ভাইরাসের গঠন

বিভিন্ন প্রকার ভাইরাসের গঠন বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। সব ভাইরাসের গঠন এখনও সঠিকভাবে জানা সম্ভব হয় নাই। প্রতিটি ভাইরাস প্রধানত দুটি অংশে বিভক্ত-

  • নিউক্লিক অ্যাসিড
  • ক্যাপসিড (প্রোটিন আবরণ)

 

নিউক্লিক অ্যাসিড (Nucleic Acid)

প্রতিটি ভাইরাস দেহের কেন্দ্রে অবস্থান করে নিউক্লিক অ্যাসিড। এটি বংশগতি নির্ধারক পদার্থ। নিউক্লিক অ্যাসিড দু’প্রকার- DNA এবং RNA। অন্যান্য জীবদেহে একই সাথে DNA এবং RNA অবস্থান করে কিন্তু ভাইরাস দেহে এ দুটি নিউক্লিক অ্যাসিড সাধারণত একসাথে অবস্থান করে না।

সাধারণত উদ্ভিদ ভাইরাসে RNA এবং প্রাণী ভাইরাস ও ব্যাকটেরিওফাযে (ব্যাকটেরিয়া বিধ্বংসী ভাইরাস) DNA থাকে। ভাইরাসের এ নিউক্লিক অ্যাসিড অংশটিকে নিউক্লিঅয়েড (Nucleoid) বা ভাইরাস জিনোম (Vinis genome) বলে। উল্লেখ্য, প্রাণী ভাইরাস হয়েও পোলিও, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদিতে RNA থাকে। আবার কোন কোন উদ্ভিদ ভাইরাসে DNA থাকে। যেমন- ফুলকপির মোজাইক ভাইরাস।

 

ক্যাপসিড (Capsid)

নিউক্লিক অ্যাসিডকে ঘিরে অবস্থিত প্রোটিন আবরণটির নাম ক্যাপসিড। এ আবরণটি অসংখ্য প্রোটিন অণু দিয়ে গঠিত। ক্যাপসিড আবরণের এক একটি প্রোটিন অণুকে বলা হয় ক্যাপসোমিয়ার (capsomere)। ক্যাপসোমিয়ার অণুসমূহ নির্দিষ্ট ভাইরাসে নির্দিষ্ট ধরনের। ক্যাপসিড সাধারণত জৈবিক দিক দিয়ে নিষ্ক্রিয় (inert), তবে এরা নিউক্লিক অ্যাসিডকে রক্ষা করা ছাড়াও পোষক দেহে সংক্রমণে সাহায্য করে। ক্যাপসিড প্রোটিন অণু হওয়ায় এটি অ্যান্টিজেন হিসেবে কাজ করে। সাধারণ সর্দি কিংবা জ্বরে এটি মানুষের হাঁচি তৈরি করে।

ক্যাপসিডের বাইরে কোন কোন ভাইরাসে (যেমন- ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, হার্পিস ভাইরাস, HIV ইত্যাদি) বিভিন্ন জৈব পদার্থের একটি আবরণ দেখা যায়। ভাইরাসের ধরনের উপর সাধারণত এ জৈব পদার্থের ধরন নির্ভর করে। এ আবরণটি সাধারণত লিপিড, লিপোপ্রোটিন, শর্করা বা স্নেহ জাতীয় পদার্থ দিয়ে গঠিত। লিপিড অথবা লিপোপ্রোটিন স্তরের একককে পেপলোমিয়ার (peplomere) বলে। লিপিড বা লিপোপ্রোটিন আবরণ বিশিষ্ট ভাইরাসকে কখনও কখনও লিপোভাইরাস বলা হয়।

 

ভিরিয়ন (Virion) : নিউক্লিক অ্যাসিড ও একে ঘিরে অবস্থিত ক্যাপসিড সমন্বয়ে গঠিত এক একটি সংক্রমণক্ষম সম্পূর্ণ ভাইরাস কণাকে ভিরিয়ন বলে। সংক্রমণ ক্ষমতাবিহীন ভাইরাসকে বলা হয় নিউক্লিওক্যাপসিড। এখানে কয়েকটি সাধারণ ভাইরাসের সংক্ষিপ্ত গঠন নিয়ে জানবো এখন আমরা।

ভিরয়েড (Viroid) : ভিরয়েড হল শুধুমাত্র ক্ষুদ্র RNA দ্বারা গঠিত অতিআণুবীক্ষণিক জীবাণু যা ভাইরাসের মতই বিস্তার লাভ করতে পারে এবং জীবদেহে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করতে পারে। এরা ক্ষুদ্রতম সংক্রামক ক্ষমতাসম্পন্ন অণুজীব, এদের কোন সুপ্ত দশা নেই, RNA দিয়ে এদের দেহ গঠিত।

প্রিয়ন (Prion) : প্রিয়ন হল ভাইরাসের শূন্য প্রোটিন আবরণ যা মানুষের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করতে পারে। এরা পোষক কোষের জিনোমে ঢুকে গিয়ে নতুন প্রিয়ন তৈরি করিয়ে নিতে পারে। প্রিয়ন হল এই প্রকার সংক্রামক সত্ত্বা বা ভাইরাস থেকে প্রায় ১০০ গুণ ছোট এবং শুধুমাত্র প্রোটিন দিয়ে গঠিত। প্রিয়ন দিয়ে প্রাণীর স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হয়। এরা মানুষের কুরু রোগ (Karu) এবং গরুর ম্যাড কাউ (Mad Cow) রোগের জন্য দায়ী।

পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-

www.youtube.com/crushschool

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool