড অতিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে পানির pH কমে যায়। যদি পানির pH কমে যায় তবে পানিতে থাকা মাছ এবং জলজ উদ্ভিদগুলো বাঁচতে পারবে না। কেননা মাছ এবং জলজ উদ্ভিদ বাঁচার জন্য একটা নির্দিষ্ট মানের pH দরকার হয় পানিতে। কিন্তু সালফিউরিক এসিড পানির pH এর মান অনেক বেশি কমিয়ে দেয়।
সালফিউরিক এসিড যদি কোনো কারণে আমাদের চোখে এসে পড়ে তবে আমরা অন্ধ হয়ে যেতে পারি। এছাড়া সালফিউরিক এসিড যদি আমাদের দাঁতের সংস্পর্শে আসে তবে সেখানে ক্ষত তৈরি হতে পারে এবং ব্রংকাইটিস নামক রোগ সৃষ্টি হতে পারে।
হাইড্রোক্লোরিক এসিডের প্রভাব
ল্যাবরেটরিতে হাইড্রোক্লোরিক এসিড (HCl) ব্যবহারের ফলে পরিবেশের উপর বিভিন্ন ধরনের প্রভাব দেখা যায়। যদি হাইড্রোক্লোরিক এসিড কোনো কারণে আমাদের ত্বকে এসে পড়ে তবে আমাদের ত্বক পুড়ে যাবে কিংবা ক্ষত হয়ে যাবে। আবার হাইড্রোক্লোরিক এসিড যদি আমাদের মুখ দিয়ে ফুসফুসে প্রবেশ করে তবে সেখানেও ক্ষত তৈরি করবে। হাইড্রোক্লোরিক এসিড ব্যবহারের সময় যদি এই এসিডের ধোঁয়া তৈরি হয় তবে সেটা আমাদের চোখের সংস্পর্শে আসলে আমাদের চোখও অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
www.facebook.com/groups/mycrushschool
অতিথি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-
write@thecrushschool.com
Related posts:
- অর্ধপরিবাহী পদার্থ (Semiconductor Material)
- একমুখী বিক্রিয়া ও উভমুখী বিক্রিয়া (Irreversible & Reversible Reaction)
- গ্যাসের ঘনত্বের উপর চাপের প্রভাব (Effect of Pressure on Gas Concentration)
- জুল থমসন প্রভাব কি?
- জোয়ার-ভাটার প্রকারভেদ ও প্রভাব (Types & Effects of Tides)
- ডায়োডের গ্রাফে তাপমাত্রার প্রভাব – Effects of Temperature on Diode’s V-I Curve
- পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রাণিবিজ্ঞানের গুরুত্ব (The importance of Zoology in maintaining the balance of the environment)
- পাইরুভিক এসিডের অসম্পূর্ণ জারণ কাকে বলে?
- প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ (Primary & Secondary Standard Reagents)
- প্রোটিন – Protein
- প্রোটিনের প্রাইমারি গঠন (Primary Structure of Protein)
- ল্যাবরেটরি ব্যবহার বিধি (Laboratory Usage Rules)
- ল্যাবরেটরির কাঁচ সামগ্রী (Laboratory Glass Materials)
- সবুজ রসায়ন (Green Chemistry)
- সমুদ্রস্রোতের প্রভাব ও গুরুত্ব (The effect and importance of Ocean Currents)