বাংলা ব্যাকরণ কাকে বলে

বাংলা ব্যাকরণ কাকে বলে এটা নিয়ে জানতে হলে আগে জানতে হবে ব্যাকরণ শব্দের দুটো অর্থ আছে-

ব্যুৎপত্তিগত অর্থ : কোনো ভাষাকে বিশেষভাবে বিশ্লেষণ

ব্যবহারগত / সঠিক অর্থ : ভাষার প্রকৃতি ও প্রয়োগরীতি নিয়ে আলোচনা

কোনো ভাষাকে শুদ্ধভাবে লিখতে, পড়তে এবং বুঝতে পারার নিয়মকে ব্যাকরণ বলে।

 

ব্যাকরণের কাজ হচ্ছে-

এটি ভাষাকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং

ভাষার ভেতরকার শৃঙ্খলা আবিষ্কার করা

 

ব্যাকরণ নিয়ে কনফিউজিং কিছু কথা আছে-

ভাষার সংবিধান বলা হয় ব্যাকরণকে,

আবার ভাষাকে বর্ণনা করে ব্যাকরণ,

ব্যাকরণের মূল ভিত্তি হচ্ছে ভাষা,

ভাষার সুনির্দিষ্ট গতিপথ নির্ধারণ করে দেয় ব্যাকরণ,

ব্যাকরণ শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ, ব্যাকরণ = বি + আকরণ

ওদিকে ব্যাকরণ শব্দের প্রত্যয়, ব্যাকরণ = বি + আ + কৃ + অন

 

ব্যাকরণ শব্দটি সহ বাংলা ব্যাকরণে আর যত টপিক বা অধ্যায় আছে যেমন সন্ধি, সমাস, বচন, কারক, প্রত্যয়, উপসর্গ, অনুসর্গ, বাক্য, বাচ্য, উক্তি এরা সবাই-

একইসাথে সংস্কৃত ভাষার শব্দ + বিশেষ্য পদ + পারিভাষিক শব্দ + কৃৎ প্রত্যয় সাধিত শব্দ

 

আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে-

ব্যাকরণের পন্ডিত যিনি + ভালো ব্যাকরণ জানেন যিনি = বৈয়াকরণ

যিনি ভালো ব্যাকরণ রচনা করেন = ব্যাকরণবিদ

 

ব্যাকরণের মূল বিষয়

মনে রাখবে ব্যাকরণ নিয়ে-

আলোচ্য বিষয় + উপাদান + উপকরণ + প্রকারভেদ + মৌলিক অংশ + মূল বিষয় = সব ৪ প্রকার

এরা হচ্ছে-

ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology), শব্দতত্ত্ব / রূপতত্ত্ব (Morphology), বাক্যতত্ত্ব / পদক্রম (Syntax) এবং অর্থতত্ত্ব (Semantics)

এবার চলো এদের নিয়ে বিস্তারিত জানি-

ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology)

মনে রাখবে ধ্বনি, বর্ণ, অক্ষর ও বানান নিয়ে যেকোনো বিষয় এতে আলোচনা করা হয়, যেমন-

ধ্বনি উচ্চারণের স্থান, ধ্বনির উচ্চারণ প্রণালী, ধ্বনি সংযোগ, ধ্বনি পরিবর্তন, ধ্বনির চিহ্ন, বাংলা উচ্চারণের নিয়ম, বাংলা বানানের নিয়ম, অক্ষর বিন্যাস, বর্ণমালা ও লিপি।

একইসাথে সন্ধি এবং ণ-ত্ব বিধান ও ষ-ত্ব বিধান এই শাখায় আলোচনা করা হয়।

মনে রাখার নিয়ম – MS Dhoni (ধ্বনি বিষয়ক সব) না (ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধান) বল করতে গিয়ে বর্ণবাদীদের সাথে সন্ধি করেন এবং তাদের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন।

বাক্যতত্ত্ব / পদক্রম (Syntax)

একটা ছন্দের মাধ্যমে আমরা মনে রাখবো বাক্যতত্ত্বে কি কি আলোচনা করা হয়-

যবাবাবাএকটাই উক্তি পানি!

এখানে, য – যতি চিহ্ন

বা – বাগধারা

বা – বাক্য সংকোচন

বা – বাচ্য

এক – এক কথায় প্রকাশ

উক্তি – মানে উক্তি

পা – পদ পরিবর্তন ও পদ ক্রম (তবে পদ প্রকরণ আলোচনা করা হয় শব্দতত্ত্বে)

শব্দতত্ত্ব / রূপতত্ত্ব (Morphology)

ধ্বনিতত্ত্ব ও বাক্যতত্ত্ব বাদে ব্যাকরণের আর যেসব বিষয় আছে সেগুলো শব্দতত্ত্বে আলোচনা করা হয়। যেমন-

শব্দ, সমাস, বিভক্তি, পদ প্রকরণ, শব্দরূপ, বচন, অনুসর্গ, শব্দদ্বৈত, উপসর্গ, প্রকৃতি ও প্রত্যয়, লিঙ্গ, কারক ও কাল।

অর্থতত্ত্ব (Semantics)

ব্যাকরণের যেসব বিষয়তে অর্থ কথাটা থাকে, তাদেরকে অর্থতত্ত্বে আলোচনা করা হয়। যেমন- শব্দার্থ, বাচ্যার্থ, গৌনার্থ, লক্ষার্থ, বিপরীতার্থ, মুখ্যার্থ ইত্যাদি।

এছাড়া আরো দুটো বিষয় নিয়ে ব্যাকরণে আলোচনা করা হয় যাদেরকে অভিধানতত্ত্ব বা Lexicography এবং ছন্দ বা অলংকার তত্ত্ব বলে।

তবে, ভাষার মৌলিক রূপ আবার ২টা-

লৈখিক ও মৌখিক

 

বাংলা ব্যাকরণ কাকে বলে নিয়ে দুটো কথা

এবার চলো বাংলা ব্যাকরণ কাকে বলে এটা নিয়ে দুটো কনফিউশন দূর করি!

ধ্বনির ক্ষুদ্রতম অংশধ্বনিমূল (Phoneme)

শব্দের ক্ষুদ্রতম অংশরূপ (Morpheme)

 

বাংলা ব্যাকরণ কাকে বলে ও ব্যাকরণের উপাদান ও উপকরণ

উপাদান মানে কোনো কিছুর ক্ষুদ্রতম অংশ, উপকরণ মানে উপাদান দিয়ে যা তৈরি হয় সেটা। তাই ক্রাশ স্কুল ওয়েবসাইটটা হচ্ছে একটা উপকরণ, যেখানে এই স্কুলের লেখাগুলো, ছবিগুলো হচ্ছে উপাদান। তাই বলা যায়, উপকরণের ক্ষুদ্রতম অংশ হচ্ছে উপাদান।

এবার আমরা বাংলা ব্যাকরণ কাকে বলে নিয়ে একটা ফ্লোচার্টের মাধ্যমে দেখবো ধ্বনি, বর্ণ, শব্দ ও বাক্য এরা কে কার উপাদান বা উপকরণ-

বাংলা ব্যাকরণ কাকে বলে

ভাষা নিয়ে-

যেকোনো ভাষার উপাদান – ধ্বনি + শব্দ

আবার ভাষার ক্ষুদ্রতম অংশ – ধ্বনি + শব্দ

এবং ভাষার মূল উপকরণ – বাক্য + মৌলিক শব্দ

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool

অথিতি লেখক হিসেবে আমাদেরকে আপনার লেখা পাঠাতে চাইলে মেইল করুন-

write@thecrushschool.com