আমরা পরমাণুর বিভিন্ন মডেল থেকে এটা জানতে পারি যে পরমাণুর ঠিক কেন্দ্রে নিউক্লিয়াস নামক একটা জায়গা থাকে এবং এই নিউক্লিয়াসকে ঘিরে চারপাশে বৃত্তাকার পথে ইলেকট্রন ঘুরতে থাকে। কিন্তু এই কথাটা পুরোপুরি সত্য না। কারণ পরমাণুতে ইলেকট্রন কখনোই সুষম বৃত্তাকার পথে আবর্তন করে না, একটা নির্দিষ্ট সীমা বা জায়গার মধ্যে এটি আবর্তন করে।
তবে এখানেও একটা কথা আছে। ইলেকট্রন পরমাণুর নিউক্লিয়াসের বাইরে ঠিক কোন বিন্দুতে আছে সেটা আবার কখনোই বের করা সম্ভব হয় না। যেকোনো বিন্দুর কেবল একটা সম্ভাব্যতা বের করা যায় যে সেখানে ইলেকট্রন থাকার সম্ভাবনা কতটুকু।
নিউক্লিয়াসের চারপাশের জায়গাটা ত্রিমাত্রিক বা 3D, তাই আমরা একটা ত্রিমাত্রিক স্থানাংক ব্যবস্থার সাহায্য নিবো ইলেকট্রনের অবস্থান বের করার জন্য। ধরা যাক নিউক্লিয়াসটি হচ্ছে আমাদের মূল বিন্দু। এখন নিউক্লিয়াসের বাইরে P অবস্থানে ইলেকট্রন আছে কি নাই সেটার সম্ভাবনা আমরা বের করবো। তাহলে ত্রিমাত্রিক স্থানাংক ব্যবস্থায় P বিন্দুর স্থানাংক হবে = (x, y, z)।
আবার যদি পোলার কার্তেসীয় স্থানাংকের সাহায্য নেই তবে নিউক্লিয়াস বা মূলবিন্দু থেকে r দুরত্বে, ভূমি বরাবর φ কোণে এবং লম্ব বরাবর θ কোণে P বিন্দুর স্থানাংক পাওয়া যাবে যার মান P (r, θ, φ)।
যেহেতু নিউক্লিয়াসের চারপাশে ইলেকট্রন সুষম বৃত্তাকার পথে চলাচল করে না তাই আমাদের এমন একটা ফাংশন বের করতে হবে যেখানে নিউক্লিয়াসকে মূলবিন্দু (0, 0, 0) ধরে কোনো বিন্দুর মান (x, y, z) বা (r, θ, φ) বসালে আমরা সেই ফাংশনের মাধ্যমে জেনে যাবো P বিন্দুতে ইলেকট্রন থাকার সম্ভাবনা কতটুকু।
তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিজ্ঞানী স্রোডিঞ্জার সেই ফাংশটিকে বা সমীকরণটিকে বের করে রেখেছিলেন। এটিকে স্রোডিঞ্জারের সমীকরণ বলে। একটা পরমাণুতে একটা নির্দিষ্ট স্থানে ইলেকট্রন পাওয়ার সম্ভাবনা বের করার জন্য স্রোডিঞ্জারের সমীকরণ ব্যবহার করা হয়। এই সমীকরণটি দেখো-
আমরা উপরের সমীকরণ বা ফাংশনকে সাই (Ψ) ব্যবহার করে ভেঙ্গে লিখতে পারি-
Ψ (r, θ, φ) = R (r) P (θ) F (φ)
কাজেই নিউক্লিয়াসের বাইরের যেকোনো একটা বিন্দুর Ψ (r, θ, φ) কে যদি আমরা উপরের ফাংশনে বসাই তবে স্রোডিঞ্জারের সমীকরণের মাধ্যমে সেই বিন্দুতে ইলেকট্রন থাকার সম্ভাবনা পেয়ে যাবো।
এখন, ফাংশনের R (r), P (θ) এবং F (φ) কে যথাক্রমে প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা, সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা এবং চৌম্বক কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে। তবে Ψ এর আলাদা কোনো কাজ না থাকলেও Ψ2 এর কাজ আছে। যদি এই তিনটির মান বসানোর পর Ψ2 এর মান 25 আসে, তবে বুঝতে হবে সেই অবস্থানে ইলেকট্রন থাকার সম্ভাবনা 25%।
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
www.facebook.com/groups/mycrushschool
অথিতি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-
write@thecrushschool.com
Related posts:
- আধান – Electric Charge
- ইলেকট্রন বিন্যাসের নীতি (Rules of Electronic Configuration)
- ইলেকট্রনাকর্ষী বিকারক (Electrophilic Reagent)
- কার্বো অ্যানায়ন (Carbonation)
- কেন্দ্রাকর্ষী বিকারক (Nucleophilic Reagent)
- তড়িৎ প্রাবল্য ও তড়িৎ বিভবের মধ্যে সম্পর্ক (Relation between Electric Intensity and Electric Potential)
- তড়িৎ বিভব (Electric Potential)
- তড়িৎ সংক্রান্ত ইলেকট্রন মতবাদ (Electron theory Relating Electricity)
- পরমাণুর গঠন (Structure of Atom)
- পরমাণুর মূল কণিকা
- বিভব পার্থক্য (Potential Difference)
- ভেক্টর সম্পর্কিত কিছু সংজ্ঞা
- সমবিভব তল (Equipotential Surface)
- স্কেলার ও ভেক্টর রাশি (Scalar & Vector Quantity)
- স্যাটেলাইটের অবস্থান নির্ণয়ের কোণ – Angle to determine the position of the Satellite