ভেক্টরের বিভাজন কী?
একটা ভেক্টর রাশিকে দুটো বা তার বেশি ভেক্টর রাশিতে বিভক্ত করার প্রক্রিয়াকে ভেক্টর বিভাজন বলে এবং ভাগ হয়ে যাওয়া দুটো ভেক্টরকে মূল ভেক্টরের উপাংশ বলে।
আমরা ভেক্টরের সামান্তরিক সূত্রতে দেখেছিলাম, দুইটা সমজাতীয় ভেক্টর থেকে একটা ভেক্টরকে লব্ধি হিসেবে প্রকাশ করা যায়। এবার আমরা দেখব একটা ভেক্টরকে ভেঙে কিভাবে দুটি ভেক্টরে রুপান্তর করা যায়। ভেক্টরের এই ভেঙ্গে যাওয়াকে ভেক্টর বিভাজন বলে। মনে রাখতে হবে, আমরা ভেক্টরের বিভাজন করবো X এবং Y অক্ষ বরাবর, অর্থাৎ X-Y তলে।
ভেক্টর বিভাজন বের করার নিয়ম
ধরা যাক, x-axis এবং y-axis বরাবর একটা তলে একটা ভেক্টর R কে আঁকা হয়েছে। R ভেক্টরটি OP রেখা বরাবর কাজ করছে এবং OP রেখাটি x অক্ষের সাথে θ ডিগ্রি কোণ করে রয়েছে। নিচের ছবিতে দেখো-
যদি R ভেক্টরের মান এবং দিক বের করতে চাই তবে R ভেক্টরের মান হবে OP রেখার দৈর্ঘ্য এবং R ভেক্টরের দিক হবে x অক্ষের সাথে OP যেটুকু কোণ করে রয়েছে সেটুকু।
আমাদের এখন কাজ হচ্ছে OP ভেক্টর বা R ভেক্টরকে X-axis এবং Y-axis বরাবর দুই ভাগে ভাগ করা। অর্থাৎ R ভেক্টরটিকে বিভাজন করতে হবে। আমাদের জানা আছে, যেকোনো দ্বিমাত্রিক (2 Dimensional) ভেক্টরকে X-Y axis বরাবর ভাগ করতে হলে এর দুটি উপাংশ বা Component থাকে। একটি উপাংশ X অক্ষ বরাবর এবং অপরটি Y অক্ষ বরাবর কাজ করে। এই দুটি উপাংশকে যোগ করলেই আমরা সেই ভেক্টরটি পাবো। তাই আমাদের এখন X অক্ষের উপর R এর উপাংশ এবং Y অক্ষের উপর R এর উপাংশ বের করলেই সেগুলো হবে R ভেক্টরের দুটি বিভাজন।
এবার R ভেক্টরের P বিন্দু থেকে OX অক্ষের উপর PM লম্ব টানি।
তাহলে OPM একটি সমকোণী ত্রিভুজ হবে, যার OM হচ্ছে R ভেক্টরটির X অক্ষ বরাবর উপাংশ এবং PM হচ্ছে R ভেক্টরের Y অক্ষ বরাবর উপাংশ। কাজেই OM এবং PM এর মান বের করলেই আমরা R ভেক্টরকে দুই ভাগে ভাগ করতে পারব। তাহলে-
cosθ = OM / OP
OM = OP cosθ
OM = R cosθ
আবার
sinθ = PM / OP
PM = OP sinθ
PM = R sinθ
যদি আমাদেরকে একটা ভেক্টর দেওয়া হয় তবে সেই ভেক্টরটির X axis এবং Y axis বরাবর উপাংশটিই হবে সেই ভেক্টরটির বিভাজন।
এবার একটু অন্য জিনিস দেখি। যদি আমাদের বলে দেওয়া থাকে যে R ভেক্টরটি Y অক্ষরের সাথে θ ডিগ্রি কোণ করে রয়েছে, তবে এই R ভেক্টরটির দুটি বিভাজন বা উপাংশ এর মান আগের মত হবে না-
এক্ষেত্রে X অক্ষের সাথে R ভেক্টরের কোণ হচ্ছে = 90 – θ, তাই X অক্ষ বরাবর এখন R ভেক্টরের উপাংশের মান হবে OM = R cos(90 – θ) বা R sinθ
এবং Y অক্ষ বরাবর R ভেক্টরের উপাংশ এর মান হবে ON = R cosθ
এবার খেয়াল করো যদি আমরা X অক্ষের সাথে R ভেক্টরের কোণ θ ধরি তবে X অক্ষের উপাংশের সাথে cosθ আসে। আবার যখন R ভেক্টরের সাথে Y অক্ষের কোণকে θ ধরি তখন Y অক্ষের উপাংশের সাথে cosθ আসে।
তাই মূল কথা হচ্ছে, যখন কোনো ভেক্টর কোনো অক্ষের সাথে একটা নির্দিষ্ট কোণ তৈরি করে তখন সেই অক্ষ বরাবর সেই ভেক্টরের উপাংশ হয় = সেই ভেক্টরের মান * সেই অক্ষের সাথে সেই অক্ষের কোণের cosine এর মান।
পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-
ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-
Related posts:
- অভিক্ষেপ ও উপাংশের মধ্যে পার্থক্য (Difference Between Projection & Component)
- দড়ি দিয়ে নৌকা টানা (Pull the Boat through the Ropes)
- ভেক্টর অভিক্ষেপ (Vector Projection)
- ভেক্টর যোগ ও বিয়োগ (Addition & Subtraction of Vectors)
- ভেক্টর রাশির বিয়োগফল (Subtraction of Vectors)
- ভেক্টর লব্ধির দিক (Direction of Vector Resultant)
- ভেক্টর লব্ধির সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন মান (Maximum & Minimum Value of Vector Resultant)
- ভেক্টর সম্পর্কিত কিছু সংজ্ঞা
- ভেক্টরের গুনন (Multiplication of Vector)
- ভেক্টরের বন্টন সূত্র (Distributive Law of Vector)
- ভেক্টরের বিনিময় সূত্র (Commutative Law of Vector)
- ভেক্টরের সামান্তরিক সূত্র (Vector’s Law of Parallelogram)
- মাইটোসিস কোষ বিভাজন (Mitosis Cell Division)
- স্কেলার ও ভেক্টর রাশি (Scalar & Vector Quantity)
- স্কেলার ও ভেক্টর রাশি (Scalar & Vector Quantity)