স্থানীয় বায়ু

স্থানীয় প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য কিংবা তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে ভূপৃষ্ঠের জায়গায় জায়গায় স্থানীয় বায়ুর উৎপত্তি হয়। পৃথিবীতে প্রায় কয়েকশ স্থানীয় বায়ুপ্রবাহ আছে। যেমন- রকি পর্বতের চিনুক (Chinook), ফ্রান্সের কেন্দ্রীয় মালভূমি থেকে প্রবাহিত মিস্ট্রাল (Mistral), আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের পম্পাস অঞ্চলের উত্তরে পাম্পেরু (Pampero), আড্রিয়াটিক সাগরের পূর্ব উপকূলে বোরা (Bora), উত্তর আফ্রিকা ও দক্ষিণ ইতালিতে সিরক্কো (Sirocco), আরব মালভূমির সাইমুম (Simoom), মিসরের খামসিন (Khamsin) ও ভারতীয় উপমহাদেশের লু (Loo) কয়েকটি স্থানীয় বায়ুর উদাহরণ।

অনিয়মিত বায়ু : কোনো স্থানে অধিক উত্তাপের জন্য বায়ুর চাপ কমে যায় এবং নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। আবার অত্যধিক শৈত্যের জন্য কোনো স্থানের বায়ু শীতল হলে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়। ফলে যে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। তাকে অনিয়মিত বায়ু বলে। যেমন-

  • ঘূর্ণিবাত (Cyclone)
  • প্রতীপ ঘূর্ণিবাত (Anti Cyclone)

ঘূর্ণিবাত (Cyclone) ও প্রতীপ ঘূর্ণিবাতে বায়ুপ্রবাহের দিক

ঘূর্ণিবাত – উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে (বামাবর্তে), দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে (দক্ষিণাবর্তে)

প্রতীপ ঘূর্ণিবাত – উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে, দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে

 

কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • সাইমুম : সাহারা ও আরব মরুভূমির স্থানীয় বায়ু
  • চিনুক : উত্তর আমেরিকার রকি পর্বতের পূর্বপার্শ্বের স্থানীয় বায়ু। 
  • অয়ন বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত বায়ুকে অয়ন বায়ু বলা হয়।
  • বাণিজ্য বায়ু : পূর্বকালে অয়ন বায়ুর সাহায্যে পালতোলা বানিজ্য জাহাজ চলাচল করত বলে অয়ন বায়ুকে বাণিজ্য বায়ুও বলা হয়।
  • প্রত্যয়ন বায়ু বা পশ্চিমা বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে মেরুদেশীয় নিন্মচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত বায়ুকে প্রত্যয়ন বায়ু বলা হয়।
  • গর্জনশীল চল্লিশ : উত্তর গোলার্ধে স্থলভাগের আয়তন বেশি বলে স্থানীয়ভাবে পশ্চিমা বায়ুর গতির বেশ পরিবর্তন ঘটে। তবে দক্ষিণ গোলার্ধে পানির ভাগ বেশি থাকায় পশ্চিমা বায়ু বাধাহীনভাবে প্রবাহিত হয়। প্রায় ৪০° দক্ষিণ থেকে ৪৭° দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত পশ্চিমা বায়ুর গতিবেগ সবচেয়ে বেশি। এ অঞ্চলকে গর্জনশীল চল্লিশ বলে। এই বায়ুপ্রবাহকে প্রবল পশ্চিমা বায়ু বলে।

সাগর পৃষ্ঠে কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা কত হলে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয় : সাধারণত সমুদ্রের কোনো স্থানে ৮৫° ফা. বা ৭০° ফা. (২৬° সে. এর বেশি) তাপ থাকলে পানি দ্রুত বাষ্পে পরিণত হয়ে উপরে উঠতে থাকে। ফলশ্রুতিতে সেখানে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় ও ঘূর্ণিবাত আরম্ভ হয়।

পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-

www.youtube.com/crushschool

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool