থার্মোমিটার কি

থার্মোমিটার কি এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তাকে থার্মোমিটার বলে। সাধারণত উষ্ণতামিতি পদার্থের বা তার ধর্মের নাম অনুসারে থার্মোমিটারের নামকরণ করা হয়। বিভিন্ন উষ্ণতামিতি পদার্থের তৈরি কয়েকটি থার্মোমিটারের নাম ও ধর্ম উল্লেখ করা হলো।

তরল থার্মোমিটার কি (What is Liquid Thermometer)

তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে সাথে তরল পদার্থের আয়তন পরিবর্তিত হয়। যে সব থার্মোমিটারে উষ্ণতামিতি পদার্থ হিসেবে তরল ব্যবহৃত হয় তাদেরকে সাধারণত তরল থার্মোমিটার বলে। থার্মোমিটারে উষ্ণতামিতি পদার্থ হিসেবে পারদ ব্যবহৃত হলে তাকে পারদ থার্মোমিটার বলে এবং অ্যালকোহল ব্যবহৃত হলে তাকে অ্যালকোহল থার্মোমিটার বলে। ব্যবহৃত তরলকে সুষম ব্যাসের কৈশিক নলে রাখা হয়। তরলের উচ্চতা বা স্তম্ভের দৈর্ঘ্যকে উষ্ণতামিতি ধর্ম বলা যায় এবং কৈশিক নলে তরলের উচ্চতা তাপমাত্রার সমানুপাতিক হয়।

থার্মোমিটার কি

গ্যাস থার্মোমিটার কি (What is Gas Thermoneter)

দুই ধরনের গ্যাস থার্মোমিটার রয়েছে। যথা— স্থির আয়তন গ্যাস থার্মোমিটার ও স্থির চাপ গ্যাস থার্মোমিটার।

স্থির আয়তনে একটি নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের চাপ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে বৃদ্ধি পায় এবং তাপমাত্রা হ্রাস পেলে চাপ কমে যায়। গ্যাসের এই ধর্মকে ব্যবহার করে যে সব থার্মোমিটার তৈরি হয় তাদেরকে স্থির আয়তন গ্যাস থার্মোমিটার (constant volume gas thermometer) বলে। এই ধরনের একটি থার্মোমিটারে হাইড্রোজেন উষ্ণতামিতি পদার্থরূপে ব্যবহৃত হলে তাকে স্থির আয়তন হাইড্রোজেন থার্মোমিটার বলে।

স্থির চাপে একটি নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে বৃদ্ধি পায় এবং তাপমাত্রা হ্রাস পেলে আয়তন কমে যায়। গ্যাসের এই ধর্মকে ব্যবহার করে যে সব থার্মোমিটার তৈরি তাদেরকে লির চাপ গ্যাস থার্মোমিটার (constant pressure gas thermometer) বলে। এই প্রকার একটি থার্মোমিটারে হাইড্রোজেন ব্যবহৃত হলে তাকে স্থির চাপ হাইড্রোজেন থার্মোমিটার বলে।

গ্যাস থার্মোমিটার

রোধ থার্মোমিটার কি (What is Resistance Thermometer)

সাধারণত পরিবাহীর তড়িৎ রোধ তাপমাত্রার বৃদ্ধিতে বৃদ্ধি পায়। কাজেই একটি পরিবাহীর তড়িৎ রোধ জেনে তাপমাত্রা নির্ণয় করা যায়। এই নীতির উপর যে সব থার্মোমিটার গঠিত হয়েছে তাদেরকে রোধ থার্মোমিটার (Resistance thermometel) বলে। এরূপ একটি প্লাটিনাম ধাতুর থার্মোমিটারকে প্লাটিনাম রোধ থার্মোমিটার বলে।

তাপযুগল বা থার্মোকাপল থার্মোমিটার (Thermocouple Thermometer)

দুটি সুবিধামত তার পরপর যুক্ত করে সংযুক্ত দুই প্রান্তে তাপমাত্রার পার্থক্য সৃষ্টি করলে এতে তড়িচ্চালক বলের উদ্ভব হয়। এই বল প্রান্তদ্বয়ের তাপমাত্রার পার্থক্যভেদে বিভিন্ন হয় এবং এই তড়িচ্চালক বল মেপে দুই প্রান্তের তাপমাত্রার পার্থক্য জানা যায়। এক প্রান্তের তাপমাত্রা জানা থাকলে এই পার্থক্য হতে অন্য প্রান্তের তাপমাত্রা নির্ণয় করা যায়। বিভিন্ন ধাতুর এরূপ দুটি তারকে একত্রে তাপযুগল বা থার্মোকাপল বলে। যেমন কপার কনস্টানটান (copper-constantan) থার্মোকাপল

থার্মোকাপল

থার্মিস্টর (Thermistor)

তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে অর্ধপরিবাহী পদার্থের বৈদ্যুতিক রোধ কমে যায়। অর্ধপরিবাহী পদার্থের এই ধর্মের উপর ভিত্তি করে থার্মিস্টর তৈরি করা হয়।

বিকিরণ থার্মোমিটার (Radiation Thermometer)

তাপমাত্রা 550°C-এর বেশি হলে কোনো কোনো বস্তু হতে বিভিন্ন রঙের আলো বের হতে দেখা যায়। পরীক্ষায় দেখা যায় যে, একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বস্তু হতে একটি নির্দিষ্ট রঙের আলো নির্গত হয়। সুতরাং আলোর বর্ণালী পরীক্ষা করে তাপমাত্রা নির্ণয় করা যায়। এরূপ একটি থার্মোমিটারকে বিকিরণ থার্মোমিটার বলে।

বিচুম্বকীকরণ থার্মোমিটার (Demagnetisation Thermometer)

তাপমাত্রা পরিবর্তনের সাথে প্যারাচৌম্বক পদার্থ (paramagnetic substance)-এর চৌম্বক গ্রাহীতার পরিবর্তন হয়। এই ধর্মকে ব্যবহার করে যে থার্মোমিটার তৈরি হয় তাকে বিচুম্বকীকরণ থার্মোমিটার বলে। নিম্ন তাপমাত্রা পরিমাপে এই থার্মোমিটার খুবই উপযোগী।

পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত শত ভিডিও ক্লাস বিনামূল্যে করতে জয়েন করুন আমাদের Youtube চ্যানেলে-

www.youtube.com/c/CrushSchool

ক্রাশ স্কুলের নোট গুলো পেতে চাইলে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে-

www.facebook.com/groups/mycrushschool